সুপ্রভাত বিনোদন ডেস্ক »
গৃহকর্মী নির্যাতন ও মাদক আইনের দুই মামলায় পুলিশের করা রিমান্ড আবেদন নাকচ করে ঢাকাই সিনেমার এক সময়ের নায়িকা সিমন হাসান একাকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
একার পক্ষে তার আইনজীবীর করা জামিন আবেদনও রোববার নাকচ করে দিয়েছেন ঢাকার মহানগর হাকিম মোহাম্মদ জসিম।
জরুরি সেবার হটলাইন ৯৯৯-এ গৃহকর্মী হাজেরার অভিযোগ পেয়ে শনিবার রাতে রাজধানীর রামপুরার বাসা থেকে একাকে গ্রেপ্তার করে হাতিরঝিল থানা পুলিশ।
থানার ওসি আব্দুর রশিদ সে সময় বলেন, “তিন মাস ধরে কাজ করলেও গৃহকর্মীকে কোনো বেতন দিচ্ছিলেন না একা। বকেয়া বেতন চাইলে তাকে মারধর করা হয় বলে হাজেরা অভিযোগ করেছেন। তার মাথায় জখমের চিহ্ন রয়েছে।”
একার বাসায় অভিযানে গিয়ে পুলিশ পাঁচটি ইয়াবা, ৫০ গ্রাম গাঁজা ও মদ উদ্ধার করেছে বলেও জানান ওসি।
পরে রাতেই একার বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন তার গৃহকর্মী হাজেরা। আর মাদক আইনে আরেকটি মামলা করে পুলিশ।
রোববার ওই দুই মামলায় তাকে আদালতে হাজির করে তিন দিন করে মোট ৬ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন হাতিরঝিল থানার উপপরিদর্শক মো. ফয়সাল। অন্যদিকে একার পক্ষে রিমান্ডের বিরোধিতা করার পাশাপাশি জামিন চেয়ে আবেদন করে তার আইনজীবী হুমায়ুন কবির।
শুনানিতে তিনি বলেন, “তিনি অসুস্থ, তিন মাস আগে তার একটি অপারেশন হয়েছে, তিনি শয্যাশায়ী। সেখান থেকেই তাকে নিয়ে আসা হয়েছে। তার মেডিকেল সার্টিফিকেট আছে।
“আর মাদক মামলাটি একটি বানানো মামলা, এটা স্পষ্ট। কারণ ওই রুমের চাবি গৃহকর্মী হাজেরার কাছেই থাকত।”
রাষ্ট্রপক্ষে জামিনের বিরোধিতা করে মহানগর আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর তাপস কুমার পাল শুনানিতে বলেন, “মামলার আসামি সিমন হাসান একা দুই মাসের বকেয়া বেতন ছয় হাজার টাকা না দিয়ে বাদীর বটি দিয়ে কোপ মেরেছেন। এছাড়া তার বাসা থেকে মাদক উদ্ধার হয়েছে। তিনি মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত।”
উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে বিচারক রিমান্ড ও জামিনের দুই আবেদনই নাকচ করে দেন এবং আসামি একাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
পুলিশ জানিয়েছে, গৃহকর্মী হাজেরাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তিন মাস আগে একার বাসায় কাজে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। তার গ্রামের বাড়ি শেরপুর সদরের হরিণধরা গ্রামে।
হাজেরার স্বামী রফিকুল সাংবাদিকদের বলেছেন, তিনি পেশায় একজন রিকশা চালক। তার স্ত্রী কয়েকটি বাসায় কাজ করেন। শনিবার সকালে একা ফোন দিয়ে তার স্ত্রীকে নির্ধারিত সময়ের আগেই যেতে বলেন এবং বাসা বদলানোর কারণে সারাদিন সেখানে থাকতে চাপ দেন।
কিন্তু হাজেরা তাতে রাজি না হয়ে বকেয়া বেতন দাবি করলে একা ‘তার মাথায় ও হাতে আঘাত করেন’ বলে রফিকুলের ভাষ্য।
নব্বইয়ের দশকের শেষভাগে চলচ্চিত্রে নাম লেখানো একা ৩০টিরও বেশি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। তবে গত প্রায় এক দশক ধরে তাকে আর সিনেমায় দেখা যায়নি।