নিজস্ব প্রতিবেদক »
চট্টগ্রাম ষড়যন্ত্র মামলার অন্যতম অভিযুক্ত দীপেশ চৌধুরী গত ২৮ নভেম্বর রাতে নগরীর একটি ক্লিনিকে মৃত্যুবরণ করেছেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮২ বছর। রাতেই বলুয়ারদীঘি মহাশ্মশানে শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।
১৯৭৫ সালে দেশের বিভিন্ন জায়গায় বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে বিচ্ছিন্নভাবে অনেক প্রতিবাদ এবং সংগঠিত প্রতিরোধের চেষ্টা হয়েছিল। এর মধ্যে চট্টগ্রামের প্রতিবাদ ও প্রতিরোধকে তৎকালীন সরকার ‘চট্টগ্রাম ষড়যন্ত্র’ হিসেবে বর্ণনা করেছিল।
মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মৌলভী সৈয়দ, তৎকালীন ছাত্রনেতা মহিউদ্দিন চৌধুরী (পরবর্তীতে চট্টগ্রামের মেয়র) এবং পরবর্তীকালে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা হওয়া এস.এম. ইউসুফ তাদের অনুসারীদের নিয়ে প্রতিরোধ প্রক্রিয়া শুরু করেছিলেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার প্রতিবাদে আন্দোলন গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন তারা। ভারতে তখন ইন্দিরা গান্ধী সরকারের পতন হওয়ায় কাজটি নিয়ে তারা আর এগুতে পারেননি। এরপর মোরারজি দেশাইয়ের নেতৃত্বে ভারতে নতুন সরকার গঠন হওয়ার পর চট্টগ্রাম ষড়যন্ত্র মামলার শীর্ষ আসামীদের আশ্রয় দিতে অস্বীকৃতি জানায় ভারত।
মৌলভি সৈয়দ তার সহযোগী দীপেশ চৌধুরী, শিশির দত্তসহ আরো কয়েকজনকে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে পুশ ব্যাক করানো হয়। সেনাবাহিনীর ইন্টারোগেশন সেলে নির্যাতনে মৃত্যুবরণ করেন মৌলভি সৈয়দ।
দীপেশ চৌধুরীসহ অন্যদের কারাগারে পাঠানো হয়। দু’বছরেরও বেশি সময় তিনি কারাগারে ছিলেন। বিদ্যুত উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা দীপেশ চৌধুরী বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ ও প্রতিরোধের অংশ হিসেবে চট্টগ্রাম নগরীর অপারেশনে সহযোগী হিসাবে কাজ করেছেন। বিদ্যুত বিভাগে থেকে অপারেশনের স্থানগুলো তিনি ব্ল্যাক আউট করে রাখতেন। পরে তাকে চাকুরিচ্যুত করা হয়।
দীপেশ চৌধুরী দুই পুত্র ও তিন কন্যা সন্তানের জনক। বড় ছেলে শিশু সাহিত্যিক সুব্রত চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী ও ছোট ছেলে কানাডা প্রবাসী ।
দীপেশ চৌধুরীর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন, মহানগর যুব লীগের সভাপতি মাহবুবুল হক সুমন, সাধারণ সম্পাদক দিদারুল আলম ও আলকরন ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি রুহুল আমিন তপন।