সুপ্রভাত রিপোর্ট »
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুমের তুমব্রু সীমান্তের কোনারপাড়ার শূন্যরেখায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এতে একজন নিহত ও একজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। মিয়ানমারের আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) ও রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশনের (আরএসও) মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়েছে।
দুপুরের দিকে শূন্যরেখার রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে দুজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় কুতুপালং আশ্রয়শিবির সংলগ্ন এমএসএফ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় বলে জানান উখিয়া থানার ওসি শেখ মোহাম্মদ আলী। তিনি বলেন, এ সময় হাসপাতালের চিকিৎসক একজনকে মৃত ঘোষণা করেন। অপরজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। নিহত রোহিঙ্গার নাম হামিদ উল্লাহ (২৭)। আর আহত হয়েছেন মহিদ উল্লাহ (২৫)।
গতকাল বুধবার সকাল থেকে এ গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে বলে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রোমেন শর্মা জানান। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, সকাল থেকে তুমব্রু সীমান্তের শূন্যরেখায় থেমে থেমে গোলাগুলির খবর স্থানীয়দের মাধ্যমে তিনি জেনেছেন।
ইউএনও আরও বলেন, ‘ঘটনাটি যেহেতু শূন্যরেখায়, সেখানে আন্তর্জাতিক রীতি মতে বিজিবিসহ সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ করার এখতিয়ার নেই। তারপরও সীমান্তের উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে বিজিবি সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। প্রশাসন এ ব্যাপারে সার্বক্ষণিক খোঁজ-খবর রাখছে।’
রোহিঙ্গা নেতা দিল মোহাম্মদ বলেন, মিয়ানমারের আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) ও রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশনের (আরএসও), এ দুটি সশস্ত্র গোষ্ঠীর মধ্যে সকালে গুলি বিনিময়ের ঘটনা ঘটে। প্রথমে কোনারপাড়া শূন্যরেখা রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন এলাকায় সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে দুই পক্ষ। একপর্যায়ে শূন্যরেখায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পেও ছড়িয়ে পড়ে সংঘর্ষ।
তুমব্রু সীমান্তে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আগুন
বার্তা সংস্থা বিডিনিউজ জানায়, বান্দরবানের তুমব্রু সীমান্তের কোনারপাড়ার শূন্যরেখায় ‘আরসা ও আরএসও’ এর মধ্যে গোলাগুলির পর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আগুন লেগেছে। এতে শতশত বসত ঘর ভস্মীভূত হয় বলে শঙ্কা করা হচ্ছে। বুধবার সন্ধ্যায় নাইক্ষ্যংছড়ির ইউএনও রোমেন শর্মা এ কথা জানান। আগুনে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করলেও হতাহত কিংবা ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে কিছু বলতে পারেননি তিনি।
এদিকে, ক্ষতিগ্রস্ত বেশকিছু রোহিঙ্গা পরিবার শূন্যরেখার আশ্রয়শিবির ছেড়ে তমব্রু বাজার এলাকায় আশ্রয় নিয়েছে বলে প্রশাসনের সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
স্থানীয়দের বরাতে ইউএনও রোমেন শর্মা বলেন, বান্দরবানের তুমব্রু সীমান্তে কোনারপাড়ার শূন্যরেখায় ‘আরসা ও আরএসও’ এর মধ্যে গোলাগুলির পর সেখানকার রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বেশকিছু পরিবার তুমব্রু বাজার এলাকায় আশ্রয় নিয়েছে।
বিকাল ৪টায় এ ঘটনার জেরে তুমব্রু শূন্যরেখার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কে বা কারা আগুন লাগিয়ে দেয়। মুহূর্তে আগুন ছড়িয়ে পড়ায় শতশত বসতঘর পুড়ে গেছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ইউএনও বলেন, গোলাগুলির পর বেশকিছু রোহিঙ্গা পরিবার শূন্যরেখার ক্যাম্প ছেড়ে তুমব্রু বাজার এলাকায় আশ্রয় নিয়েছে। বিজিবির সদস্যরা তাদের কড়া নিরাপত্তায় ঘিরে রেখেছেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে এসব রোহিঙ্গাদের শূন্যরেখায় ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।