মহাসড়কে একটি সিএনজি অটোরিকশা, চালকের আসনে আছেন চালক, সে গাড়িটি জ্বলছে সঙ্গে চালকও জ্বলছে কিন্তু কারো কিছু করার নেই। ফলে সিএনজিচালিত অটোরিকশা পুড়ে ছাই হলো, অঙ্গার হয়ে গেল একটি জলজ্যান্ত মানুষ।
সোমবার বিকালে উপজেলার গাছবাড়িয়া এলাকায় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত চালকের নাম আবদুস সবুর আলী (৩৭), সাতকানিয়া উপজেলার পশ্চিম ঢেমশা এলাকায় তার বাড়ি। চন্দনাইশ থানার ওসি ওবায়দুল ইসলামের বরাতে জানা গেছে, অটোরিকশাটিতে কোনো যাত্রী ছিল না।
সাংবাদিকদের তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে জেনেছি একটি বালুর ট্রাক অটোরিকশাটিকে পেছন থেকে ধাক্কা দিলে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়ে আগুন লেগে যায়। আমরা একটি ট্রাকের নম্বর পেয়েছি। তবে কোনো ট্রাক ঘটনাস্থলে পাওয়া যায়নি।
ঢাকার ধামরাই উপজেলায় গ্যাসের লিকেজ থেকে বিস্ফোরণে একই পরিবারের চারজন দগ্ধ হয়েছেন। মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে ধামরাই পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের মোকামটোলা এলাকায় ইব্রাহিম হোসেনের চারতলা ভবনের নিচতলার একটি ফ্ল্যাটে এ ঘটনা ঘটে। গুরুতর অবস্থায় দগ্ধ চারজনকে উদ্ধার করে ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়।
দুর্ঘটনা দুটি দুদিনে ভিন্নভাবে হলেও দুর্ঘটনার কারণ অভিন্ন। অর্থাৎ গ্যাসের কারণে এমন দুর্ঘটনা ঘটেছে। একটি সিলিন্ডার বিস্ফোরণে অন্যটি গ্যাস লিকেজের কারণে। আর এখন এটাই দেশে দুর্ঘটনা ও অপমৃত্যুর অন্যতম কারণ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের হিসাব বলছে, গত বছর চুলার গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে ২১০টি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। ২০২২ সালে তা ছিল ৯৪টি। এসব ঘটনায় হতাহতের পাশাপাশি মূল্যবান মালামালেরও ক্ষতি হয়। এর আগের বছরগুলোতেও এ পরিসংখ্যান ছিল উদ্বেগজনক। এ বছর ২৯ ফেব্রুয়ারিতে রাজধানীর বেইলি রোডে ৪৬ জন মৃত্যুর ঘটনায় আবার নড়ে চড়ে বসেছে সবাই। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, কারিগরি ত্রুটি, অসচেতনতা ও অসতর্কতার ফলে সিলিন্ডার দুর্ঘটনা ঘটছে। দিনে দিনে তা বেড়েই চলেছে। রান্নার কাজকে সহজ করতে নিয়ে আসা সিলিন্ডার যেন মৃত্যুদূতে পরিণত হচ্ছে। তাই গ্যাসসংক্রান্ত দুর্ঘটনা প্রতিরোধে সবাইকে সচেতন হতে হবে।
একসময় পরিবেশ দূষণ কমাতে ২০০০ সালে দেশে যানবাহনে গ্যাসের ব্যবহার এবং রান্নার কাজে তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) ব্যবহার শুরু হয় ২০০৫ সালের দিকে।
পরিসংখ্যান বলছে, বর্তমানে দেশে ৬০ লাখের বেশি এলপিজি ব্যবহারকারী রয়েছেন। আর এলপিজি সিলিন্ডার সংখ্যা প্রায় সাড়ে তিন কোটি।
কিন্তু এসব সিলিন্ডারের মধ্যে কতগুলো নিরাপদ আছে তার কোনো পরিসংখ্যান কারো কাছে নেই। তেমনি করে পাইপলাইন ও গ্যাস সংযোগ কতটা নিরাপদ বা ঝুঁকিহীন আছে তার পরিসংখ্যানও নেই কারো হাতে। ফলে ভয়ংকর বিপদ নিয়ে আমরা বসবাস করছি। যেকোনো সময় এ দুটি কারণ আমাদের অনেকের করুণতম মৃত্যুর কারণ হতে পারে।
এ মুহূর্তের সংবাদ