সুপ্রভাত ক্রীড়া ডেস্ক »
১৯৭৯ সাল থেকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলছে বাংলাদেশ। ইংল্যান্ডের মাটিতে আইসিসি ট্রফি দিয়ে শুরু হয়েছিল লাল-সবুজদের ক্রিকেটীয় যাত্রা। কিন্তু ৪৫ বছর ধরে ক্রিকেট খেলেও এখনো ধারাবাহিক হতে পারেনি বাংলাদেশ। কবে হবে, সেটিও কারো জানা নেই। গত রোববার ভারতের কাছে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে বাজেভাবে হারের পর সেই আলোচনা শুরু হয়েছে নতুন করে। ভারত বড় দল নিঃসন্দেহে। তবে এতদিনের অভিজ্ঞতা থাকা বাংলাদেশের এমন পারফরম্যান্স অবশ্যই হতাশাজনক। আইসিসির পূর্ণ সদস্য অন্যান্য দলগুলো অনেকটা উন্নতি করলেও বাংলাদেশ আছে ঠিক আগের মতোই। মাঝে-মধ্যে দুই একটা ম্যাচ ভালো খেলে ফের ফেরত যান নিজেদের পুরাতন রূপে। ভারতের বিরুদ্ধে আগে ব্যাট করে মাত্র ১২৭ রানে অলআউট হয়ে যায় বাংলাদেশ। গোয়ালিয়রের সিন্ধিয়া ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ভারতীয়রা ম্যাচটি জিতে নেয় মাত্র ১১.৫ ওভারে। হাতে ছিল ৭ উইকেট।
একপেশে লড়াইয়ের মূল কারণ বাংলাদেশের ব্যাটিং ব্যর্থতা। টেস্ট সিরিজেও একই কারণে ২-০ হেরেছিল তারা। রঙ্গিন পোশাক পরিধান করেও অন্ধকার খোলস থেকে বের হতে পারেনি বাংলাদেশ। বাংলাদেশের এই অধারাবাহিক পারফরম্যান্স এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই ক্রিকেটাদেরও। ম্যাচ হারের পর সেটি স্বীকার করেছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তও। ক্রিকেটারদের সামর্থ্য নেই, এমনটা মনে করছেন না শান্ত। বরং তাদের দক্ষতায় বিরাট ঘাটতি দেখছেন তিনি। অনেক জায়গা আছে যেখানে ক্রিকেটারদের উন্নতি করতেই হবে। আর সেটি তারা করতে পারছেন না বলেই দলের এমন হতশ্রী অবস্থা। পাশাপাশি উন্নতির জন্য পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধার কমতি আছে বলে মনে করেন শান্ত। তিনি বলেন, ‘আমাদের সামর্থ্য আছে। সামর্থ্য অবশ্যই আছে বলে আমি বিশ্বাস করি। তবে দক্ষতা উন্নতির অনেক জায়গা আছে। কিন্তু এই উন্নতি কীভাবে হবে? আমি যদি গত ১০ বছর দেখি, আমরা এ রকমই ব্যাটিং করে যাচ্ছি। মাঝেমধ্যে হয়তো ভালো ব্যাটিং করি।’
ঘরের মাঠে ম্যাচ হারের পর উইকেটকে দোষারোপ করা বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের চিরায়ত অভ্যাস। রোববারও এক সুযোগে সে অভ্যাসের চর্চা করলেন শান্ত। ঘরের মাঠের পিচগুলোতে বেশি রান উঠে না। সে কারণেই কীভাবে বেশি রান তুলতে হয় সেটি জানেন না ক্রিকেটাররা, এমন কিছুই বোঝাতে চেয়েছেন শান্ত। কীভাবে বেশি রান করা যায়, এমন প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে বাংলাদেশ অধিনায়ক বলেন, ‘এটার জন্য আমরা ঘরের মাঠে যখন অনুশীলন করি, তখন উইকেটের পরিবর্তনৃকিছু না কিছু একটা পরিবর্তন আনতে হবে। আমরা যখন ঘরের মাঠে খেলি, তখন ১৪০-১৫০ রানের উইকেটই হয়। ব্যাটসম্যানরা ওই রানটা কীভাবে করতে হয়, সেটা জানে। কিন্তু আমরা জানি না কীভাবে ১৮০ করা যায়। ওই ধরনের উইকেট অনুশীলন করলে হয়তো আমাদের আরেকটু উন্নতি হবে। তবে আমি শুধু উইকেটের দোষ দেবো না। এখানে মানসিক অনেক ব্যাপার থাকে।’ টপঅর্ডারদের ব্যর্থতার কথা উল্লেখ করে শান্ত বলেন, ‘শুরুতেই অনেক উইকেট পড়ে গেছে। শুরুতে বেশি উইকেট পড়ে গেলে কঠিন হয়ে যায়। আমার মনে হয় (বেশি রান না হওয়ার) প্রধান কারণ শুরুতে বেশি উইকেট পড়ে যাওয়া।’
ম্যাচের আগে আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ের কথা বলেছিলেন শান্ত। কিন্তু খেলায় দেখা গেলো উল্টো চিত্র। এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে শান্তর জবাব, ‘আমি যে অ্যাপ্রোচের কথা বলেছিলাম, সে জন্য ব্যাটিংয়ে ভালো শুরুটা গুরুত্বপূর্ণ। শুরুটা ভালো হবে বাকিদের কাজটা সহজ হয়ে যায়। যারা ওখানে ভালো খেলছে, তাদের দায়িত্ব নিতে হবে। কোনো নির্দিষ্ট খেলোয়াড়কে নিয়ে বলতে চাই না। আমরা সবাই মিলেই ব্যর্থ হয়েছি। আক্রমণাত্মক মানসিকতা থাকবেই, তবে কখন কোন শট খেলবো, এটা বুঝতে হবে। খবর জাগোনিউজ’র
এখনই এই অ্যাপ্রোচ বদলাতে চাই না। আমাদের এভাবে খেলে যেতে হবে, তবে ভালো শট নির্বাচন করতে হবে।’