সুপ্রভাত ডেস্ক »
যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসের একটি স্কুলে বন্দুকধারীদের গুলিতে মঙ্গলবার অন্তত ১৯টি শিশুসহ একুশ জন নিহত হয়েছে। বাকি দুজন প্রাপ্তবয়স্ক, যাদের মধ্যে একজন ওই শিশুদের শিক্ষক বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
টেক্সাসের গভর্নর জানিয়েছেন এ ঘটনায় সন্দেহভাজন ব্যক্তি আঠার বছর বয়সী। তার হাতে একটি বন্দুক ও এআর-১৫ রাইফেল ছিল বলে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিশ্চিত করেছে। ধারণা করা হচ্ছে যে সন্দেহভাজন ওই বন্দুকধারী পুলিশের পাল্টা গুলিতে নিহত হয়েছে। তবে হামলাকারী কেন এই ঘটনা ঘটিয়েছে তা এখনো পরিষ্কার নয়।
অন্যদিকে যেসব শিশুরা মারা গেছে তাদের বয়স ছিলো সাত থেকে দশ বছরের মধ্যে এবং তারা দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ গ্রেডের শিক্ষার্থী ছিলো।
নিহতদের মধ্যে যার পরিচয় পাওয়া গেছে, স্যান অ্যান্টোনিও এলাকার স্থানীয় টেলিভিশন চ্যানেল কেস্যাট-টিভির খবর অনুযায়ী তার নাম ইভা মিরেলেস। তিনি স্কুলটির চতুর্থ গ্রেডের শিক্ষক।
জানা গেছে দক্ষিণ টেক্সাসের যে স্কুলে এ ঘটনা ঘটেছে সেটি একটি প্রাইমারি স্কুল।
দেশটিতে বন্দুক সহিংসতা নিয়ে ক্রমবর্ধমান আলোচনার মধ্যেই এ ঘটনা ঘটলো।
স্থানীয় সময় বেলা সাড়ে এগারটার দিকে ঘটনাটি ঘটে এবং তদন্ত কর্মকর্তারা বলছেন যে ওই কিশোর একাই ঘটনাটি ঘটিয়েছে।
ওই স্কুলে পাঁচশোর মতো শিক্ষার্থী আছে এবং স্কুলে আসা অন্য শিক্ষার্থীদের নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নেয়া হয়েছে। যদিও স্থানীয় হাসপাতালগুলো বলছে যে স্কুল থেকে আনা কিছু শিক্ষার্থীকে জরুরি চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
ইয়ুভালডে মেমোরিয়াল হাসপাতাল ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে জানিয়েছে যে অ্যাম্বুলেন্স ও বাসে করে ১৩ শিক্ষার্থীকে সেখানে নেয়া হয়েছে।
প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এ ঘটনায় শোক জানাতে শনিবার দেশটির পতাকা অর্ধনমিত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন।
হোয়াইট হাউজে দেয়া বক্তৃতায় তিনি তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, ম্যাস শুটিং বা নির্বিচার গুলির এসব ঘটনায় তিনি হতাশ ও ক্লান্ত। তিনি আবারও বন্দুক নিয়ন্ত্রণের জন্য আহবান জানিয়েছেন।
শোক ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনসহ দেশটির প্রায় সব পর্যায়ের রাজনীতিকরাই।
এ ধরনের ঘটনা এড়াতে একটি গ্রহণযোগ্য বন্দুক নীতিমালা প্রণয়নের আহবান জানিয়েছেন দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্ট কমালা হ্যারিস।
প্রসঙ্গত, আমেরিকায় দীর্ঘদিন ধরেই এভাবে নির্বিচার গুলি করে হত্যার ঘটনা ঘটছে।
দেশটিতে বন্দুকের ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপের দাবিও জোরদার হচ্ছে। তবে এ নিয়ে সেখানকার রাজনৈতিক মহল বিভক্ত। আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার নিয়ে উদ্বেগ বেড়েই চলেছে।
বিশেষ করে স্কুলে এভাবে গুলির ঘটনা দেশটিতে মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। শিক্ষা বিষয়ক একটি প্রকাশনার তথ্য অনুযায়ী গত বছরেই এ ধরণের অন্তত ২৬টি ঘটনা ঘটেছে। এমনকি স্কুলের পাঠক্রমে এ ধরণের ঘটনা হলে তা থেকে কিভাবে উদ্ধার পাওয়া যাবে তা শেখানো হয়।
এর আগে ২০১২ সালে স্যান্ডি হুক এলিমেন্টারি স্কুলে কুড়ি বছর বয়সী এক ব্যক্তির গুলিতে ২৬ জন নিহত হয়েছিলো, যার মধ্যে কুড়ি জনই ছিলো পাঁচ থেকে ছয় বছর বয়সী।
সূত্র : বিবিসি বাংলা