নিজস্ব প্রতিবেদক, খাগড়াছড়ি »
ড্রাগন ফল ও পেয়ারা চাষ করে লাখপতি হয়েছেন ১৯ বছরের তরুণ শিক্ষার্থী নাহিদ হোসেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় নিজের জমিতে ড্রাগন চাষ করে বাম্পার ফলন পেয়েছেন তিনি। ড্রাগন ও পেয়ারা বিক্রি করে তার বার্ষিক আয় প্রায় চার লক্ষাধিক টাকা। তার এই সফলতা দেখে অনেকেই আগ্রহী হয়েছেন ড্রাগন চাষে। নাহিদ রামগড় পৌর এলাকার কমপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। সে রামগড় সরকারি কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী।
জানা গেছে, নিজের জমিতে ড্রাগনের বাগান পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন নাহিদ হোসেন। তার জমিতে ৭ থেকে ৮ ফুট উচ্চতার পিলারের পাশেই তিনি ড্রাগনের গাছ রোপণ করেছেন। আর এসব পিলারের উপরে লোহার রডের সঙ্গে সাইকেলের পুরনো টায়ার দেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে ড্রাগনের ফলও আসতে শুরু করেছে। ড্রাগন ফল বাগানের পাশের জমিতে তিনি থাই-৫ জাতের পেয়ারা গাছ লাগিয়েছেন। ছোট বড় পেয়ারায় ভরে গেছে গাছগুলো। বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন এসে ড্রাগনের চাষপদ্ধতি জেনে নিচ্ছেন। আগতদের মধ্যে যারা শখের বসে ড্রাগন চাষ করতে চাচ্ছেন তাদের মাঝে তিনি চারা সরবরাহ করছেন। বিক্রি করছেন ড্রাগন ফল ও পেয়ারা।
নাহিদ এগ্রো ড্রাগন ফ্রুট এর স্বত্বাধিকারী নাহিদ হোসেন বলেন, ২০১৬ সালে রামগড় হর্টিকালচার সেন্টারের উৎসাহে বাবা আবুল কাশেমের উদ্যোগে বছরব্যাপী ফল উৎপাদনের মাধ্যমে পুষ্টি উন্নয়ন প্রকল্পের অধীনে প্রথমে ৩০টি পিলার ও ৯০টি ড্রাগন ফলের চারা দিয়ে বাগান শুরু করি। সঠিকভাবে পরিচর্যা করায় কম সময়ের মধ্যেই ড্রাগনের ফল আসতে শুরু করে। ড্রাগন চাষ করার পর ২ বছর বয়সে গাছে পরিপূর্ণ ফল আসে। একটি পিলারে ৪টি গাছে প্রত্যেক বছর ৩০-৪০ কেজি ড্রাগন ফল পাওয়া যায়। বর্তমানে ৩৫০টি পিলারে দেড় হাজার ড্রাগন ফলের গাছ আছে। প্রতি কেজি ড্রাগন ফল সাড়ে ৩শ’ থেকে ৪ শ’ টাকায় বিক্রি হয়। আমার ৫০শতক জমিতে ড্রাগন ফল ও পেয়ারা বিক্রি করে বছরে আমার ৪ লাখ টাকা আয় হয়।
রামগড় হর্টিকালচার সেন্টারের উপ-সহকারী উদ্যান কর্মকর্তা ভূষণ মহাজন বলেন, কলেজ পড়ুয়া নাহিদ হোসেনের ড্রাগন চাষ অন্যদের উৎসাহ দিচ্ছে। তার বাগান পরিদর্শন করে তাকে পরামর্শ দিচ্ছি। যারা বেকার যুবক কিংবা শিক্ষার্থী আছে তারা ড্রাগন ফলসহ বিভিন্ন ফলজ বাগান করে স্বাবলম্বী হতে পারবে। এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ তো মেধাবী ছাত্র নাহিদ হোসেন।
রামগড় হর্টিকালচার সেন্টারের উপ-সহকারী উদ্যান কর্মকর্তা চিংহ্লাপ্রু চৌধুরী বলেন, ড্রাগন ফল রামগড়ের আবহাওয়া এবং মাটি এটি চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। এখানে বাউ-১, বাউ-২ জাতের ড্রাগনের চাষ হচ্ছে। ড্রাগন গাছে একটানা ৬/৭ মাস ফল পাওয়া যায়। অধিক পুষ্টিগুণ সম্পন্ন এ ফল চোখকে সুস্থ রাখে, শরীরের চর্বি ও রক্তের কোলেস্টেরল কমায়, উচ্চ রক্তচাপ কমানোসহ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। স্থানীয় বাজার সৃষ্টির মাধ্যমে এ ফল চাষে কৃষকেরা লাভবান হচ্ছে।
এ মুহূর্তের সংবাদ