জুয়েল আশরাফ »
আতিয়ার লাজুক মুখে বলল, তহু এখানে দাঁড়িয়ে কি করছো? কিছু রোদ্রে এবং কিছু ছায়ায় থাকা ভালো না।
তহু নামের পাঁচফুট ছয় ইঞ্চি উচ্চতার শ্যামলা মেয়েটি তীক্ষণ চোখে তাকাল। তার হাতে সমরেশ মজুমদারের ‘অসুখলতার ফুল‘। গল্পের বই হাতে নিয়ে মেয়েরা রাগ দৃষ্টিতে তাকালে কেউ মুগ্ধ হয় না। কিন্তু আতিয়ার মুগ্ধ এবং অভিভূত। তার কাছে মনে হলো পটে আঁকা ছবির কোনো মেয়েকে দেখছে। যে-মেয়েটি ছবির ভেতর দুপুরের আলস্যি কাটাতে বিছানায় উপুড় হয়ে গল্পের বই পড়ছিল। অনেকদিন ছবির ফ্রেমে বন্দি থাকতে-থাকতে বিরক্ত হয়ে অল্প আগেই ফ্রেম থেকে বেরিয়ে এসেছে। ছবির সব মেয়েই সুন্দর হয়। তাদের দৃষ্টিতে রাগ ছাড়া মহারাগ থাক, তাতে অসুবিধা নেই। এদের মুগ্ধ চোখে দেখাই নিয়ম। এই নিয়ম আতিয়ার ভঙ্গ করতে পারে না। নিয়মভঙ্গ না করার ভেতর দিয়ে সে তহুকে দেখছে। তার মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে দেখা চোখ মেয়েটির চোখের রাগ দেখতে পাচ্ছে। আতিয়ার একবার ভাবল, তার দৃষ্টি বিভ্রম হচ্ছে। মাঝে-মাঝেই দৃষ্টি বিভ্রম হয়। তহু হয়তো স্বাভাবিক তাকিয়েছে। কিন্তু সে দেখল উল্টো। দৃষ্টিবিভ্রমের কারণে এই সমস্যাগুলো হয়। এছাড়া তহু এম্নি-এম্নি রাগ নিয়ে থাকার মেয়ে না। আতিয়ার তাকে রেগে যাওয়ার মতো কিছু বলেনি।
আতিয়ারের দৃষ্টিবিভ্রম হয়নি। তহুরা সত্যি সত্যিই রেগে আছে। রোদে দাঁড়ানো নিয়ে খবরদারি করাতে সেই রাগ আরো ধক করে বেড়ে গেল। কিন্তু আতিয়ার বুঝতে পারছে না। রাগ, ক্ষোভ, হিংসা, ঘৃণা, ভালোবাসা এগুলো মানুষের চোখে প্রকাশ পায়। এই সহজ ব্যাপারগুলো সবাই বুঝে যায়। শুধু এই নির্বোধ মানুষটা বোঝে না। কেন যে বোঝে না, তহুরার মাথায় আসে না। তার ধারণা এই মানুষটি নির্বোধের থেকেও উচ্চপ্রজাতির নির্বোধ।
তহুরা বিরক্ত মুখে বলল, আপনি কি কিছু বলতে এসেছেন?
বলেই সে লক্ষ করল উচ্চপ্রজাতির নির্বোধ মানুষটি মাথা নিচু করে আছে। এই মানুষটা তার চোখের ভাষা পড়তে পারেনি। তার ঝাঁজালো স্বরে টের পেয়ে গেছে রাগের খবর। কঠিন কিছু বলার ইচ্ছা আছে তহুরার।
কিছু বলবেন?
আতিয়ার শ্লেষ্মা জড়ানো গলায় বলল, দেখতে এলাম। দুপুরে আমি কখনও ছাদি আসি না। তোমাকে দেখে ওঠে আসলাম। আচ্ছা তহু তুমি পড়ো। গল্পের বই পড়ো।
আপনি কি এখন ছাদে থাকবেন?
তোমার অসুবিধা হলে থাকব না।
অসুবিধা তো আমার হবেই। একজন পুরুষের সঙ্গে আমি ছাদে থাকি না। আপনার যদি খুব বেশি ইচ্ছে করে আপনি থাকেন। আমি নিচে নেমে পড়ি।
বলতে-বলতে তহুরা চলে যাওয়ার জন্য পা বাড়াল। আতিয়ার সঙ্গে-সঙ্গে বলল, তহু শোনো, তোমার নিচে নামতে হবে না। আমি চলে যাচ্ছি।
একটা কথা শুনুন। আমার নাম তহুরা। আপনি ‘তহু’ ডাকেন কেন?
যেন ধরা পড়ে গেছে, এমন ভঙ্গিতে আতিয়ার বলল, মনে থাকে না। বারবার ভুল হয়ে যায়।
এমন ভুল তো আপনি সবসময়ই করেন। আগেও বহুবার বলা হয়েছে। বাড়িতে আমাকে কেউ ‘তহু’ ডাকে না। শুধু আপনিই ডাকেন। আমাকে কেউ ‘তহু’ ডেকেছে শুনেছেন?
না।
তাহলে আপনি ডাকবেন কেন?
আর কখনও ভুল হবে না। এই শেষ।
ঠিক আছে যান।
তহুরা দেখল, বলার পরও মানুষটা যাচ্ছে না। মাথা নিচু করে আছে। কিছু বলতে চায়। কথা গুছিয়ে নিচ্ছে মনে হয়।
তহুরা বলল, আর কিছু বলবেন?
আতিয়ার মাথা ওঠাল। করুণ গলায় বলল, আচ্ছা ‘তহু’ নামটা কি খারাপ?
তহুরা বিরক্ত হয়ে বলল, ভালো-খারাপ প্রসঙ্গ না। আমার নাম যা, তাই তো বলবেন। আপনার নাম আতিয়ার। কেউ যদি আপনাকে ‘আতু’ ‘আতু’ ডাকে, শুনতে কেমন লাগবে?
আতিয়ার খুশি গলায় বলল, কেউ তো ডাকে না। তোমার যদি ডাকতে ইচ্ছে হয়, আমি কিছু মনে করব না। সুখী হবো।
তহুরার অস্বস্তি লাগছে। সে বলল, আপনি এত বোকা কেন? আপনাকে কেউ ‘আতু’ ‘আতু’ ডাকবে, শুনে আপনি সুখী হয়ে যাবেন? আজব মানুষ!
আতিয়ার বলল, আমি বোকা না। তুমি আমাকে ‘আতু’ ডেকো, আমি কখনও রাগ করব না। তোমার তহুরা নামের চেয়ে তহু নামটি সুন্দর। আমি যদি তোমার ব্যাপারে স্বাধীনতা পেতাম তহু নামই বলতাম। আমার কাছে তহু নাম ভালো লাগে।
আপনার ভালোলাগা দিয়ে তো আর আমার নাম বদলাতে পারব না। আমার যা নাম, তা-ই তো বলবেন।
তোমার নাম তো পুরোপুরিভাবে বদল হচ্ছে না। আমরা কাউকে যখন স্নেহের সঙ্গে ডাকি তখন তার নামটাকে একটু অদলবদল করে দিই। ধরো, কারোর নাম শাহানা, তাকে শানু। শিলা হলে শিলু ডাকি। তোমার নাম তহুরা থেকে তহু।
তহুরার ভয়ংকর রাগ পেয়ে যাচ্ছে। অতিকষ্টে নিজেকে সংযত রেখে সে বলল, আমার নাম আপনার স্নেহের সঙ্গে মেশাতে হবে না। আমি ছোট না যে, আমাকে স্নেহ দিয়ে ডাকবেন।
আতিয়ার উৎসাহের সঙ্গে বলল, শুধু স্নেহ ভাবছো কেন? ভালোবাসা নিয়েও ডাকা যায়।
তহুরা বলল, এই পৃথিবীতে আমার বাবা-মা ছাড়া আর কেউ বেশি ভালোবাসে না আমাকে। তারা কেউই যখন ‘তহু’ ডাকে না, অন্য কেউ ডাকলে আমি খুব অপছন্দ করবো। আচ্ছা নাম নিয়ে আপনার সঙ্গে অনেক কথা হয়ে গেছে। আমি এখন বইটাতে পড়ায় মন দেব। নিচে কোনো ঘর খালি পাইনি। নিরিবিলিতে পড়ব বলে ছাদে ওঠে এসেছি।
স্পষ্টই ইঙ্গিত, ‘আপনি এক মুহূর্ত দেরি করবেন না। এখনই ছাদ থেকে নেমে পড়ুন। না-হলে আপনাকে ছাদ থেকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেওয়া হবে। তহুরা অবাক হয়ে দেখল উচ্চপ্রজাতির নির্বোধ মানুষটা এই সহজ ইঙ্গিতও বুঝল না।
আতিয়ার অল্প হেসে বলল, তোমার যার সঙ্গে বিয়ে হবে, সেই লোকটা তোমাকে ‘তহু’ ডাকবে।
তহুরার মেজাজ বিগড়ে গেল। তার ইচ্ছে হচ্ছে হাতের বইটি দিয়ে এই মানুষটির মাথায় মারে।
আতিয়ার দুঃখিত গলায় বলল, অনেকক্ষণ তোমাকে বিরক্ত করলাম। তুমি গল্পের বই পড়ো। আমি নিচে নামি। আর শোনো, কিছু ছায়ায় কিছু রৌদ্রে বসো না।
আতিয়ার চলে যাওয়ার জন্য পা বাড়াল। তহুরা আবার তাকে ডাকল। ব্যাপারটি বোঝা দরকার। মানুষটি কিছু ছায়ায় কিছু রৌদ্রে বসা নিয়ে বারবার সতর্ক করছে কেন! ছায়া-রৌদ্রের রহস্য কী? মানুষটির বলার ভঙ্গিতে মনে হচ্ছে গূঢ়তত্ত্ব ব্যাপার আছে কোনো। ডাক শুনে আতিয়ার হাসি-হাসি মুখে এসে দাঁড়িয়েছে। তহুরা তার দিকে তাকাল সরু চোখে।
আপনি আমাকে রোদ-ছায়ায় বসা নিয়ে নিষেধ করে যাচ্ছেন, কারণ কী?
আতিয়ারের মুখ থেকে হাসি উড়ে গেল। তার ধারণা হয়েছিল তহু তাকে বলবে, ‘আমার নামটি আপনার এত পছন্দ, আমাকে আপনি ‘তহু’ নামেই ডাকবেন। আমি আর কখনও রাগ করবো না। কিন্তু তার ধারণা মোতাবেক ব্যাপার ঘটেনি। তাকে যে বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হয়েছে, আগে বুঝতে পারলে রোদ-ছায়ায় বসা নিয়ে সে কখনই এই মেয়েকে কিছু বলতো না। এই মেয়ের যা স্বভাব! এখনই তাকে ব্যাখ্যা করতে হবে। ব্যাখ্যা যুক্তিসংগত হলেই তবে সে মুক্তি পাবে। তাছাড়া রোদ-ছায়ায় বসা নিয়ে সে তো নিষেধ করেনি। নবী করীম ছাল¬াল¬াহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কিছু ছায়ায় আর কিছু রৌদ্রে শোয়া বা বসা নিষেধ করেছেন। নবীর নিষেধের পরে আর কোনো যুক্তি খোঁজা যাবে না। সেখানে যুক্তি বুঝে আসুক অথবা না আসুক। নিশ্চয়ই নবীর কথা মানার মধ্যেই দুনিয়া-আখিরাতের কল্যাণ রয়েছে। কিন্তু এই মেয়ে সেটা বুঝবে না। যুক্তি খুঁজবে। কিছু রোদ কিছু ছায়ায় শোয়া-বসা নিষেধের ব্যাপারে ব্যাখ্যা চাইবে। কিন্তু আতিয়ারের তো ব্যাখ্যা জানা নেই। সে শুধু নবী করীম (স.)-এর নিষেধের ব্যাপারটাই জানে। মেয়েটি যদি তাকে জিজ্ঞেস করতো পানি ও পানপাত্রে নিশ্বাস ত্যাগ করা ও ফুঁ দেওয়া নিষেধের কারণ ব্যাখ্যা করেন। তবে সে সুন্দর ব্যাখ্যা দাঁড় করাতে পারবে। এ বিষয়ে তার বিস্তারিত জ্ঞান আছে। নবী করীম (স.) বলেছেন, ‘তোমাদের কেউ পানি পান করার সময় পাত্রে নিশ্বাস ত্যাগ করবে না, নিশ্বাস ফেলতে হলে পাত্র থেকে মুখ সরিয়ে নেবে। এরপর আবার পান করতে চাইলে পাত্রে মুখ লাগাবে।’ নবী করীম (স.) পানীয়দ্রব্যে ফুঁ দিতেন না। পাত্রে ফুঁ দিতে নিষেধ করেছেন। পানিতে নিশ্বাস ফেলতে বা ফুঁ দিতে এজন্য নিষেধ করা হয়েছে যে, নিশ্বাসের সঙ্গে দেহাভ্যন্তরের সকল দূষিত বাষ্প বের হয়ে আসে। তাই পানিতে নিশ্বাস ফেলা হলে বা ফুঁ দেওয়া হলে অভ্যন্তর থেকে নির্গত দূষিত বাষ্পের দ্বারা পানি প্রবাহিত হয়। ফলে নির্গত বাষ্প পুনরায় দেহাভ্যন্তরে প্রবেশ করে, যদ্দরুন রোগ সৃষ্টির আশঙ্কা থাকে। মানবদেহে শ্বাস-প্রশ্বাসের আগমন-নির্গমন যেন একটি কুদরতি ব্যবস্থা। এর মাধ্যমে প্রতি মুহূর্তে মানবদেহের আবর্জনা ও দুর্গন্ধযুক্ত পদার্থ বের হয়ে আসে এবং স্বচ্ছ ও সতেজ বাতাস দেহের অভ্যন্তরে প্রবেশ করতে থাকে। এর মাধ্যমেই মানুষের স্বাস্থ্যের সুরক্ষা হয়। নিশ্বাসের মাধ্যমে দেহাভ্যন্তরের যে সকল নির্যাস, দূষিত বাষ্প ও পদার্থ বের হয়ে আসে, সেগুলোকে পুনরায় নিশ্বাসের মাধ্যমে পানাহারের বস্তুতে ত্যাগ করা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কারণ, তাতে রোগব্যাধির সৃষ্টি হয়।
আতিয়ার ভীত গলায় বলল, আমাদের নবী করীম (স.) কিছু ছায়ায় ও কিছু রৌদ্রে শোয়া বা বসা নিষেধ করেছেন।
তহুরা বলল, ঠিক আছে। আপনি যাচ্ছিলেন, এখন যান।
এত সহজেই মেয়েটি তাকে ছেড়ে দেবে আতিয়ার ভাবেনি। তার ধারণা ছিল, বিশদ ব্যাখ্যা না হওয়া পর্যন্ত ছাদ থেকে সে নামতে পারবে না। সুন্দরী মেয়েদের বিষয়ে তার আরও একটি ধারণা হলো, ধর্মজ্ঞান কম। কিন্তু রূপবতী তহুরা ওরফে তহুকে দেখে সেই ধারণা আজ পাল্টে গেল।
বেশ কিছুদিন হয়ে গেছে আতিয়ার ছাদে যায় না। সেদিন ছাদে তহুরার সঙ্গে শেষ কথা হওয়ার পরপরই সে নিচে নেমে তহুরাদের ঘরের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় থমকে দাঁড়াল। ঘরভর্তি লোকজন, মেহমান শ্রেণির মানুষই সবচেয়ে বেশি। অথচ তহুরা সবাইকে এড়িয়ে ছাদে ঘোরাঘুরি করছে। তহুরার ছোটভাইকে ডেকে জিজ্ঞেস করে পুরো ব্যাপারটা জানা গেল। নিশ্চুপ-নিঃশব্দে আতিয়ার ঘরে এসে নিজের বিছানায় শুয়ে পড়ল। এরপর সাতদিন আর ঘর থেকে বেরোয়নি। ঘরের লোকজনও অবাক, সারাদিনে ছাদে থাকা ছেলেটি এই কদিনে একটিবারও ঘর থেকে বের হয়নি! ঘরের লোকজনের কাছেই কানাঘুষা শুনেছে তহুরাকে ছেলেপক্ষ এসে দেখে গেছে। সব ঠিকঠাক হয়ে গেলে সামনের মাসেই বিয়ে।
এই কয়েকটা দিন আতিয়ার নিজের সঙ্গে যুদ্ধ করে গেছে শুধু। তহুরা বাড়িওয়ালার মেয়ে বলেই সাহস পায় না আতিয়ার কিছু বলবে। কিন্তু এভাবে বেঁচে থাকা কঠিন। প্রেম একটি রোগ না হয়ে নিরোগ হলে ভালো হতো, কারোরই মনে দুঃখ জন্ম নিতো না।
পরেরদিন ঘুম ভেঙে আতিয়ার দেখল আকাশের মুখ ভার, জোলো হাওয়া দিচ্ছে। তহুরার কথা ভেবে মনটা একটু খারাপ হয়ে গেল তার। মেয়েটির কিছুদিন পর বিয়ে। বেলা বাড়তে ফোন করল, বেজে-বেজে থেমে গেল, তহুরা ধরল না। আতিয়ার ভেবেছে মিসড কল দেখে ফোনব্যাক করবে, তাও করল না। আকাশের সঙ্গে সঙ্গে তার মনটাও ভার হয়ে থাকল।
বিকাল পর্যন্ত দেখে তহুরাদের বাড়ি গেল আতিয়ার। তহুরার মা দরজা খুলে দিয়ে গজগজ করতে-করতে বললেন, সে ছাদে, ঠান্ডা হাওয়ায় দাঁড়িয়ে আছে, ডাকলেও নামছে না।
তিনতলার ছাদে ওঠে আতিয়ার দেখল, মেঘ সরতে শুরু করেছে। তহুরা রেলিংওয়ালে ভর দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। পায়ের শব্দ পেয়ে ফিরে তাকাল। আতিয়ার কাছে গিয়ে দাঁড়াতে বলল, আপনি এই কদিন ছাদে আসেননি কেন?
আতিয়ার আকাশ থেকে পড়ল, তহুরা কি কোনোভাবে তার আচরণজনিত প্রেমের রোগ আবিষ্কার করে ফেলেছে নাকি! কেউ কি আকার-ইঙ্গিতে কিছু বলে দিয়েছে? কে জানে! তহুরা বলল, আপনার ছাদে আসায় কোনো বাধা নেই, আমার বিয়ের পর যখন ইচ্ছা হবে ছাদে চলে আসবেন। কেউ বিরক্ত হবে না। আপনাকে কেউ বিরক্ত করবেও না। আতিয়ার হাঁদার মতো বলল, তোমার বিয়ে মানে?
তহুরা এগিয়ে এসে আতিয়ারের ঠোঁটে ঠোঁট রাখল। আতিয়ার মুখের মধ্যে একটা ভিজে-ভিজে মিষ্টি স্বাদ পেল। তাকে ছাদে দাঁড় করিয়ে রেখে তহুরা চলে যাচ্ছিল। আতিয়ার ডেকে বলল, তহু, তুমি আমাকে ছেড়ে কাউকে বিয়ে করো না, তোমাকে ছাড়া বাঁচব না।
তহুরা ঘাড় ফিরিয়ে বলল, বোকা… এই কয়টা কথা বলতে এত বছর সময় নিতে হলো?
ঠিক তখনই আতিয়ারকে আশ্বস্ত করে ওর মুখের পাশে শেষ বিকালের মায়াময় হলুদ আলো এসে পড়ল।