নিজস্ব প্রতিবেদক »
ভারী গাড়ি চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে এখনই চালু করা যাবে বহদ্দারহাট ফ্লাইওভারের চান্দগাঁওমুখী র্যাম্প। তবে গত দুই দিন ধরে র্যাম্পের পিলারে যে ফাটলের কথা বলা হচ্ছিল তা ফাটল নয়, এটি মূলত কনস্ট্রাকশন জয়েন্ট। পিলারে কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু ফ্লাইওভার ও র্যাম্পের মধ্যে র্যাম্পটি প্রায় চার ইঞ্চি দেবে গেছে। এজন্য হালকা যান চলাচলের জন্য ফ্লাইওভার উন্মুক্ত করে দিয়ে আরো পরীক্ষা নিরীক্ষার প্রয়োজন রয়েছে।
গতকাল বহদ্দারহাট ফ্লাইওভার এলাকা পরিদর্শন শেষে পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের বিশেষজ্ঞরা একথা বলেন।
পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের বিশেষজ্ঞরা পরিদর্শন শেষে তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন, পিলারে কোনো ফাটল নেই। ম্যান লিফট দিয়ে উপরে উঠে স্টিল ব্রাশ দিয়ে যেখানে ফাটল হয়েছে বলা হচ্ছে সেখানে চেক করেছি। খালি চোখে নিচ থেকে তা ফাটল মনে হলেও বাস্তবে এটি কনস্ট্রাকশান জয়েন্ট। ঢালাইয়ের সময়ে এখানে ফোম দেয়া হয়েছিল। সেই ফোম এখনো পরিষ্কার করা হয়নি।
প্রতিবেদনে আরো উল্লেখ করা হয়, চান্দগাঁও আবাসিক প্রান্ত থেকে যে র্যাম্পটি এসে বহদ্দারহাট ফ্লাইওভারে একটু বেঁকে গিয়ে যুক্ত হয়েছে সেখানে কেন্টিলিভার স্প্যান ১৪ দশমিক ৩৪ মিটার দীর্ঘ। কেন্টিলিভারের স্প্যান অনেক দীর্ঘ, কিন্তু নিচে আরেকটি পিলার দেয়ার সুযোগ ছিল না। এই অংশে কেন্টিলিভারের মাথায় ১০০ মিলিমিটার (প্রায় চার ইঞ্চি) দেবে গেছে। এই র্যাম্পটি মূলত হালকা গাড়ি চলাচলের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। এজন্য ‘ভারী যানবাহন চলাচল নিষেধ’ বার লাগিয়ে দিতে হবে।
এদিকে গতকাল দুই দফায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের প্রকৌশলীগণ। পরিদর্শন টিমে ছিলেন পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ডিপিএমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুস সোবহান, ডিপিএমের পরিচালক শাহজাহান আলম, ডিপিএমের স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ার সামী মোহাম্মদ রেজা, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ম্যাক্সের প্রকল্প ব্যবস্থাপক মনির হোসেন এবং সিডিএ’র উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোরশেদুল হক।
এবিষয়ে জানতে চাইলে ম্যাক্সের প্রকল্প ব্যবস্থাপক মনির হোসেন বলেন, ‘ফ্লাইওভারের উচ্চতা নিয়ন্ত্রণ বার লাগিয়ে শিগগিরই চালু করে দেয়া হবে। হালকা যানবাহন চলাচলের উপযোগী করে ডিজাইন করা হয়েছিল এই র্যাম্পের। এতে আর ভারী যানবাহন চলাচল করতে পারবে না। তা সঠিকভাবে মেনে চলতে হবে।’
উল্লেখ্য, গত দুই দিন ধরে ফ্লাইওভারের পিলারে ফাটল দেখা দিয়েছে বলে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি প্রকাশের পর সিডিএ’র পক্ষ থেকে যান চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। নগরজুড়ে এটা নিয়ে আতঙ্কও দেখা দেয়। বহদ্দারহাট ফ্লাইওভার ২০১৩ সালে উদ্বোধন করা হলেও ২০১৭ সালের নভেম্বরে নতুন করে র্যাম্পটি সংযোজন করা হয়। ফ্লাইওভারের মূল নকশায় এই র্যাম্প ছিল না। এই র্যাম্প দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা ছিল। কিন্তু চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে লোহার বারটি তুলে দেয়া হলে সব যানবাহন চলাচল শুরু করে । আর এতেই বিপত্তি দেখা দেয়।