ড. ইউনূসের সক্ষমতার ওপর পরিপূর্ণ আস্থা আছে: অমর্ত্য সেন

সুপ্রভাত ডেস্ক »

বাংলাদেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেছেন ভারতীয় বাঙালি নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন। বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেও ড. ইউনূসের সক্ষমতার প্রতি তার আস্থা আছে বলে জানিয়েছেন।

সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গের শান্তি নিকেতনে নিজ বাড়িতে একটি বিশেষ সাক্ষাৎকার দেন এই অর্থনীতিবিদ। বাংলাদেশের সার্বিক পরিস্থিতি তাকে গভীরভাবে প্রভাবিত করে বলেও জানান তিনি।

বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. ইউনূস সম্পর্কে মূল্যায়ন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ড. ইউনূস আমার পুরোনো বন্ধু। আমি জানি, তিনি অত্যন্ত দক্ষ ও বহুদিক থেকে অসাধারণ একজন মানুষ। তিনি বাংলাদেশের ধর্মনিরপেক্ষতা ও গণতান্ত্রিক প্রতিশ্রুতি নিয়ে জোরালো বক্তব্য দিয়েছেন।

তিনি বলেন, আপনি যদি হঠাৎ করে কোনো দেশের প্রধান হয়ে যান—যেমনটা ড. ইউনূস হয়েছেন—তাহলে আপনাকে বিভিন্ন গোষ্ঠীর বিষয় বিবেচনায় নিতে হবে। এখানে ইসলামী দল আছে, হিন্দু গোষ্ঠীগুলোও সক্রিয়। আমি ড. ইউনূসের দক্ষতার ওপর দৃঢ় আস্থা রাখি।

তার ভাষ্য, বাংলাদেশের পরিস্থিতি আমাকে গভীরভাবে প্রভাবিত করে। আমি ঢাকায় প্রচুর সময় কাটিয়েছি এবং সেখানেই আমার শিক্ষা জীবনের সূচনা হয়। আমি ঢাকার বাইরে আমার পৈতৃক বাড়ি মানিকগঞ্জে নিয়মিত যেতাম। মায়ের দিক থেকে আমি বিক্রমপুর নিয়মিত যেতাম। সবমিলিয়ে অনেকের মতো আমিও বাংলাদেশ নিয়ে উদ্বিগ্ন, দেশটি কীভাবে বর্তমান চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করবে।

স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশের উন্নতির কথা তুলে ধরে অমর্ত্য সেন বলেন, বাংলাদেশ মাথাপিছু আয়ে উল্লেখযোগ্য উন্নতি করেছে। একপর্যায়ে তো ভারতের চেয়েও এগিয়ে ছিল। একই সঙ্গে বাংলাদেশে জন্মহার কমেছে এবং গড় আয়ু ভারতের চেয়ে বেশি।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ বিশাল অর্থনৈতিক ও সামাজিক রূপান্তরের মধ্য দিয়ে গেছে। এতে সরকার এবং ব্র্যাক ও গ্রামীণ ব্যাংকের মতো বেসরকারি সংস্থার গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে।

তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের সংবাদপত্রগুলো তুলনামূলকভাবে স্বাধীন এবং অনেক গণমাধ্যম সরকারবিরোধী কঠোর অবস্থান নেয়া সত্ত্বেও এগিয়ে গেছে।

তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রশংসা করে বলেন, অন্যান্য অনেক দেশের মতো তারা সামরিক শাসন প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেনি।

বাংলাদেশে হিন্দু সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও মন্দির ভাঙচুরের নিন্দা জানিয়ে অমর্ত্য সেন বলেন, সরকার ও জনগণের উভয়েরই দায়িত্ব এসব প্রতিরোধ করা।