ডিসেম্বরের তুলনায় শনাক্ত বেড়েছে ৭৪ গুণ

চট্টগ্রামে করোনা সংক্রমণ

রিমন সাখাওয়াত »
নতুন বছরে নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনের প্রভাবে করোনা শনাক্ত ও মৃত্যুহার বেড়ে গেছে। ডিসেম্বরের তুলনায় শনাক্ত বেড়েছে ৭৪ গুণ। মারা গেছেন ২৩ জন। দুই বছর ধরে শিখে আসা স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনে জোর দিচ্ছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। একই সাথে নিতে হবে করোনা ভ্যাকসিন।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্য পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ডিসেম্বর মাসে জেলায় সর্বমোট ২৩১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। কিন্তু জানুয়ারি মাসে দেখা গেছে সর্বমোট ১৭ হাজার ৭২ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। যা ডিসেম্বরের শতকরা শূন্য দশমিক ২৩ শতাংশ থেকে বেড়ে শতকরা ১৪ দশমিক ২৬ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। পুরো মাসে নগরে করোনা শনাক্ত হয়েছে ১৩ হাজার ৬ জনের। যা শতকরা ১৪ দশমিক ৯ শতাংশ। উপজেলায় ৪ হাজার ৬৬ জন। যা শতকরা ১২ দশমিক ৫৪ শতাংশ। ডিসেম্বর মাসে নগরে করোনা শনাক্ত হয়েছে ১৭৩ জনের। যা শতকরা শূন্য দশমিক ২৩ শতাংশ। উপজেলায় ৫৯ জন। যা শতকরা শূন্য দশমিক ২১ শতাংশ। চট্টগ্রামে এ পর্যন্ত ১ লাখ ১৯ হাজার ৭১৪ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এদের মধ্যে নগরীর ৮৭ হাজার ২৭৭ জন এবং উপজেলায় ৩২ হাজার ৪৩৭ জন।
এদিকে করোনায় মৃত্যু সংখ্যা ডিসেম্বরের চেয়ে বেড়ে গেছে। ডিসেম্বরে উপজেলায় একজনের মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু জানুয়ারিতে দেখা গেছে তা বেড়ে ২৩ জনে উন্নীত হয়েছে। করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুহার ছিল ১ দশমিক ৭ শতাংশ। যা ডিসেম্বর মাসে ছিল শতকরা শূন্য দশমিক ০৮ শতাংশ। তবে জানুয়ারিতে নগরের চেয়ে উপজেলায় মৃত্যুর হার বেশি ছিল। করোনা আক্রান্ত হয়ে নগরে মারা গেছেন ৮ জন। যা শতকরা ১ দশমিক ০৯ শতাংশ। উপজেলায় মারা গেছেন ১৫ জন। যা শতকরা ২ দশমিক ৪ শতাংশ। এ পর্যন্ত চট্টগ্রামে করোনা আক্রান্ত হয়ে জেলায় ১ হাজার ৩৫৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে নগরে ৭৩১ জন এবং উপজেলায় ৬২৪ জন।
জানুয়ারি প্রথম দিনে জেলায় ৯ জনের করোনা শনাক্ত হলেও তা ক্রমান্বয়ে বাড়তে শুরু করে। সেদিন করোনা শনাক্তে হার ছিল শূন্য দশমিক ৬ শতাংশ। কিন্তু একই মাসেই শনাক্তের হার ৩৯ দশমিক ৯৫ শতাংশ পর্যন্ত ছুঁয়েছে। সেদিন ২ হাজার ৪৭৫ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৯৮৯ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়।
দেখা গেছে, নগরে শনাক্তের হার সব সময় উপজেলার দ্বিগুণ থেকে পাঁচগুণ বেশি। আট দিন পর ৯ জানুয়ারিতে শনাক্তের সংখ্যা সেঞ্চুরি ছাড়িয়ে যায়। সেদিন ১ হাজার ৭৬৫ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১০৪ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়। তার ঠিক ১২ দিনের মাথায় শনাক্তের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়ে যায়। ২১ জানুয়ারি ৩ হাজার ৮০ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১ হাজার ১৭ জনের করোনা শনাক্ত হয়। এভাবে পুরো মাসে মোট সাত দিন করোনা শনাক্ত হাজারের বেশি ছিল। একদিনে সর্বোচ্চ ১ হাজার ৪৫৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়। সেইদিন নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল ৪ হাজার ২৬৫ জনের।
জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়ছ চৌধুরী সুপ্রভাতকে বলেন, ‘জানুয়ারি মাসে করোনা শনাক্ত বেড়ে গেছে। করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনের প্রভাবে এটি মার্চ মাস পর্যন্ত বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে করোনা থেকে সুরক্ষা পেতে ভ্যাকসিনের আওতায় আসতে হবে।’
মাস্ক পরার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘করোনা সংক্রমণ রোধে মাস্ক পরার বিকল্প নেই। মানতে হবে স্বাস্থ্যবিধি। জনসমাগম এলাকা এড়িয়ে চলতে হবে। প্রতি ৩০ মিনিট পর পর হাত ধুয়ে নিতে হবে। হাত স্যানিটাইজ না করে চোখ, নাক, মুখ চুলকানো থেকে বিরত থাকতে হবে।’