চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল দক্ষিণ-পূর্ব বাংলাদেশের কোটি মানুষের স্বাস্থ্যসেবার অন্যতম প্রধান কেন্দ্র। তবে, জীবন-মরণ সমস্যা, অর্থাৎ হৃদরোগের চিকিৎসার ক্ষেত্রে এই হাসপাতালটির অবকাঠামো ও সুবিধা এখনও অত্যন্ত সীমিত, যা বিশাল জনগোষ্ঠীকে সংকটে ফেলছে।
বর্তমানে হৃদরোগের প্রকোপ বাড়লেও, চমেক-এর হৃদরোগ (কার্ডিওলজি) বিভাগে সেই অনুপাতে শয্যা, সরঞ্জাম বা জনবল নেই। ক্যাথ ল্যাব প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম। ফলে জরুরি রোগীদেরও দীর্ঘ অপেক্ষার সম্মুখীন হতে হয়, যা অনেক ক্ষেত্রেই জীবনহানির কারণ হয়। আবার, শয্যার অভাবে গুরুতর অসুস্থ রোগীরা মেঝেতে চিকিৎসা নিতে বাধ্য হন, যা তাদের আরোগ্যের পথে বড় বাধা।
এই সীমিত সুবিধার কারণে সাধারণ মানুষ বাধ্য হয়ে বেসরকারি হাসপাতালে ছুটছেন, যেখানে চিকিৎসার খরচ নিম্নবিত্ত বা মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে। উন্নত চিকিৎসার অভাবে বহু মানুষ মারা যাচ্ছেন।
চমেক হাসপাতালকে এই অঞ্চলের হৃদরোগ চিকিৎসার মানদণ্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে হলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, কমপক্ষে দুটি অতিরিক্ত ক্যাথ ল্যাব স্থাপন করে ২৪/৭ পরিষেবা নিশ্চিত করা।
হৃদরোগ বিভাগের শয্যা সংখ্যা বৃদ্ধি করে আধুনিক সিসিইউ প্রতিষ্ঠা করতে হবে। প্রশিক্ষিত কার্ডিয়াক টেকনিশিয়ান এবং বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের শূন্য পদ পূরণ করতে হবে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জোরালো দাবি, চমেক হাসপাতালের হৃদরোগ বিভাগের সক্ষমতা অবিলম্বে বৃদ্ধি করা হোক। একটি আধুনিক ও সম্প্রসারিত হৃদরোগ বিভাগ এই অঞ্চলের মানুষের জীবন রক্ষা ও সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করার চাবিকাঠি। চমেককে কেবল একটি চিকিৎসাকেন্দ্র নয়, এই অঞ্চলের জীবন-রক্ষার নির্ভরতার প্রতীক হিসেবে গড়ে তোলা এখন সময়ের দাবি।
মতামত সম্পাদকীয়




















































