সুপ্রভাত ডেস্ক »
এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় ছাত্রীদের তুলনায় ছাত্র সংখ্যাকমে যাওয়ার এবং পাসের হারে নিয়মিতভাবে ছাত্রদের পিছিয়ে থাকার কারণ খুঁজতে বললেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রোববার সকালে মাধ্যমিক পরীক্ষার ফল প্রকাশ করে তিনি বলেন, ১১টি শিক্ষা বোর্ডে মোট ২০ লক্ষ ৩৮ হাজার ১৫০ জন পরীক্ষার্থী ছিল। ছাত্রসংখ্যা ৯ লক্ষ ৯৯ হাজার ৩৬৪ জন। আর ছাত্রী সংখ্যা ১০ লক্ষ ৩৮ হাজার ৭৮৬ জন।
“কারণটা আমাদের খুঁজে বের করতে হবে, ছাত্র সংখ্যা কেন কম। কী কারণে ছাত্র কমে যাচ্ছে। পাসের হারের ক্ষেত্রেও অনেক ক্ষেত্রে মেয়েরা এগিয়ে। সেটা খুব ভালো কথা। কিন্তু তারপরও আমি বলব, এ বিষয়টায় আমাদের দৃষ্টি দিতে হবে।”
শিক্ষামন্ত্রী ব্যারিস্টার মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল রোববার সকালে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে সরকারপ্রধানের হাতে এবারের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফলের সারসংক্ষেপ তুলে দেন। আর শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যানরাও নিজ নিজ বোর্ডের ফলাফলের প্রতিবেদন প্রধানমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাক্ষরতার হার বেড়েছে। শিক্ষায় অংশ নেওয়া ছাত্রছাত্রীর সংখ্যাও অনেক বেড়েছে। মেয়েদের হার অনেক বেড়েছে। প্রাথমিকে একসময় ৫৪ শতাংশ ছাত্রী যেত, এখন ৯৮ শতাংশ মেয়ে স্কুলে যায়।
“আর এখানে (এসএসসির ফল) ফলাফল দেখে আমি হিসাব করছিলাম, প্রত্যেকটা বোর্ডে আমাদের শিক্ষার্থীর সংখ্যা কত। মাত্র তিনটা বোর্ডে ছাত্রের সংখ্যা একটু বেশি। অধিকাংশ জায়গায় ছাত্রীদের সংখ্যা বেশি। এটা একদিকে খুশির খবর। কারণ নারী শিক্ষার ওপর আমরা বেশি জোর দিয়েছি। এইচএসসি পর্যন্ত মেয়েদের শিক্ষা অবৈতনিক করেছি।
ছেলেদের সংখ্যা কমার কারণ জানার পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বিবিএসকে বলতে পারি জরিপের সময় এটা জানার চেষ্টা করতে। কী কারণে ছেলেরা কমবে? মেয়েরা বাড়লে খুশি হই। সমান সমান হলে ভালো। কিন্তু ছেলে কেন কমলো এটা জানতে হবে। ছেলেরা পিছিয়ে আছে কেন জানতেই হবে। এটা যার যার বোর্ডে খোঁজ নেবেন। কিশোর গ্যাং কালচার দেখতে পাচ্ছি। কাজেই এটা খতিয়ে দেখতে হবে।”
যারা পাস করেছে, তাদের অভিনন্দন জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “যারা অকৃতকার্য হয়েছে, ফেল করেছে তাদের বলব, মন খারাপ যাতে না করে। এবার হয়ত কোনো কারণে তারা পারেনি। তবে এজন্য বাবা-মা যেন তাদের গালাগাল না করেন। তাদের মন এমনিতেই তো খারাপ। কেন সে পারল না সেটা খুঁজে বের করে পড়াশোনায় মনোযোগী করতে হবে।”
নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ফল ঘোষণা করায় সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আজ আমরা দেখতে পাচ্ছি যে, মাত্র ৬০ দিনের মধ্যে ফলাফল ঘোষণা করা হচ্ছে। কিন্তু এমনও সময় গেছে মাসের পর মাস ফলাফল পড়ে থেকেছে। শিক্ষার্থীরা সেটা পায়নি। কিন্তু এখন একটা নিয়মের মধ্যে আনা হয়েছে।”
শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা আসার পর থেকেই প্রচেষ্টা ছিল মানুষকে লেখাপড়ার প্রতি উৎসাহিত করা। যাতে তারা লেখাপড়ার দিকে মনোযোগ দেয়।
“এখানে আমরা দেখতে পাচ্ছি দিনে দিনে সাক্ষরতা হার বেড়েছে। শিক্ষা অংশগ্রহণকারী ছাত্র-ছাত্রী সংখ্যা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। তারপরও কেউ যদি ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে, তাদেরকে স্কুলে পাঠানো আমাদের দায়িত্ব।
“শুধুমাত্র এমএ বিএ পাস করবে তা নয়, সাথে কারিগরি শিক্ষা, বিজ্ঞান প্রযুক্তি, তথ্যপ্রযুক্তি, শিক্ষিত হওয়ার জন্য যা যা দরকার বা বিশ্ব পরীমণ্ডলে প্রতিযোগিতা করে টিকে থাকার শিক্ষা ব্যবস্থায় আমরা প্রবর্তন করতে চাই।”


















































