জলাবদ্ধতা নিরসনে নতুন পরামর্শকে গুরুত্ব দিন

চট্টগ্রাম নগরের জলাবদ্ধতা স্থায়ী সমস্যা হিসেবে পরিগনিত হচ্ছে। বছরের পর বছর চলে যাচ্ছে, প্রকল্পের মেয়াদ ও ব্যয় বাড়ছে কিন্তু সমস্যা কমছে না। জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের অধীন খালগুলো সংস্কারের কারণে পানি প্রবাহিত হওয়ার অনুপযোগী হয়ে আছে। অন্যদিকে প্রকল্পের বাইরের খালগুলো বছরের পর বছর পরিষ্কার ও খনন না করায় ভরাট হয়ে গেছে। এসব কারণে কয়েক মিনিটের বৃষ্টিতে নগর জলে ডুবে যাচ্ছে।
আর মাত্র কয়েকমাস বাকি। শুরু হবে বর্ষাকাল। আর তা নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে ভুক্তভোগী নগরবাসীর। তবে এবার একটি সুসংবাদ পাওয়া গেল, বর্তমান মেয়র জলাবদ্ধতা নিরসনে আগাম প্রস্তুতি হিসেবে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিচ্ছেন।
বুধবার নগর ভবনের সম্মেলন কক্ষে এ বিষয়ে মেয়রের কাছে প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী ড্রেনেজ বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলী আবদুল্লাহ আল মামুন।

বিশেষজ্ঞ কমিটি জরুরি ভিত্তিতে যে ১০টি ছড়া ও খাল খননের সুপারিশ করেছে সেগুলো হলো- চাক্তাই খাল, মহেশ ডাইভারশন খাল, মহেশ খাল, বদর খালী খাল, জামালখান খাল, রুমঘাটা জেলে পাড়া ছড়া, দেবপাহাড় ছড়া, চট্টেশ্বরী খাল, হিজড়া খাল ও বাদুড়তলা ছড়া।

পাশাপাশি কর্ণফুলী নদীর সঙ্গে যুক্ত খালগুলোর মুখ খনন ও পরিষ্কার করা, বাড়ইপাড়া ডাইভারশন খালের সঙ্গে রাজাখালী খাল যুক্ত করা, আগ্রাবাদের শেখ মুজিব সড়কের বক্স কালভার্ট পরিষ্কার করা, খালের ভেতরে বালুর ফাঁদ বা সিল্টট্র্যাপ স্থাপন করার সুপারিশ করে কমিটি।

এছাড়া খাল ও নালা থেকে ভাসমান ময়লা-আবর্জনা ও প্লাস্টিক অপসারণে প্রতিবন্ধকতা দূর করা এবং নগরীর কাট্টলীতে রাসমণি ঘাটে স্লুইসগেট বা জলকপাট নির্মাণেরও পরামর্শ দিয়েছে কমিটি।
বিশেষজ্ঞ কমিটি জানায়, আসন্ন বর্ষায় সুফল পেতে হলে আগামী ৩০ মে’র মধ্যে কাজগুলো শেষ করতে হবে।
প্রতিবেদনে এসব কাজ চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস ও পানি উন্নয়ন বোর্ডকে দিয়ে করার সুপারিশ করা হয়েছে।

জলাবদ্ধতা নিরসনে সিডিএর চলমান প্রকল্পে বেশ কিছু অসংগতি ধরা পড়েছে জানিয়ে সভায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র শাহাদাত হোসেন বলেন, “বিশেষজ্ঞ দলের সুপারিশ অনুযায়ী ইতিমধ্যে খাল খনন ও পরিষ্কারের কাজ শুরু করা হয়েছে। সেবা সংস্থাগুলোর সঙ্গেও সুপারিশগুলো নিয়ে বসেছি। তারাও আন্তরিকতা দেখিয়েছেন।সিডিএর প্রকল্পে ৫৭ খালের মধ্যে ২১টি বাদ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এগুলো নিয়ে কাজ করতে হবে। না হলে জলাবদ্ধতা সমস্যা দূর হবে না।”

এ বিষয়ে অনেকবার আলোকপাত করা হয়েছে কিন্তু কর্তৃপক্ষ কানে তোলেনি। যে কারণে সমস্যা ঘনীভূত হয়েছে। মেয়রের এই উদ্যোগ সফল হলে নগরবাসী উপকৃত হবে।