সুপ্রভাত ডেস্ক »
মিরসরাইয়ে খৈয়াছড়া ঝর্ণা লেভেল ক্রসিংয়ে মাইক্রোবাসে ট্রেনের ধাক্কায় ১১ জনের মৃত্যুর ঘটনায় গেটম্যান ও মাইক্রোবাসের চালকের দায় পেয়েছে রেলওয়ের তদন্ত কমিটি। পূর্ব রেলের ডিটিও আনসার আলীকে প্রধান করে গঠিত ওই তদন্ত কমিটি মঙ্গলবার বিভাগীয় রেলওয়ে ম্যানেজার (ডিআরএম) আবুল কালাম চৌধুরীর কাছে প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। খবর বিডিনিউজের।
আবুল কালাম বুধবার বলেন, ‘প্রতিবেদন দেখেছি। তাতে খৈয়াছড়া ঝর্না ক্রসিংয়ের গেইটম্যান সাদ্দাম হোসেন এবং মাইক্রাবাসের চালক গোলাম মোস্তফার দায় ছিল বলে উল্লেখ করা হয়েছে।’
মাইক্রোবাসের চালক গোলাম মোস্তফা ঘটনাস্থলেই নিহত হন। আর গেটম্যান সাদ্দাম বর্তমানে কারাগারে আছেন।
২৯ জুলাই দুপুরে বড়তাকিয়া রেল স্টেশনের কাছে খৈয়াছড়া ঝর্না রেল ক্রসিংয়ে চট্টগ্রামমুখী মহানগর প্রভাতী ট্রেনের ধাক্কায় একটি মাইক্রোবাস দুমড়ে মুচড়ে যায়।
মাইক্রোবাসটিতে হাটহাজারীর আরএনজে কোচিং সেন্টারের ছাত্র ও শিক্ষকরা ছিলেন; ট্রেনের ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই চালকসহ মোট ১১ জনের প্রাণ যায়। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও দুইজনের মৃত্যু হয়।
পূর্ব রেলের ডিআরএম আবুল কালাম বলেন, ‘দুর্ঘটনার আগে গেইটম্যান ক্রসিংয়ের বার ফেললেও সেখানে উপস্থিত ছিলেন না। অন্যদিকে মাইক্রোবাস চালক বার তুলে গাড়ি নিয়ে লাইনে উঠে যান বলে জেনেছি। লাইনে ওঠার পর মাইক্রোবাসের স্টার্ট বন্ধ হয়ে গেলে দুর্ঘটনা ঘটে।’
তিনি বলেন, ‘লাইনের ওপর গাড়ি উঠার পর ট্রেন আসতে দেখে সম্ভবত চালক নার্ভাস হয়ে যান। তাই গাড়ি নিয়ে পার হতে পারেননি। তদন্ত কমিটি তাদের প্রতিবেদনে কিছু সুপারিশও করেছে।
ওই দুর্ঘটনায় হতাহত সবাই হাটহাজারী উপজেলার আমান বাজারের খন্দকিয়া এলাকা থেকে পিকনিক করতে খৈয়াছড়া ঝর্ণায় গিয়েছিলেন। চালক-হেলপারসহ সেখানে মোট ১৭ জন ছিলেন। ঝর্ণা থেকে ফেরার সময় তারা দুর্ঘটনায় পড়েন।
ওইদিন বিকালে রেলওয়ে পুলিশ গেইটম্যান সাদ্দামকে গ্রেফতার করে। পরে তাকে আসামি করে পুলিশের পক্ষ থেকে একটি মামলা করা হয়।
রেল কর্তৃপক্ষ সে সময় বলেছিল, খৈয়াছড়া ক্রসিংয়ের দায়িত্ব পালনরত গেইটম্যান সাদ্দাম হোসেন অস্থায়ী ভিত্তিতেই কাজ করতেন।
পূর্ব রেলের জিএম জাহাঙ্গীর হোসেন সে সময় গেইটম্যান সাদ্দামের বরাতে বলেছিলেন, দুর্ঘটনার সময় গেইটম্যান সেখানে উপস্থিত ছিলেন এবং মাইক্রোবাস চালক জোর করে বার তুলে সেখানে উঠে পড়েন।
তবে সেসময় রেলওয়ে পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন গেইটম্যানের ঘটনাস্থলে থাকা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন।
দুর্ঘটনার পর রেলওয়ের পক্ষ থেকে দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তার মধ্যে ডিটিও আনসার আলীকে প্রধান করে করা পাঁচ সদস্যের কমিটি তাদের প্রতিবেদন দিয়েছেন।
অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আরমান হোসেনকে প্রধান করে গঠিত অপর তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন এখনও জমা পড়েনি।