চট্টগ্রামে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ : জনসচেতনতা জরুরি

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, সম্প্রতি ওমিক্রনের কয়েকটি নতুন সাব-ভ্যারিয়েন্ট—এলএফ.৭, এক্সএফজি, জেএন-১ এবং এনবি ১.৮.১—এর সংক্রমণ বিভিন্ন দেশে দ্রুত হারে বাড়ছে। আন্তর্জাতিক ভ্রমণকারীদের মাধ্যমে এই ভ্যারিয়েন্টগুলো বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে ভারতসহ আশপাশের কয়েকটি দেশে সংক্রমণ বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ইতোমধ্যে সতর্কতা জারি করেছে। সেই সঙ্গে প্রয়োজন ছাড়া এসব দেশে ভ্রমণ না করার নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে যেসব বিদেশি যাত্রী বাংলাদেশে প্রবেশ করছেন, তাদেরও স্ক্রিনিংয়ের আওতায় আনা হচ্ছে।
উদ্বেগের বিষয় যে, ঢাকার পর চট্টগ্রামেও নতুন করে করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত জানা গেছে, জেলায় তিনজন রোগী শনাক্ত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা সিভিল সার্জন জাহাঙ্গীর আলম। সংক্রমণ ঠেকাতে আবার মাস্ক পরা, ভিড় এড়িয়ে চলাসহ নানা পরামর্শ দিচ্ছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরও।
জেলা সিভিল সার্জন জানান, গত মঙ্গলবার জানান সেদিন চট্টগ্রামের একটি বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এক রোগীর শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এর আগে মা ও শিশু হাসপাতালে আরও দুজন রোগী শনাক্ত হওয়ার খবর পাওয়া গিয়েছিল।
অবশ্য স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, করোনা মোকাবিলায় নতুন করে প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। আইসোলেশন হাসপাতাল নির্ধারণসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর চট্টগ্রামে এটি প্রথম করোনা রোগী শনাক্তের ঘটনা। এর আগে শেষ কবে করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছিল, সে সম্পর্কে নির্দিষ্ট কোনো তথ্য এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।
পত্রিকার খবরে জানা গেছে, চট্টগ্রামে কোভিড শনাক্ত করার কিটের সংকট রয়েছে। সরকারি আরটি-পিসিআর ল্যাবে এখন কিট নেই। শনাক্তের কিট কেবল বেসরকারি হাসপাতালগুলোয় রয়েছে।
এর আগে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, বাংলাদেশে কোভিড-১৯–এর নতুন ধরন ছড়াচ্ছে। ভারতের এনবি ১.৮.১ নামের নতুন ধরনটিও ছড়িয়ে পড়ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) গত ২৩ মে দেওয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, এনবি ১.৮.১ ধরনটির সংক্রমণের হার তুলনামূলক বেশি এবং এটি দ্রুত ছড়াচ্ছে।
এখন আগের মতো আবার সতর্কতা জরুরি হয়ে পড়েছে। মনে রাখতে হবে চিকিৎসার চেয়ে প্রতিরোধ অনেক বেশি কার্যকর পন্থা। এ নিয়মগুলো অনুসরণ করে আমরা করোনাকে প্রতিরোধ করতে পারি।
১. সাতবার প্রয়োজনমতো সাবান দিয়ে হাত ধোয়া (অন্তত ২৩ সেকেন্ড) । ২. নাক-মুখ ঢাকার জন্য মাস্ক ব্যবহার করা। ৩. আক্রান্ত ব্যক্তি থেকে কমপক্ষে ৩ ফুট দূরে থাকতে হবে। ৪. অপরিষ্কার হাতে চোখ, নাক ও মুখ স্পর্শ করবেন না। ৫. হাঁচি-কাশির সময় বাহু বা টিস্যু বা কাপড় দিয়ে নাক-মুখ ঢেকে রাখুন।
সন্দেহভাজনদের ক্ষেত্রে করণীয়
• অসুস্থ হলে ঘরে থাকুন। • মারাত্মক অসুস্থ হলে কাছের হাসপাতালে যোগাযোগ করুন।• রোগীর নাক-মুখ ঢাকার জন্য মাস্ক ব্যবহার করতে বলুন।