নিজস্ব প্রতিবেদক »
সারাদেশে বাড়ছে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা। চট্টগ্রামেও সেই সংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। গত চব্বিশ ঘণ্টায় মোট ৮১জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের নিয়ে জেলায় চলতি মাসে শনাক্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৩৭৬ জনে। এ নিয়ে চলতি বছরে এখন পর্যন্ত মোট ৯৪০ জন আক্রান্ত হয়েছেন।
গতকাল সোমবার চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন এর এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানানো হয়। সেখানে আরো বলা হয়, সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় নতুন করে আরও ৮১ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। তার মধ্যে চমেক হাসপাতালে ২৪ জন, জেনারেল হাসপাতালে ৬ জন এবং অন্যান্য হাসপাতালে ৫১ জন রয়েছেন। চলতি বছরে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১৩ জন।
এদিকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে করোনার ইউনিটকে ডেঙ্গু কর্নার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও তা এখনো পুরোপুরি কার্যকর হয়নি। রোগী বাড়লে সেখানে ডেঙ্গু কর্নার করা হবে। এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক (উপ-পরিচালক) ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, ‘চট্টগ্রামে ধীরগতিতে বাড়ছে ডেঙ্গু রোগী। এখনো রাজধানীর তুলনায় কম আক্রান্ত হচ্ছে। তবে আক্রান্ত বাড়ার সাথে সাথে চমেক হাসপাতালের করোনার ইউনিটকে ডেঙ্গু কর্নার করা হবে।’
চমেক হাসপাতালে রোগীদের মশারি পেতে বিড়ম্বনা
চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মেডিসিন বিভাগের (১৪, ১৫ ১৬) ওর্য়াড, এবং (৮, ৯) ওয়ার্ডে ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে। সেখানে বেশির ভাগ রোগী নিজ থেকেই মশারির ব্যবস্থা করছেন। কারণ হাসপাতাল থেকে পেতে দীর্ঘ সময় লাগছে। অনেক অনুরোধের পর মশারি মেলে বলে জানিয়েছেন ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি হওয়া নাজমুল নামে এক রোগীর স্বজন। তিনি বলেন, ভর্তি হওয়ার প্রায় ৪ ঘণ্টা পর মশারি পেয়েছি।
১৪ নম্বর ওয়ার্ডের আব্দুল কুদ্দুস নামে আরও এক রোগী বলেন, ‘আমি মশারি পায় নি। এখান থেকে দিচ্ছে না তাই কিনে নিয়ে এসে ব্যবহার করছি। নাপা ৩ টা পেয়েছি, এরপর কোনো ওষুধ পায় নি।’
সরেজমিনে গতকাল সোমবার চমেক হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে বিভিন্ন ড্রেন, ড্রামে পানি জমে আছে। তার মধ্যে জরুরি বিভাগের ন্যায্যমূল্যে হাসপাতালের ওষুধের দোকানের পাশে ছোট ড্রামে পানি জমে রয়েছে। ময়লা আবর্জনা আটকে ড্রেনে পানি জমে গেছে। এছাড়া নতুন জরুরি বিভাগের একটি ড্রেন এবং মূল ফটক থেকে ডেন্টাল ইউনিট বরাবর ড্রেনে পানি জমে রয়েছে। সেখানে নিয়মিত ওষুধ ছিটানো হচ্ছে কিনা এমন প্রশ্ন করা হলে নিরাপত্তা প্রহরীরা ওষুধ ছিটাতে দেখেন নি বলে জানান।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কীটতত্ত্ববিদ বলেন, এডিস মশা পানি পাওয়া মাত্রই ডিম পারে। ডিম থেকে বাচ্চা হতে ৬ থেকে ১২ দিন পর্যন্ত সময় লাগে। এর ভেতর যদি মশার ওষুধ ছেটানো হয় তাহলে বাচ্চার মৃত্যু ঘটে। তবে নিয়মিত ওষুধ ছিটানো দরকার। পানি জমতে দেওয়া উচিত নয়।’
এ প্রসঙ্গে চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহসান বলেন, ‘চসিক থেকে নিয়মিত ওষুধ ছিটানো হচ্ছে। তাছাড়া হাসপাতাল থেকে নিজস্ব মেশিন দিয়ে ১১ জুলাই (আজ) থেকে ওষুধ ছিটানো হবে। হাসপাতাল পরিষ্কারে অভিযানে নামা হবে।’
এ দিকে বিভাগীয় স্বাস্থ্য কার্যালয় থেকে হটস্পট এলাকায় সার্ভের দ্বিতীয় দিন নগরীর কোতোয়ালী এলাকায় বেশ কিছু জায়গায় লার্ভা পেয়েছে কীটতত্ত্ববিদরা।