চবি প্রতিনিধি »
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ছাত্রলীগের একাংশের ডাকা অনির্দিষ্টকালের অবরোধে থমথমে ছিলো ক্যাম্পাস। দিনভর চলা এই অবরোধের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক ক্লাস ও পরীক্ষা স্থগিত হয়েছে।
ঘোষিত পূর্ণাঙ্গ কমিটি বর্ধিতসহ ৩ দফা দাবিতে অবরোধ ডাকে আন্দোলনকারীরা। সোমবার সকাল সাড়ে ৭টা থেকে অবরোধ শুরু হয়। এর আগে ভোর ৫টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন দপ্তরেও তালা দেন তারা। যার কারণে চলাচল করেনি কোন শিক্ষক বাস এবং শাটল ট্রেন। ১৪টি অনুষদের পরীক্ষা হওয়ার কথা থাকলেও ৭টিতে স্থগিত করা হয়। পাশাপাশি এদিন ছিলো স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষার সব ইউনিটের ওয়ার্ড কোটা, শারীরিক প্রতিবন্ধী কোটা ও দলিত কোটার সাক্ষাৎকারের তারিখ। এদের মধ্যে যারা উপস্থিত হতে পেরেছেন, তাদের সাক্ষাৎকার নেয়া হয়েছে। বাকিদের জন্য সময় একদিন বাড়ানো হয়েছে। আন্দোলকারী পদবঞ্চিতরা দীর্ঘদিন থেকেই তাদের দাবি জানিয়ে আসছিলো। মূলত ৩টি দাবিতে তারা অবরোধ পালন করছে।
দাবিগুলো হলো, পদবঞ্চিত ত্যাগী ও পরিশ্রমী কর্মীদের মূল্যায়ন করে কমিটি বর্ধিতকরণ। কমিটিতে স্থান পাওয়া নেতাদের যোগ্যতা অনুসারে পদগুলোর পুনর্মূল্যায়ন। কমিটিতে পদপ্রাপ্ত বিবাহিত, চাকরীজীবী ও দীর্ঘদিন রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থাগ্রহণ।
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের ৬টি উপগ্রুপ অবরোধ শুরু করে। গ্রুপগুলো হলো ভিএক্স, কনকর্ড, আরএস, বাংলার মুখ, এপিটাফ ও উল্কা। সবগুলো গ্রুপই সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী। পরে দুপুরে আরেকটি উপগ্রুপ ‘বিজয়’ অবরোধে সমর্থন জানায়। বিজয় শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী।
ভিএক্স গ্রুপের নেতা প্রদীপ চক্রবর্তী দুর্জয় বলেন, ‘সদ্য ঘোষিত শাখা ছাত্রলীগের যে অসমাঞ্জস্যপূর্ণ কমিটি সেখানে দীর্ঘদিনের পরিশ্রমী ও ত্যাগী নেতাদের রাখা হয়নি। আমাদের দাবি, কমিটি বর্ধিত করে তাদের পদায়ন করতে হবে এবং কমিটি থেকে বিতর্কিতদের বাদ দিতে হবে।’
আরএস গ্রুপের নেতা রকিবুল হাসান দিনার বলেন, দীর্ঘদিন থেকেই নিয়মতান্ত্রিক শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে দাবি জানিয়েছিলাম। দাবির প্রেক্ষিতে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জানিয়েছেন কমিটি বর্ধিত করবেন। কিন্তু এখন তিনি উল্টো হল ও ফ্যাকাল্টি কমিটি দেওয়ার প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন। তাই আন্দোলনে নামতে বাধ্য হয়েছি। কেন্দ্র থেকে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা আসার পূর্ব পর্যন্ত অবরোধ চলবে।
চবি প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভুঁইয়া বলেন, কয়েকটি ক্লাস-পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। পদ দেওয়ার ক্ষমতা তো আমাদের নেই। যারা আন্দোলন করছে তারাও আমাদের শিক্ষার্থী। তাই তাদের সাথে আলোচনা করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছি। অন্যথায় কঠোর অবস্থানে যেতে বাধ্য হবো।
উল্লেখ্য, ৩১ জুলাই প্রায় ৩ বছর পর চবি ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়। এরপর থেকেই ধারাবাহিক আন্দোলন করে আসছে পদবঞ্চিতরা।