বাংলাদেশ আর্ট উইক আগস্টে চট্টগ্রাম, মুন্সীগঞ্জ এবং সিরাজগঞ্জে একটি সাম্প্রদায়িক, সহযোগিতামূলক এবং সমসাময়িক আর্ট প্রকল্প চালু করেছে যার নাম “শিকড়”। এটি বিএডব্লিউ এর বছরব্যাপী একটি ইভেন্ট। বাংলাদেশ আর্ট উইকের সব কার্যক্রম ফাউন্ডার নীহারিকা মমতাজ এবং কো- ফাউন্ডার পিএইচপি ফ্যমিলির ভাইস চেয়ারম্যন মোহাম্মদ মোহসিন এবং এটি তাদের সার্বিক তত্ত্বাবধান ও সহযোগিতায় পরিচালিত হয়।
বাংলাদেশ আর্ট উইক কর্তৃক পরিচালিত বার্ষিক আর্ট প্রকল্প-শিকড় বছরব্যাপী সকল শিল্পী, ডিজাইনার, লোক শিল্পী এবং স্বল্প আয়ের গ্রামীণ পরিবারের স্থানীয় শিল্পীদের জন্যে একটি বিশেষ সহযোগী প্লাটফর্ম হিসেবে কাজ করছে।
এই আর্ট প্রকল্পটি চট্টগ্রাম, মুন্সীগঞ্জ ও সিরাজগঞ্জের স্থানীয় শিল্পী ও কারিগরদের আর্থিক, সৃজনশীল এবং শিক্ষামূলক সহায়তা প্রদান করেছে। কোভিড-১৯ মহামারীর এই কঠিন সময়ে ক্ষতিগ্রস্ত সম্প্রদায় যেমন তাঁতী, কাঠমিস্ত্রি, বাঁশ মিস্ত্রি, জেলে, লোক গায়ক, লোক শিল্পী, কুমার, কামার এবং স্বর্নকার রা আমাদের ডিজাইনার ও শিল্পীদের সহযোগীতায় আর্ট প্রকল্পের মাধ্যমে সরাসরি উপকৃত হয়েছে।
বাংলাদেশ আর্ট উইক এর প্রতিষ্ঠাতা, নীহারিকা মমতাজ এর কিউরেশনে এই পুরো আর্ট প্রকল্পটি সজ্জিত হয়েছে। দুজন স্বনামধন্য শিল্পী – চট্টগ্রাম থেকে সঞ্জয় কুমার দাস এবং সিরাজগঞ্জ থেকে জাহাঙ্গীর আলম তাদের নিজস্ব স্থান থেকে নিজ নিজ প্রকল্পগুলোকে সমন্বয়ের মাধ্যমে অংশগ্রহণ করেছেন।
অংশগ্রহণকারী ডিজাইনার এবং শিল্পীরা হলেন ডিজাইনার নিহারিকা মমতাজ, শিল্পী প্রণব মিত্র চৌধুরী, শিল্পী শমভু আচার্য, শিল্পী সঞ্জয় দাস, শিল্পী জাহাঙ্গীর আলম, শিল্পী ফারজানা হক এবং সুফি ব্যান্ড আসওয়াদ
বিভিন্ন পেশার আর্টিসানরা হলেন:- তপন ঘোষ, চিনু পাল, খিতিশ পাল, দুলাল কান্তি দাশ, অনিল দাস, তপন দে, আবদুর রউফ, রতন কর্মকার, কণী কর্মকার, মোহাম্মদ ফরিদ, মোহাম্মদ রিয়াদ, সাদিকা আফরিন, ফজল মিয়া, মোহাম্মদ আবদুল্লাহ, তারা মিয়া, সেলিম মিয়া, মো. সাইফুল ইসলাম, মো. জাহাঙ্গীর আলম, মোঃ আবু সাইদ প্রামানিক, কাজী ইমাম হোসেন, মো. জসিম, মো. আব্দুল হালিম, রুহুল আমিন, জহিরুল ইসলাম, মোহাম্মদ আলী হায়দার।
চট্টগ্রাম এবং মুন্সীগঞ্জের সাম্প্রদায়িক শিল্প প্রকল্পটি তার ফলাফল স্বরুপ ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২১ পর্যন্ত একটি প্রদর্শনী শুরু হয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ চারুকলা ইন্সটিটিউট অব ফাইন আর্টস এ। এই প্রদর্শনীতে উইভিং আর্ট, হ্যান্ডলুম ফেব্রিক আর্ট, কাঠের শিল্প, টেরা-কোট্টা শিল্প, বাঁশ শিল্প এবং লোকগীতির মাধমে প্রস্তুত শিল্পকর্মগুলো প্রদর্শিত ও পরিবেশিত হবে।
এই প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ চট্টগ্রামের পরিচালক ড. সেলভাম থরেজ। তিনি উদ্বোধনকালে তার বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশ আর্ট উইক কাজ করছে আমি তার প্রশংসা করছি। তিনি কো- ফাউন্ডার পিএইচপি ফ্যমিলির ভাইস চেয়ারম্যন মোহাম্মদ মোহসিন এর উদ্দ্যেগের জন্য তাকে ধণ্যবাদ জানান। এ প্রকল্পের মাধ্যমে কোভিড-১৯ মহামারীর এই কঠিন সময়ে ক্ষতিগ্রস্ত সম্প্রদায় তাঁতী, কাঠমিস্ত্রি, জেলে, লোক গায়ক, লোক শিল্পী, কুমার, কামার এবং স্বর্নকাররা সরাসরি উপকৃত হচ্ছে এটা খুব ভাল কথা। তিনি চারুকলা ইনস্টিটিউটকে সহযোগীতার জন্য ধন্যবাদ জানান।
বাংলাদেশ আর্ট উইকের প্রতিষ্ঠাতা এবং কিউরেটর, নীহারিকা মমতাজ উল্লেখ করেন, এই বার্ষিক প্রকল্পটি কিউরেট করে আমি অত্যন্ত আনন্দিত কারণ কাজটি আমাকে সকল শিল্পীবৃন্দ এবং কলাকুশলীদের সাথে বৈচিত্রময় শিল্পকর্মের সমন্বয় করতে সুযোগ দিয়েছে। আমি মনে করি শিল্প জগৎ আরও বৈচিত্রময় হওয়া দরকার।
সহ-প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ মহসিন বলেন, গ্রামীণ শিল্পীদের সহযোগিতা ও তাদের সৃষ্ট কর্মকে বিশ্যব্যাপি ছড়িয়ে দিতে ইতোমধ্যে আমরা নানান কার্যক্রম গ্রহণ করেছি। বাংলার ঐতিহ্য লোক শিল্প ও শিল্পীদের সমসাময়িক চিন্তাচেতনা ও কৌশলসমূহকে যেভাবে বাংলাদেশ আর্ট উইক শিকড় শিরোনামে তুলে ধরার চেষ্টায় রত তা সত্যই প্রশংসনীয় বলে মনে করেন চারুকলা ইনিস্টিটিউট অব ফাইন আর্টস’র পরিচালক প্রণব মিত্র। তিনি বলেন, এ প্রচেষ্টা অব্যহত থাকলে আমাদের শিল্পের প্রকৃত স্বরূপ আত্ম পরিচয় খুঁজে পাওয়া সম্ভব।