২০১৭ সালের আগস্ট মাসে ৫ হাজার ৬১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে সিডিএ’র ‘চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে খাল পুনঃখনন, সম্প্রসারণ, সংস্কার ও উন্নয়ন’ শীর্ষক একটি প্রকল্পের অনুমোদন দেয় একনেক। তিন বছর মেয়াদি এই প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় শেষ হয় ২০২০ সালের জুন মাসে। সর্বশেষ অনুমোদন পাওয়া নতুন আরডিপিপি অনুযায়ী জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের ব্যয় ৮ হাজার ৬২৬ কোটি টাকা এবং সময় ২০২৬ সালের জুন পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ২০১৮ বছরের ৯ এপ্রিল সেনাবাহিনীর সঙ্গে সমঝোতা চুক্তি (এমওইউ) স্বাক্ষর করে সিডিএ। এরপর ২৮ এপ্রিল প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্রে প্রকাশ, বর্তমানে প্রকল্পের ভৌত অগ্রগতি ৭২ শতাংশ এবং ব্যয় হয়েছে ৪ হাজার একশ কোটি টাকা।
কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্যি যে, প্রত্যাশা অনুযায়ী কাজের অগ্রগতি হয়নি। ফলে নগরের জলাবদ্ধতা সমস্যা দূর হয়নি। এ নিয়ে নগরবাসীর ভোগান্তিরও শেষ নেই। অভিযোগেরও শেষ নেই। তবে শেষ পর্যন্ত জানা গেল, চলতি মাসের ১৫ তারিখ থেকে পুরোদমে শুরু হচ্ছে চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের কাজ। গত মে মাস থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রায় ৫ মাস বর্ষা মৌসুমকে কেন্দ্র করে এ প্রকল্পে খালের কাজ অনেকটা বন্ধ ছিল। খালের পানি প্রবাহ স্বাভাবিক রাখা এবং জলাবদ্ধতার ভোগান্তি এড়াতে এমন সিদ্ধান্ত ছিল সংশ্লিষ্টদের। তবে সড়ক, ফুটপাত নির্মাণসহ অন্যান্য কাজ থেমে থাকেনি।
পত্রিকান্তরে জানা গেছে,নইতোমধ্যে প্রকল্পের কাজ শুরু করার জন্য ঠিকাদারদের নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে । চলতি বছরের বর্ষায় মুরাদপুর, দুই নম্বর গেট, আগ্রাবাদ, হালিশহরসহ বেশ কিছু এলাকায় জলাবদ্ধতায় দুর্ভোগ পোহাতে হয়। ১৫ অক্টোবরের পর থেকে প্রকল্পের কাজ পুরোদমে শুরু হলে মুরাদপুরসহ জলাবদ্ধতাপ্রবণ চিহ্নিত এলাকাসমূহে কাজ করা হবে বলে জানান প্রকল্প পরিচালক ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেডের লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. ফেরদৌস আহমেদ।
প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, নগরীর ৫৭টির মধ্যে ৩৬ খাল পুনঃখনন, স¤প্রসারণ, সংস্কার ও উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্প হাতে নিয়েছিল চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)। প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড। ৩৬ খালের মধ্যে ২০ খালের রিটেইনিং ওয়াল, সড়ক ও ফুটপাত নির্মাণসহ কাজ প্রায় শতভাগ শেষ হয়েছে। এছাড়াও আরও ১০টি খালের কাজও প্রায় হওয়ার পথে। এর বাইরে হিজড়া খাল, মির্জা, চশমা এবং জামাল খানসহ আরও ৬ খালের সংস্কার ও সম্প্রসারণ এখনও বাকি রয়েছে।
যাক, এবার নগরবাসী আশা করে, প্রকল্পের কাজটি দ্রুত শেষ করার সবধরনের উদ্যোগ নেবে সিডিএ। কারণ বছরের পর বছর একই ধরনের দুর্দশা পোহাতে চায় না তারা।