তীব্র গরমে হাঁসফাঁস মানুষ

চট্টগ্রামসহ ৫৩ জেলায় তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, এখন যে তাপপ্রবাহ বইছে, এটা ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত থাকতে পারে। এর মধ্যে তাপমাত্রা বাড়তে পারে। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস হওয়ার সম্ভাবনা আছে এর মধ্যে।

প্রচ- গরম পড়ছে। ছড়িয়ে পড়েছে মাঝারি মাত্রার তাপপ্রবাহ। এতে হাঁসফাঁস অবস্থা মানুষের। সংবাদমাধ্যম থেকে জানা যায়, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে বৃষ্টি ও মেঘের তেমন সম্ভাবনা নেই। গরমের তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে মানুষের কষ্ট । তাপমাত্রা যতটা, তার চেয়ে বেশি অনুভূত হচ্ছে। বিশেষ করে দিনের বেলা শহরজুড়ে যেন লু হাওয়া বইছে। গরমের সঙ্গে শুষ্ক আবহাওয়ার কারণে ধুলার পরিমাণ বেড়ে মানুষের কষ্ট আর দুর্ভোগ আরও বাড়িয়ে তুলেছে।
এপ্রিল মাস দেশের সবচেয়ে উত্তপ্ত সময়। এই সময়ে একাধিক দাবদাহ সৃষ্টি হয়। তবে এই তাপদাহ এরই মধ্যে প্রায় এক সপ্তাহ অতিক্রম করে গেছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে বৃষ্টি ও মেঘের তেমন সম্ভাবনা নেই। ফলে এই গরমের কষ্ট সহ্য করতে হবে দেশের মানুষকে।
চৈত্রের শেষে এমন তাপপ্রবাহ বইলেও মাসের শুরুটা কিন্তু আরামদায়ক ছিল। এর কারণ ছিল বৃষ্টি। চৈত্র মাসের প্রথম দুই সপ্তাহে বৃষ্টি ঝরেছে। তবে গত আট-দশ দিন বৃষ্টির দেখা নেই। এর মধ্যে তাপমাত্রা বাড়ছেতো বাড়ছেই।
রোদে ৮-১০ মিনিট থাকলেই গরমে শরীর পুড়ে যাচ্ছে। শীতকালের মতো ঠোঁট ফেটে যাচ্ছে। চিকিৎসক ও আবহাওয়াবিদেরা এবারের চৈত্রের এই ব্যতিক্রম গরম অনুভূতির জন্য বাতাসে আর্দ্রতা কম থাকাকে মূল কারণ বলছেন।
এ ধরনের তাপমাত্রায় গরম বেশি থাকবে, এটাই স্বাভাবিক বলে মনে করছেন আবহাওয়াবিদেরা। তবে তাপমাত্রার তুলনায় গরম বেশি অনুভূত হচ্ছে। বাতাসে আর্দ্রতা কম থাকাকে এর কারণ বলছেন তাঁরা। বাতাসে আর্দ্রতা কম থাকলে সাধারণত বাতাস শুষ্ক হয়ে ওঠে। সেই সঙ্গে তাপমাত্রা বেশি থাকলে শরীর থেকে তা পানি শুষে নেয়। ফলে শরীরে জ্বালাপোড়া করে ও ঠোঁট শুকিয়ে যায়।
আবহাওয়াবিদদের মতে চৈত্রের এই সময়ে বাতাসে যে পরিমাণে আর্দ্রতা থাকে তিন-চার দিন ধরে তার চেয়ে অনেক কম আর্দ্রতা রয়েছে। যে কারণে গরম বেশি অনুভূত হচ্ছে। মাঝারি তাপমাত্রায় শরীর জ্বালাপোড়া করছে ও ঠোঁট শুকিয়ে যাচ্ছে। এ ধরনের পরিস্থিতিতে ইফতারের পর পানি বেশি পান ও রসালো ফল খেতে হবে।
জলবায়ু গবেষকদের মতে কয়েক যুগ ধরে দেখা যাচ্ছে, বাংলাদেশের আবহাওয়াকে লা নিনা (প্রশান্ত মহাসাগরের ওপর তৈরি হওয়া উষ্ণ রেখা) ও এল নিনো (শীতল রেখা) ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করছে। এ বছর বাংলাদেশে লা নিনা এবং ভারত মহাসাগর দ্বিচক্র বা আইওডি সক্রিয় রয়েছে। বৈশ্বিক আবহাওয়ার ওই বিশেষ চক্র সক্রিয় থাকায় প্রশান্ত মহাসাগর থেকে ভারত মহাসাগর হয়ে বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত অঞ্চলজুড়ে বাতাসপ্রবাহের স্বাভাবিক গতি বদলে গেছে। যে কারণে বাংলাদেশের ওপর দিয়ে এই সময়ে বাতাস পশ্চিম থেকে দক্ষিণ দিকে প্রবাহিত না হয়ে উত্তর থেকে পশ্চিমে প্রবাহিত হচ্ছে। এর ফলে এবার গরমের তীব্রতার ক্ষেত্রে এই ব্যতিক্রমী পরিস্থিতি দেখা যাচ্ছে।