সুপ্রভাত ডেস্ক »
ব্যাংক ও মানিচেঞ্জারদের থেকে চাহিদা অনুযায়ী বৈদেশিক মুদ্রা পাচ্ছেন না বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের পাইলটরা। এ সমস্যা সমাধানে অর্থ সচিবের সহায়তা চেয়েছেন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। ১৪ সেপ্টেম্বর লেখা চিঠিতে অর্থ সচিব ড. মো খাইরুজ্জামান মজুমদারকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শফিউল আজিম বলেছেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে পাইলটরা অথরাইজড ডিলার বা মানিচেঞ্জারদের থেকে চাহিদা অনুযায়ী ডলার পাচ্ছেন না। ফলে ফ্লাইট অপারেশনের কাজে বিদেশে অবস্থানকালে পাইলটরা প্রাত্যহিক ব্যয় মেটাতে পারছেন না। এতে ফ্লাইট পরিচালনা করা দূরুহ হয়ে পড়েছে।’ খবর টিবিএস।
অর্থ বিভাগের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ব্যাংক ও মানিচেঞ্জারদের ডলার সরবরাহের বিষয়টি বাংলাদেশ ব্যাংকের এখতিয়ারভুক্ত। সেজন্য বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসকে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাথে যোগাযোগের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শফিউল আজিম এ বিষয়ে বলেন, পাইলটদের বিদেশে অবস্থানকালে হোটেল ভাড়া পরিশোধসহ বিভিন্ন কাজে বৈদেশিক মুদ্রা প্রয়োজন হয়। বাংলাদেশ ব্যাংক বেশ আগে থেকেই বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের পাইলটদের প্রয়োজনীয় বৈদেশিক মুদ্রা সরবরাহ করার বিষয়ে অথরাইজড ডিলার ব্যাংক ও মানিচেঞ্জারদের নির্দেশনা দিয়ে রেখেছে।
সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাংক ও মানিচেঞ্জার প্রতিষ্ঠান চাহিদা অনুযায়ী ডলার সরবরাহে অপারগতা প্রকাশ করছে। এই পরিস্থিতিতে পাইলটরা বৈদেশিক মুদ্রা পেতে যাতে সমস্যায় না পড়েন, সেজন্য অর্থ বিভাগের সচিবকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, বিমানের নিজস্ব ব্যবস্থায় পাইলটদের প্রয়োজনীয় ডলারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের পাইলট ও কেবিন ক্রুদের প্রয়োজনীয় বৈদেশিক মুদ্রা সরবরাহ করতে ২০১৭ সালের আগস্টে বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগ একটি সার্কুলার জারি করে। সার্কুলারে বলা হয়, ব্যাংকগুলো ক্রুদের জন্য বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস এর অনুমোদন সাপেক্ষে প্রতি মাসে প্রয়োজনীয় ডলার সরবরাহ করে। এতদিন ধরে ব্যাংক ও মানিচেঞ্জারগুলো তা করলেও সম্প্রতি সব সময় সেটা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন একটি বেসরকারি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেন, ‘বর্তমানে নগদ ডলারের বেশ সংকট চলছে। যতটা কেনাবেচা হচ্ছে সেক্ষেত্রে আনুষ্ঠানিক দর অনুযায়ী করা যাচ্ছে না। কারণ ব্যাংকগুলো আনুষ্ঠানিক দরে নগদ ডলার কিনতে পারছে না।’
‘কিন্তু বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের পাইলটরা কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঘোষিত দরের বেশি দিতে রাজি না। ফলে ব্যাংক বা মানিচেঞ্জার বাধ্য হয়ে ডলার সরবরাহে অপারগতা প্রকাশ করছে। সবাই জানে এখন ডলারের বাজার পরিস্থিতি কী। সেক্ষেত্রে কম দরে ডলার চাইলে সেটা পাওয়া যাবে না,’ বলেন তিনি।
বর্তমানে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের বহরে ২১টি উড়োজাহাজ রয়েছে। এসব উড়োজাহাজ চালানোর জন্য ককপিট ক্রুু রয়েছেন ১৬৫ জন। এর বাইরে কিছু অপারেশনাল পাইলটও (চুক্তি ভিত্তিক পাইলট) রয়েছেন। এরমধ্যে দেশের অভ্যন্তরীণ রুটগুলোতে চলাচলকারি ড্যাশ-৮ পরিচালনার সাথে যুক্ত ১৭ জন। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস বিশ্বের ১৬টি দেশের ২০টি গন্তব্যে ফ্লাইট পরিচালনা করছে। অফিসিয়াল ডিউটিতে বিদেশে গেলে খরচের জন্য একজন পাইলট প্রতি মাসে ২৭০০ ডলার করে বরাদ্দ পান। যা দিয়ে তিনি হোটেল ভাড়া, খাওয়া, মেডিকেল চেকআপ (প্রয়োজন হলে) করে থাকেন। জানা গেছে, পাইলটদের পাশাপাশি কেবিন ক্রুরাও ডলার না পাওয়ার সমস্যায় ভুগছেন।