চট্টগ্রামে প্রথমবারের মতো শনাক্ত হয়েছে মশাবাহিত রোগ জিকা ভাইরাস। গত সোমবার রাতে বেসরকারি একটি ল্যাবে দুজনের শরীরে এ ভাইরাস শনাক্ত করা হয়। এটি নিশ্চয়ই দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে উঠেছে স্বাস্থ্য বিভাগের জন্য।
এ বিষয়ে অবগত করতে গতকাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালককে (রোগ নিয়ন্ত্রণ) চিঠি দিয়েছে চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয়।
আক্রান্তদের ব্যাপারে আরও নিশ্চিত হওয়ার জন্য নমুনা নিয়ে আবার পরীক্ষা করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্র জানায়, সোমবার চট্টগ্রামের এপিক হেলথ কেয়ার ল্যাবে রক্তের নমুনা পরীক্ষায় দুজনের শরীরে জিকা ভাইরাস শনাক্ত হয়। দুজনেরই বয়স ৪২। আক্রান্ত পুরুষের উপসর্গ আছে- জ্বর, শরীর ব্যথা ও শরীর লালচে হওয়া এবং মহিলার উপসর্গের মধ্যে আছে জ্বর, হাত-পা ব্যথা ও ফুলে যাওয়া।
জানা গেছে, বর্তমানে তারা চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে নিজেদের বাসায় সুস্থ আছেন।
চট্টগ্রামের ডেপুটি সিভিল সার্জন বলেন, ল্যাবে একটি কম্বাইন কিটের মাধ্যমে পরীক্ষা করা হয়েছে, যা একাধিক ভাইরাস শনাক্তে ব্যবহার হয়। চূড়ান্ত নিশ্চিতকরণে আরও পরীক্ষা প্রয়োজন। তাই আমরা আইএইচআর রিপোর্টসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক বরাবর ল্যাব রিপোর্ট ও কিট তথ্য পাঠিয়েছি।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার (রোগ ও নিয়ন্ত্রণ) বলেন, চূড়ান্ত শনাক্তকরণে ওই দুজন থেকে আবারও নমুনা নিয়ে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। আন্তর্জাতিক প্রটোকল অনুসরণ করে রোগটা শনাক্ত করতে হয়।
ইউএসটিসির মেডিসিন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোহাম্মদ জাবেদ বলেন, জিকা ভাইরাস শনাক্ত হওয়া একটা অ্যালার্মিং। এ রোগ নিয়ন্ত্রণে প্রধান কাজ হলো মশা নিয়ন্ত্রণ করা। চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, জিকার সুনির্দিষ্ট কোনো চিকিৎসা নেই, এর চিকিৎসা উপসর্গভিত্তিক। আক্রান্ত ব্যক্তিকে বিশ্রাম নিতে হবে, প্রচুর পানি ও তরল জাতীয় খাবার খেতে হবে, জ্বর ও ব্যথার জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ মতো ওষুধ খেতে হবে।
জানা গেছ, বাংলাদেশে প্রথম জিকা ভাইরাস শনাক্ত হয় ২০১৪ সালে। তবে এবারই প্রথম চট্টগ্রামে এই রোগ শনাক্ত হলো, যা স্থানীয়ভাবে জনস্বাস্থ্য সতর্কতার বিষয় হয়ে উঠেছে। জনসাধারণকে মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে সচেতন থাকার আহ্বান জানিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ।
বিশেষতরা বলছেন, ডেঙ্গু, চিকনগুনিয়া ও জিকো ভাইরাসের প্রধান বাহক মশা। আপাতত এই তিনটি রোগকে প্রতিহত করতে হলে মশার বংশ বৃদ্ধি ঠেকাতে হবে। আর এ কাজের ভার চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের। আমরা দাবি জানাব চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন অতি দ্রুত মশকনিধন কার্যক্রম জোরদার করে নহরবাসীকে একটি বাসযোগ্য আধুনিক নগরী উপহার দেবে।