নিজস্ব প্রতিবেদক »
সাধারণত জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ডেঙ্গুর প্রকোপ থাকে। কারণ এ সময়টাতে এডিস মশার বিস্তার ঘটে। কিন্তু মৌসুম শুরু না হতেই চোখ রাঙাতে শুরু করেছে ডেঙ্গু। চট্টগ্রাম জেলা এবং উপজেলায় গত চব্বিশ ঘণ্টায় ৩৩৪ জন আক্রান্ত হয়েছেন। তবে ডেঙ্গু নিয়ে সর্বাত্মক প্রস্তুতির কথা জানিয়েছেন চট্টগ্রামের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা।
চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন সূত্রে জানা গেছে, গত চব্বিশ ঘণ্টায় চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ৮০ জন, জেনারেল হাসপাতালে ১৪ জন, অন্যান্য হাসপাতালে ৮০ জনসহ মোট ১৭৪ জন আক্রান্ত হয়েছেন।
উপজেলার মধ্যে মিরসরাইয়ে ৩, সীতাকু-ে ১৫, সন্দীপে ২, ফটিকছড়ি ৭, হাটহাজারী ৫, রাউজান ৬, রাঙ্গুনীয়া ১০, বোয়ালখালী ১৯ , আনোয়ারা ১৪, পটিয়া ১৫, বাঁশখালী ১০, কর্ণফুলী ৩, চন্দনাইশ ২৭ , সাতকানিয়া ১৭ এবং লোহাগাড়ায় ৭ সহ মোট ১৬০ আক্রান্ত হয়েছেন।
সময়ের আগে ডেঙ্গু রোগী বাড়ার কারণ হিসেবে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. আব্দুস সালাম বলেন, ‘আগাম বৃষ্টির কারণে এডিস মশার বিস্তার ঘটছে। শুধু তাই নয়, থেমে থেমে বৃষ্টি হওয়ার কারণে বিভিন্ন টবে, আঙিনায় পানি জমছে। সেখান থেকে জন্ম নিচ্ছে এডিস মশা। যার ফলে বাড়ছে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা।
তিনি আরও বলেন, এখনই সচেতেন হতে হবে। এডিস মশা যেহেতু স্বচ্ছ পানিতে ডিম পাড়ে তাই বাসার ফুলদানি, কোন অব্যবহৃত কৌটা, ডাবের খোসা, কিংবা পরিত্যক্ত টায়ার থাকলে সেগুলো দ্রুত সরিয়ে ফেলতে হবে। লক্ষ্য রাখতে হবে যেন বাথরুমে বা অন্য কোথাও পাঁচদিনের বেশি পানি জমানো অবস্থায় না থাকে। এছাড়া ঘুমানোর আগে মশারি টাঙিয়ে নিতে হবে। কারো জ্বর হলে অবশ্যই ডেঙ্গু পরীক্ষা করতে হবে। অবস্থা বেশি সিরিয়াস হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।’
এদিকে গতকাল সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়েছে, ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা গতবারের তুলনায় ৫ গুণ বেড়েছে। তার জন্য সব হাসপাতালগুলোকে প্রস্তুত থাকার পরামর্শ এবং বেশ কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
ডেঙ্গু নিয়ে সতর্ক অবস্থানে থাকার কথা জানালেন চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী। তিনি বলেন, আমাদের পর্যাপ্ত প্রস্তুতি রয়েছে। মন্ত্রণালয় থেকে এ ব্যাপারে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সেগুলো নিয়ে আজ (৩০ মে) ইন্টারনাল মিটিং হবে। সে মোতাবেক কাজ শুরু হবে। এ ব্যাপারে আমাদের উপজেলাগুলোতে স্বাস্থ্যকর্মীদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, কমিউনিটি ক্লিনিগুলো প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে।
চসিকের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সেলিম আক্তার বলেন, ‘নগরীর ৪১ টি ওয়ার্ডের হেলথ সেন্টার আছে। সেখানকার প্রতিষ্ঠানকে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। এছাড়া ওয়ার্ডের এলাকাবাসীকে সচেতন করতে বাসার ফুলদানি, কোনো অব্যবহৃত কৌটা, ডাবের খোসা, কিংবা পরিত্যক্ত টায়ারে পানি জমা না রাখা নিয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। সেটি এখনও চলমান রয়েছে। হেলথ সেন্টারে পর্যাপ্ত ওষুধ , চিকিৎসা সরঞ্জাম রাখতে কাজ চলছে। ’