সুপ্রভাত ডেস্ক »
গুম-নির্যাতনের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী হিসেবে নিয়োগ পাওয়া জেডআই খান পান্না হাজির না হওয়ায় তাকে তলব করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এর কিছুক্ষণ পরই তিনি ট্রাইব্যুনালে হাজির হন।
বুধবার (৩ ডিসেম্বর) দুপুর পৌনে ১২টা থেকে ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেলে এ মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানি শুরু হয়।
প্রথমেই প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। শুনানির একপর্যায়ে স্টেট ডিফেন্সের আইনজীবী জেডআই খান পান্নাকে ফোন করে আসতে বলেন ট্রাইব্যুনাল। ঠিক ১০ মিনিট পর হুইলচেয়ারে করে অন্য আইনজীবীদের সঙ্গে নিয়ে আসেন পান্না।
এ সময় প্রসিকিউশনের শুনানি থামিয়ে পান্নাকে শুনতে চান ট্রাইব্যুনাল। সুস্থ আছেন কি না জানতে চেয়ে তার উদ্দেশে ট্রাইব্যুনাল বলেন, আপনি শেখ হাসিনার পক্ষে নিয়োগ পেয়েছেন। আপনি আসেননি কেন। আপনার অনুপস্থিতিতে শুনানি করতে হয়েছে। চাইলে আবার হবে।
জবাবে পান্না বলেন, আমি শারীরিকভাবে অসুস্থ। তবে এ মামলায় না দাঁড়ানোর জন্য আমি রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে চিঠি পাঠিয়েছি।
ট্রাইব্যুনাল বলেন, আপনার ক্লায়েন্ট হাজির হবেন না। আপনিও আসবেন না। আপনি নিজেই আগ্রহ দেখিয়েছেন আইনজীবী হওয়ার জন্য। এর পরিপ্রেক্ষিতে আমরা অর্ডার দিয়েছি। আপনি না করতে চাইলে ট্রাইব্যুনালে এসে বলতে হবে। এছাড়া আপনি এক ভিডিও বার্তায় ট্রাইব্যুনাল নিয়ে মন্তব্য করেছেন যে, আপনার ক্লায়েন্ট এই আদালত মানেন না। এজন্য আপনিও মানেন না। এটা কি আপনি বলতে পারেন?
জেডআই খান পান্না বলেন, আমি আনকনডিশনাল অ্যাপোলজি চাই।
পরে এ মামলায় লড়ার কথা ফের জানতে চান ট্রাইব্যুনাল। তখন ‘না’ জবাব দেন এই আইনজীবী। এ সময় ট্রাইব্যুনাল বলেন, আমরা আশা করব আপনার কাছ থেকে সহায়তা পাব। একইসঙ্গে তার বদলে কাকে নিয়োগ দেওয়া হবে পরামর্শ চান ট্রাইব্যুনাল। তবে কারও নাম না বলায় মো. আমির হোসেনকে স্টেট ডিফেন্স আইনজীবী হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। যিনি এর আগেও শেখ হাসিনার পক্ষে আইনি লড়াই করেছেন।
এর আগে, গত ২৩ নভেম্বর এ মামলার অভিযোগ গঠন নিয়ে শুনানির জন্য আজকের দিন ধার্য করা হয়। ওই দিন অভিযুক্ত শেখ হাসিনার পক্ষে দাঁড়ানোর আবেদন করেন জেডআই খান পান্না। পরে তাকে স্টেট ডিফেন্স হিসেবে নিয়োগ দেন ট্রাইব্যুনাল।
এ মামলায় গ্রেপ্তার ১০ সেনা কর্মকর্তা হলেন- র্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. কামরুল হাসান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহাবুব আলম, কর্নেল কেএম আজাদ, কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন, কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান (অবসরকালীন ছুটিতে), র্যাবের গোয়েন্দা শাখার সাবেক পরিচালক কর্নেল মো. মশিউর রহমান, লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন ও লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. সারওয়ার বিন কাশেম।
পলাতক আসামিরা হলেন- সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার প্রতিরক্ষাবিষয়ক সাবেক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইজিপি বেনজির আহমেদ, র্যাবের সাবেক ডিজি এম খুরশিদ হোসেন, র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক ব্যারিস্টার হারুন অর রশিদ ও র্যাবের সাবেক পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) মো. খায়রুল ইসলাম।

















































