চেরাগীতে বিক্ষোভ সনাতন ধর্মাবলম্বীদের

হামলা, নিপীড়ন ও সহিংসতা বন্ধসহ নয় দফা দাবি বিএসপির

নিজস্ব প্রতিনিধি »

বৈষম্যবিরোধী কোটা আন্দোলনকে ঘিরে সরকার পতনের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে হিন্দু সম্প্রদায় ও তাদের বাড়িঘরে হামলা, নিপীড়ন ও সহিংসতার ঘটনা ঘটছে বলে দাবি হিন্দু নেতাদের। যার প্রতিবাদে নগরীর চেরাগী পাহাড় মোড়ে অবস্থান কর্মসূচি ও বিক্ষোভ করেন চট্টগ্রামের সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। বিক্ষোভ জমায়েত চেরাগী পাহাড় মোড় ছড়িয়ে আন্দরকিল্লা, বৌদ্ধ মন্দির, জামালখান মোড় পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। বিভিন্ন উপজেলা থেকে বাস, ট্রাক নিয়েও লোকজন আসতে থাকেন।

শনিবার বিকেলে এ কর্মসূচি পালিত হয়। দেশের চলমান হিন্দুদের উপর হামলা বন্ধ না হলে তারা আরও কঠোর কর্মসূচিতে যাবেন বলে হুঁশিয়ারি করেন।

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের এ কর্মসূচিতে তাদের নানা পোস্টার ও প্লাকার্ডে দেখা যায়, ‘এ পবিত্র মাটি ছেড়ে সুধাংশুরা যাবে না’, ’রাজনৈতিক পট পরিবর্তনে হিন্দুরা কেন ট্রাম্প কার্ড’, ‘স্বাধীন দেশে আমরা কেন স্বাধীন নই’, ‘আমার মন্দিরে হামলা কেন?’, ‘বাঁচতে হলে লড়তে হবে, আঘাত আসবে যেখানে প্রতিরোধ হবে সেখানে’- ইত্যাদি স্লোগান।

এ সময় কালো কাপড়ে তারা দেশের সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন, হামলা, হুমকি, আগুন দেয়া, মূর্তি ভাঙচুরসহ নানা ঘটনার প্রতিবাদ জানান।

এদিকে অনতিবিলম্বে সংখ্যালঘুদের ওপর চলমান নিপীড়ন, নির্যাতন বন্ধ করাসহ ৯ দফা দাবি জানিয়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম সংগঠন বাংলাদেশ সনাতন পার্টি (বিএসপি)। শনিবার এ দাবি জানায় সংগঠনটি।

সনাতন পার্টির অন্য দাবিগুলোর মধ্যে আছে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহতদের পরিবারের একজন সদস্যকে যোগ্যতা অনুসারে সরকারি চাকরির ব্যবস্থা করা ও আহতদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া, ২০০১ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত সব সংখ্যালঘু নির্যাতনের পুনঃতদন্ত করে দোষীদের বিচারের আওতায় আনা, স্বাধীন পুলিশ কমিশন গঠন ও দায়িত্ব পালনকালে নিহত পুলিশ সদস্যদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ ও পরিবারের একজনকে যোগ্যতা অনুসারে সরকারি চাকরি দেওয়া, অর্পিত সম্পত্তি আইন বাতিল করে প্রকৃত মালিকদের কাছে সম্পত্তি হস্তান্তর, বাহাত্তরের সংবিধানে ফিরে যাওয়া, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা ও রাজনৈতিক প্রতিহিংসা বন্ধে স্থায়ী সমাধান খোঁজা এবং রাষ্ট্রীয় পদ্ধতির সংস্কার করে একটি বৈষম্যমুক্ত, অসাম্প্রদায়িক কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা।

সনাতন পার্টির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুমন কুমার রায় বলেন, দেশে কোনো মানুষের নিরাপত্তা নেই। এই অরাজকতা বন্ধ করে একটি বৈষম্যমুক্ত, অসাম্প্রদায়িক, সুখী, সমৃদ্ধ ও উন্নত বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন বন্ধে এগিয়ে আসতে হবে। নির্যাতন করে সংখ্যালঘুদের এই দেশ থেকে বিতাড়িত করা যাবে না। দেশ কারও বাপের না যে সংখ্যালঘুরা ভয়ে দেশ ছেড়ে চলে যাবে।

সনাতন পার্টির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অনুপ কুমার দত্ত বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কালিমালিপ্ত করার জন্য একটি গোষ্ঠী সংখ্যালঘু নির্যাতন করছে। অনতিবিলম্বে তাদের শক্ত হাতে দমন করতে হবে।