জেএসসি-এসএসসিতে জিপিএ-৫ না পেয়েও ১২৯৯ জন জিপিএ-৫ পেল
জেএসসি-এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়েও এবার জিপিএ-৫ পায়নি ৫০ জন
ফলাফল রিভিউয়ের সুযোগ ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত
ভূঁইয়া নজরুল <
দেশের ১১ শিক্ষাবোর্ডে এইচএসসিতে ২০১৯ সালে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৪৭ হাজার ২৮৬ জন। প্রকাশিত ফলাফলে (২০২০ সালে) এই সংখ্যা ১ লাখ ৬১ হাজার ৮০৭ জনে উন্নীত হয়েছে। সারাদেশে প্রায় তিনগুণের বেশি শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেলেও চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডে এ হার চারগুণের বেশি। চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডে গত বছর ২ হাজার ৮৬০ জন জিপিএ-৫ পেলেও এবার তা বেড়ে হয়েছে ১২ হাজার ১৪৩ জন। সাবজেক্ট ম্যাপিংও কপাল খুললো শিক্ষার্থীদের।
এতো বেশি জিপিএ-৫ পেলেও করোনাকালীন সময়ে কলেজগুলো বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের উল্লাস দেখা যায়নি।
ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজ থেকে এবারের পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে আনুশকা মেহজাবীন। বর্তমানে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনে ভর্তি হওয়া এই আনুশকা এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেলেও জেএসসিতে পেয়েছিল ৪ দশমিক ৮। এবারের ফলাফল তৈরিতে এসএসসি থেকে ৭৫ শতাংশ এবং জেএসসি থেকে ২৫ শতাংশ বিষয়ভিত্তিক নম্বর নেওয়া হয়েছিল। এতে দেখা গেছে জেএসসি বা এসএসসিতে জিপিএ-৫ না পেয়েও অনেকে এবার জিপিএ পেয়েছে। চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের পরিসংখ্যান অনুযায়ী জেএসসি ও এসএসসিতে জিপিএ-৫ না পেয়েও এইচএসসিতে এসে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ হাজার ২৯৯ জন। এতেই কি এবারের জিপিএ-৫ বেড়ে যাওয়া?
এই প্রশ্নের উত্তর জানতে বিভিন্ন শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, এবারের ফলাফল তৈরিতে জেএসসি ও এসএসসির প্রধান বিষয়গুলোর প্রাপ্ত নম্বরকে অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে। এতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে জিপিএ-৫ বেড়ে গেছে। এ বিষয়ে যশোর শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর মাধব চন্দ্র রুদ্র বলেন, এইচএসসির অনেক বিষয় জেএসসি ও এসএসসিতে ছিল না। আবার অনেকে বিভাগ পরিবর্তন করেছে। সেক্ষেত্রে জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষার প্রধান বিষয়গুলোকে প্রাধান্য দিয়ে ফলাফল তৈরি করা হয়েছে। এতে সামগ্রিকভাবে সারাদেশেই জিপিএ-৫ বেড়েছে।
জিপিএ-৫ বেড়ে যাওয়া বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে জিপিএ-৫ পাওয়ার হার অতীতে সবচেয়ে কম ছিল। সাধারণত বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীদের মধ্যে এই হার বেশি থাকে। এবারের ফলাফলে দেখা যায়, চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডে ৫২৫ জন শিক্ষার্থী মানবিক বিভাগে জিপিএ-৫ পেয়েছে, গত বছর এই সংখ্যা ছিল ১২৯ এবং ২০১৮ সালে ছিল ৭৩ জন। একইচিত্র দেখা যায়, ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগেও। এই বিভাগে এবার জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ হাজার ৫৭৫ জন। গতবছর এই সংখ্যা ছিল ৪৭৩ জন এবং ২০১৮ সালে ছিল ৩৫৩ জন। বিজ্ঞান বিভাবে সবসময় জিপিএ-৫ বেশি পেয়ে আসছে। সেই ধারাবাহিকতায় এবার জিপিএ-৫ পেয়েছে ১০ হাজার ৪৩ জন। গতবছর এই সংখ্যা ছিল ২ হাজার ২৫৮ জন এবং ২০১৮ সালে ছিল ১ হাজার ১৮৭ জন। জিপিএ-৫ বেড়ে যাওয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক নারায়ন চন্দ্র নাথ বলেন, সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে এবারের ফলাফল তৈরি করা হয়েছে। এতে জেএসসি ও এসএসসির বিষয়ভিত্তিক প্রাপ্ত নম্বর বিবেচনায় এনে করা হয়েছে। তাই জিপিএ-৫ এর সংখ্যা বেশি।
কিন্তু এতো বেশি কেন? এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,‘ জেএসসি ও এসএসসিতে অনেক শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ এর কাছাকাছি পয়েন্ট পেয়েছিল অর্থাৎ অল্পের জন্য তারা জিপিএ-৫ মিস করেছিল। এবারের সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ে এমন শিক্ষার্থীরা জিপিএ-৫ পেয়ে গেছে। পুরো পদ্ধতি গাণিতিক সূত্রের মাধ্যমে করা হয়েছে।’
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জেএসসি ও এসএসসিতে জিপিএ-৫ পাওয়ার পরও ৫০ জন শিক্ষার্থী এইচএসসিতে এসে জিপিএ-৫ পায়নি।
কেন পায়নি এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের কারণে। হয়তো তারা জেএসসি ও এসএসসিতে প্রধান বিষয়গুলোতে নম্বর কম পেয়েছিল কিংবা চতুর্থ বিষয়ের সুবিধায় অনেকে জিপিএ-৫ পেয়েছিল। এখন সাবজেক্ট ম্যাপিং করার পর তারা জিপিএ-৫ পায়নি।
এদিকে এবার চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের ২৬৫টি কলেজের ৯৭ হাজার ৯৬৭ জন শিক্ষার্থী ১০৭টি কেন্দ্রে পরীক্ষা দেয়ার কথা ছিল। করোনা পরিস্থিতির কারণে গত এপ্রিলে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত না হওয়া বিশেষ আইনের মাধ্যমে পরীক্ষা ছাড়া ফলাফল তৈরির ক্ষমতা পায় শিক্ষাবোর্ডগুলো। আর সেই আলোকে সকল শিক্ষার্থীকে উত্তীর্ণ গণ্য করা হয়।
ফলাফল রিভিউয়ের সুযোগও থাকছে
প্রতিবছর পাবলিক পরীক্ষায় পুনঃনিরীক্ষণের সুযোগ থাকে। এবারো সেই সুযোগ রেখেছে শিক্ষাবোর্ডগুলো। তবে এবার পুনঃনিরীক্ষণ না বলে বলা হচ্ছে রিভিউ। আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এই রিভিওর সুযোগ পাবে শিক্ষার্থীরা। রিভিউ করার জন্য টেলিটক মোবাইলে ফি পরিশোধ করে মেসেজ অপসনে গিয়ে জঊঠ►ঝঢ়ধপব►ঈঐও► ঝঢ়ধপব►জঙখখ লিখে ১৬২২২ নম্বরে সেন্ড করতে হবে। ফিরতি এসএমএসে আবেদন বাবদ কতটাকা কাটা হবে হানিয়ে একটি পিন নম্বর দেয়া হবে। সেই পিন নম্বর পাওয়ার পর জঊঠ►ঝঢ়ধপব►ণঊঝ► ঝঢ়ধপব►চরহ ঘঁসনবৎ►ঈড়হঃধপঃ হড়. লিখে ১৬২২২ নম্বরে সেন্ড করতে হবে। শিক্ষার্থী প্রতি আবেদন ফি ১২৫ টাকা প্রয়োজন হবে।