নিজস্ব প্রতিনিধি, চকরিয়া »
চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারা ইউনিয়নে ২৪ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাতে ডাকাতি প্রতিরোধ অভিযানে গিয়ে ডাকাতের ছুরিকাঘাতে সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট তানজিম সারোয়ার নির্জন (২৩) খুনের ঘটনায় সরাসরি জড়িত ডাকাত দলের ৬ জন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে যৌথবাহিনী।
গতকাল বুধবার বিকালে বাংলাদেশ আর্মি নামের সেনাবাহিনীর অফিসিয়াল ফেসবুক পেইজ থেকে প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ডাকাত দলের ৬ সদস্যকে গ্রেফতার পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নিতে তাদেরকে চকরিয়া থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে সেনাবাহিনী।
আটকরা হলেন মো. বাবুল প্রকাশ (৪৪), মো. হেলাল উদ্দিন (৩৪), মো. আনোয়ার হাকিম (২৮), মো. আরিফ উল্লাহ (২৫), মো. জিয়াবুল করিম (৪৫) ও মো. হোসেন (৩৯)।
আটকদের মধ্যে মো. বাবুল প্রকাশ এই ঘটনার মূল অর্থ যোগানদাতা। জিজ্ঞাসাবাদে বাবুল সেনা কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট তানজিমকে ছুরিকাঘাত করে বলে প্রাথমিক স্বীকারোক্তি প্রদান করে।
এছাড়া আটকদের মধ্যে রয়েছে ডাকাত দলের সেকেন্ড ইন কমান্ড মো. হেলাল উদ্দিন, গাড়িচালক মো. আনোয়ার হাকিম, ডাকাত দলের সদস্য মো. আরিফ উল্লাহ, তথ্যদাতা মো. জিয়াবুল করিম ও মো. হোসেন। তারা ঘটনার সাথে সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছে। অন্যান্য জড়িতদের গ্রেফতারের জন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ঘটনার দিন মঙ্গলবার রাত থেকে গতকাল বুধবার ভোর পর্যন্ত চকরিয়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সেনাবাহিনীর সদস্যরা চিরুনি অভিযান চালিয়ে ঘটনার সাথে জড়িত ডাকাত দলের ৬ সদস্যকে আটক করেছে এবং তাদের হেফাজত থেকে ২টি দেশিয় আগ্নেয়াস্ত্র, বিভিন্ন ধরনের ১১ রাউন্ড গুলি, হত্যাকান্ড ব্যবহৃত একটি ছুরি, একটি পিকআপ ট্রাক গাড়ি এবং একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করেছে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, আটকদের মধ্যে ৪ জন প্রত্যক্ষভাবে সেনা কর্মকর্তা তানজিম খুনের সাথে জড়িত ছিল। অপর দুইজন সহযোগী হিসেবে কাজ করেছে।
চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনজুরুল কাদের ভূইয়া বলেন, সেনাবাহিনী কর্তৃক আটককৃত ৬ জনকে গতকাল বুধবার বিকালে চকরিয়া থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। সেনাবাহিনীর সদস্য বাদি হয়ে এ ব্যাপারে চকরিয়া থানায় মামলা রুজু করার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ২৪ সেপ্টেম্বর রাতে চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারা ইউনিয়নের পূর্ব মাইজপাড়া এলাকায় মাছ ব্যবসায়ী রেজাউল করিমের বাড়িতে ডাকাতদল হানা দিয়েছে- এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সেনাবাহিনীর একটি দল অভিযান চালায়। একপর্যায়ে রাত আনুমানিক তিনটার দিকে সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে ডাকাতদলের সদস্যরা টের পেয়ে পূর্ব দিকে চলে যাওয়ার চেষ্টা করেন। তখন সেনাবাহিনীর বেশিরভাগ সদস্য তাঁদের পিছু নেয়। পশ্চিম দিকে দুজন ডাকাত যেতে চাইলে তাদের একজনকে ধরে ফেলেন তানজিম সারোয়ার। এসময় ওই ডাকাত তাকে ঘাড়ে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করলে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে অন্য সেনাসদস্যরা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে নিকটস্থ চকরিয়ার মালুমঘাট মেমোরিয়াল খ্রিস্টান হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে কক্সবাজারের রামু সম্মিলিত মেডিকেল হাসপাতালে (সিএমএইচ) নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।