জশনে জুলুসে পদদলিত হয়ে প্রাণ গেল ২ জনের

সুপ্রভাত ডেস্ক »

চট্টগ্রামে ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষ্যে আয়োজিত ধর্মীয় শোভাযাত্রা জশনে জুলুসে অংশ নিয়ে পদদলিত হয়ে ২ জন মারা গেছেন। শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) বেলা ১২টার দিকে নগরের পাঁচলাইশ থানাধীন মুরাদপুর মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

একই ঘটনায় আহত আরও চারজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে অজ্ঞাত একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাকে হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

নিহতরা হলেন- আইয়ুব আলী (৬০) ও সাইফুল ইসলাম (১৩)। তাদের মধ্যে আইয়ুব আলী চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার বাসিন্দা এবং সাইফুল ইসলাম চট্টগ্রাম নগরের কালামিয়া বাজার এলাকার বাসিন্দা। এছাড়া আহতদের একজনের নাম মাহফুজ (৩৫) এবং বাকিদের পরিচয় জানা যায়নি।

শনিবার দুপুর ২টার দিকে সবশেষ চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ তসলিম উদ্দীন বলেন, জুলুসে পদদলিত হয়ে আহত ৬ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে দু’জনকে মৃত ঘোষণা করা হয়েছে। একজনকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। বাকি ৩ জনকে ওয়ার্ডে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

এদিকে, জুলুস উপলক্ষ্যে শনিবার সকাল থেকে লাখো মানুষ নগরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মুরাদপুর জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া কামিল মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে সমবেত হন। সকাল ৯টায় আলমগীর খানকাহ থেকে শুরু হওয়া এই শোভাযাত্রা নগরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। লাখো মানুষের অংশগ্রহণে আয়োজিত এ জুলুসে নেতৃত্ব দেন আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ সাবির শাহ্ (মা.জি.আ)। বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন– শাহজাদা সৈয়্যদ মুহাম্মদ কাসেম শাহ্ (মা.জি.আ) ও সৈয়্যদ মুহাম্মদ মেহমুদ আহমদ শাহ্ (মা.জি.আ)। বৃহস্পতিবার থেকেই তারা চট্টগ্রামে অবস্থান করছেন।

আনজুমান-এ রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্টের উদ্যোগে এবং গাউসিয়া কমিটি বাংলাদেশের সার্বিক সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত হয় এবারের জুলুস। আয়োজকরা জানিয়েছেন, শরিয়ত সম্মত পরিবেশ বজায় রাখতে ড্রাম সেট বাজানো, নারীর অংশগ্রহণ এবং খাবার নিক্ষেপ কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

আনজুমান ট্রাস্টের সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, রাসুলের (সা.) শুভাগমনের পনেরশ’ বছর পূর্তি এ বছর। একইসঙ্গে আনজুমান ট্রাস্ট শতবর্ষে পদার্পণ করেছে। বিশ্বের বৃহত্তম মিলাদ শোভাযাত্রা হিসেবে খ্যাত এ জুলুস এখন চট্টগ্রামের ইতিহাস-ঐতিহ্যের অবিচ্ছেদ্য অংশ।

গাউসিয়া কমিটির যুগ্ম মহাসচিব ও মানবিক কার্যক্রমের প্রধান সমন্বয়ক মোছাহেব উদ্দিন বখতিয়ার বলেন, ১৯৭৪ সালের ১২ রবিউল আউয়াল থেকে চট্টগ্রামে প্রথম জশনে জুলুসের সূচনা হয়। গাউসে জামান আল্লামা সৈয়দ মুহাম্মদ তৈয়ব শাহের (রহ.) দিকনির্দেশনায় বলুয়ারদীঘি পাড় খানকাহ শরিফ থেকে আনজুমান সুন্নিয়া আলিয়া মাদ্রাসা ময়দানে এসে শেষ হয়েছিল প্রথম আয়োজন।