টাইপ ২ ডায়াবেটিসে এ আক্রান্ত কেউ ফল খেলে রক্তে শর্করার সমস্যা কেন হয়?
এখানে আপনি এটি সম্পর্কে কি করতে পারেন. প্রথমত, আপনাকে এই তিনটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জানতে হবে।
এক, ফল টাইপ ২ ডায়াবেটিস সৃষ্টি করে না। দুই, ফল বেশি খাওয়া
টাইপ ২ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সমস্যা করেনা।
এবং তিন,বেশী ফল খাওয়া আসলে বিপরীতভাবে আপনার টাইপ ২ ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি কমায়। টাইপ ২এর সাথে বসবাসকারী অনেক লোক আম, কলা এবং আনারসের মতো ফল খাওয়া এড়িয়ে চলার প্রবণতা দেখায়। কারণ এটি তাদের ডায়বেটিস বৃদ্ধি করে বলে মনে করেন। কিন্তু তারা বুঝতে ব্যর্থ হয় যে ফলের দোষ নেই। যা হচ্ছে তা হলো, তাদের শরীরের কোষ ইনসুলিন প্রতিরোধী হয় এবং তার কারণে তার শরীরে সমস্ত কার্বোহাইড্রেটের বিরুপ প্রতিক্রিয়া হয়।
ফল কখনও দায়ী ছিল না এবং তারা কখনও দায়ী বলা যাবে না। তাই এই সব কথাবার্তা থেকে দূরে থাকা দরকার। বরঞ্চ সব গবেষণার মেটা–বিশ্লেষণ নির্দেশ করে যে, উচ্চতর ফল খাওয়া আপনার টাইপ ২ ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি কমায়। এবং অন্য একটি সমীক্ষা দেখায় যে মানুষের খাদ্য থেকে ফল অপসারণ টাইপ ২ ডায়াবেটিক দের গ্লাইসেমিক নিয়ন্ত্রণ উন্নতি হয় না। তাই আপনাকে সেটা বুঝতে হবে কার্বোহাইড্রেট তাদের সম্পূর্ণ আকারে যথা ফল, সবজি, লেগুম, গোটা শস্য যেখান থেকেই আসে কিনা, তারা টাইপ ২ ডায়াবেটিসের জন্য খারাপ নয়। কিন্তু যদি তারা বর্তমানে আপনার ব্লাড গ্লুকোজের স্বাভাবিক মাত্রা বাড়ায় তাহলে আপনাকে বুঝতে হবে যে ইনসুলিন রেজিসট্যান্ট আপনার কোষের ভিতরে তৈরী হয়েছে, যা আপনাকে সঠিকভাবে কার্বোহাইড্রেট ব্যবহার করতে অক্ষম করে তুলছে। আপনার কোষের ভিতরে জমা চর্বি যা অন্তঃকোষীয় লিপিড নামে পরিচিত– জমা হয়েছে, এটি সেলুলার স্তরে এই ইনসুলিন প্রতিরোধের সৃষ্টি করেছে।
এটি আপনার উচ্চ রক্তে শর্করার সমস্যার মূল কারণ। যা আপনার দেহকে করছে কার্বোহাইড্রেট অসহিষ্ণু। আপনাকে সেই চর্বি তৈরির আকার কমাতে হবে যাতে আপনার কোষগুলি
আবার ইনসুলিনের প্রতি সংবেদনশীল হয়ে যায়। ইনসুলিন হল সেই হরমোন যা আপনার রক্তের গ্লুকোজ কোষের ভিতরে নিয়ে যেতে পারে।
তাহলে আপনি কিভাবে এটা করবেন? জীবনধারা পরিবর্তনের মাধ্যমে, সঠিক পুষ্টি এবং সঠিক হাঁটাচলায় ।
সকালে ফল খান, এসময় শরীর তার প্রয়োজনীয় মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টস এখান থেকে সর্বোচ্চভাবে পায়। তবে, এসময় অন্য কোন ধরণের কার্বোহাইড্রেট গ্রহণ করবেন না।
ফাইবার সমৃদ্ধ ফল ও খাবার অতিরিক্ত গ্লুকোজ শোষণ রোধ করে। সন্ধ্যার পর ভারী খাবার বন্ধ করুন, কারণ এসময় শরীরের বিশ্রাম প্রয়োজন অথচ হজম একটি ভারী পরিশ্রমের কাজ। ইন্টারমিটেন ফাস্টিং শরীরকে এই বিশ্রামটুকু দিয়ে ইন্সুলিন রেজিস্ট্যান্স দূর করতে সাহায্য করে।