চবি সংবাদদাতা »
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) শাখা ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের পর আবাসিক হলে অভিযান চালিয়ে দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। শাহ আমানত হল ও সোহরাওয়ার্দী হলে এ অভিযান চালানো হয়।
বুধবার দিবাগত রাত বারোটা থেকে পুলিশের সহায়তায় এ অভিযান পরিচালনা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি। আড়াই ঘণ্টাব্যাপী এ অভিযানে রামদা, কিরিচ, গুলতি, কাচের বোতল, খালি মদের বোতল ও রডসহ বিভিন্ন প্রকার দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। এর আগে পূর্ব ঘটনার জেরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা ছাত্রলীগের দুই গ্রুপ বিজয় ও সিওফসির মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়।
সন্ধ্যা সাতটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রব হলের ঝুপড়িতে বিজয়ের এক কর্মীকে মারধরের জেরে প্রথম দফা সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। পরে সোহরাওয়ার্দী হল ও শাহ আমানত হলে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। এছাড়াও রাত সোয়া নয়টার সময় শুরু হয় ২য় দফা সংঘর্ষ। এ সময় বেশকয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হলেও গুরুতর আহত হওয়ার খবর পাওয়া যায় নি।
জানা গেছে, মাহমুদুল হাসান রুপক নামে বিজয় গ্রুপের সিনিয়র এক কর্মী বিশ্ববিদ্যালয়ের রব হলের ঝুপড়িতে নাস্তা করতে গেলে সেখানে থাকা সিএফসি কর্মীরা তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে উভয় গ্রুপের কর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় সিএফসি কর্মীরা শাহ আমানত হল এবং বিজয় কর্মীরা সোহরাওয়ার্দী হল মোড়ে অবস্থান নেয়। এ সময় উভয় গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া পালটা ধাওয়া ও ইট পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ এবং প্রক্টরিয়াল বডি ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
পরবর্তীতে শহর থেকে ছেড়ে আসা রাত সাড়ে আটটার শাটল রাত সোয়া নয়টায় বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশনে এসে পৌঁছালে সেখানে অনিক হোসাইন রিফাত নামে এক সিএফসি কর্মীকে মারধর করে বিজয় কর্মীরা। এ ঘটনার জেরে দুই হলের মধ্যে পুনরায় সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। পরে পুলিশ ও প্রক্টরিয়াল বডির হস্তক্ষেপে উভয় গ্রুপকে নিজ নিজ হলে ঢুকিয়ে দেয়া হয়।
এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ ইলিয়াস ও বিজয় গ্রুপের নেতা বলেন, সিএফসির নেতা বিতর্কিত সভাপতি রুবেল পূর্ণাঙ্গ কমিটি না দেয়ার জন্য শুরু থেকেই পাঁয়তারা করতেছে। সে ইচ্ছে করেই বারবার ক্যাম্পাসে অরাজকতা সৃষ্টি করছে। সে অর্থনীতি বিভাগের কনসার্টেও আমার কর্মীদের উপর হামলা চালায়। এছাড়া তার নেতৃত্বেই রব হলের ঝুপড়ি আমাদের সিনিয়র কর্মীকে মারধর করেছে।
অপরদিকে নিজেকে সিএফসি গ্রুপের নেতা নয় বলে দাবি করেছেন শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক রুবেল। তিনি বলেন, আমি ছাত্রলীগের সভাপতি। কোনো বগিভিত্তিক গ্রুপের নেতা নই। বগিভিত্তিক গ্রুপের অপকর্মের দায়ভার ছাত্রলীগে নিবে না।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভূঁইয়া বলেন, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছিল। পুলিশের সহায়তায় আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি।
তিনি আরো বলেন, এ ঘটনায় শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে আমরা দুটি হলে তল্লাশি চালাই। তল্লাশিতে পুলিশ আমাদের সহায়তা করেছে। এসময় আমরা দুই হল থেকে রামদা, কিরিচ, গুলতি, কাচের বোতল, ও রডসহ বিভিন্ন প্রকার দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করি।