রাজু কুমার দে, মিরসরাই :
করোনা রোগী কিংবা করোনা উপসর্গ নিয়ে যখন কেউ মারা যায় তখন পরিবার কিংবা এলাকাবাসী স্পর্শ করতে চায় না। চায় না কবর কিংবা দাহ করতে। এমন কি আদরের স্ত্রী সন্তানরাও না। আমরা প্রায়ই এমন দৃশ্য দেখেছি। কিন’ সমাজে কিছু মানুষ রয়েছে যারা সব সময় যে কোন পরিবেশ পরিস্থিতিতে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন। এমন কয়েকজন মিলে করোনাকালীন হাত বাড়িয়ে দিয়েছে মৃত ব্যক্তির দাহ করার কাজে। সংগঠনের নাম দেয়া হয়েছে ‘মিরসরাই উপজেলা সনাতনী শ্মশান সংস্কার ও সৎকার কমিটি।’ সর্বশেষ সোমবার উপজেলার ছোট কমলদহ এলাকার কানকুরহাটে ডা. ননী গোপাল মালাকার নামে এক ব্যক্তি করোনা আক্রান্ত হয়ে চট্টগ্রামের ম্যাক্স হাসপাতালে মারা গেলে তাকে দাহ করতে আসেনি গ্রামের কেউ। এ পরিস্থিতিতে ডাক পড়ে মিরসরাই উপজেলা সনাতনী শ্মশান সংস্কার ও সৎকার কমিটির। সাথে সাথে ছুটে যান ওরা। সাথে নিয়ে যান সৎকার কাজের সহায়ক ব্রাক্ষণ। ঝড় বৃষ্টি মাথায় নিয়ে মৃতদেহটি সৎকার করলো স্বেচ্ছাসেবী এই সংগঠনটি। এটি তাদের পঞ্চম সৎকার কাজ।
এ বিষয়ে কমিটির সদস্য সচিব অভি রায় জানান, উপজেলা কিংবা এর বাইরে করোনা আক্রান্ত হয়ে কোন সনাতনি ব্যক্তি মারা গেলে যদি মৃত ব্যক্তির লাশ এলাকাবাসী সৎকার না করে তাহলে আমরা বিনা পারিশ্রামিকে দাহ করে থাকি। শুধু করোনা রোগী নয় করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা গেলেও এলাকাবাসী চাইলে আমরা দাহ করি।
কমিটির আহবায়ক জহরলাল নাথ জানান, উপজেলার ১৬টি ইউনিয়ন ও ২টি পৌরসভায় ৩৪ জন সদস্য নিয়ে এই কমিটি গঠন করা হয়েছে। সবাইকে এই বিষয়ে সর্তক থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সকল স্বাস্থ্যবিধি মেনে আমরা লাশ দাহ করে থাকি।
উপজেলা পূজা উৎযাপন পরিষদের সভাপতি সুভাষ সরকার জানান, এমন ক্রান্তিকালে যখন পরিবারের সদস্যরা কাছে থাকে না তখন পাশে থাকে মিরসরাই উপজেলা সনাতনি শ্মশান সংস্কার ও সৎকার কমিটি। সত্যি এটি একটি ভালো কাজ। আমরা পূজা উদযাপন পরিষদ থেকে ওই কমিটিকে সার্বিক সহযোগিতা করছি। পাশাপাশি মিরসরাইয়ের সন্তান ধর্ম মন্ত্রণালয়ের ট্রাস্টি উত্তম শর্ম্মাও সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছেন।