তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। প্রচ- গরমে জনজীবন বিপর্যস্ত। গ্রীষ্মের গরম রীতিমতো দুর্যোগে রূপ নিচ্ছে। গ্রীষ্মকাল বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। এই মৌসুমে উষ্ণতম দিনের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। এর মধ্যে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব এলাকায় তাপমাত্রা বেড়েছে সবচেয়ে বেশি।
কোনো এলাকার তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে এবং তা যদি ছয় ঘণ্টা স্থায়ী হয়, তবে এমন অবস্থাকে অতি উষ্ণ তাপমাত্রা বলা হয়। গোটা বিশ্বের গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণেও তাপের তীব্রতা মারাত্মকভাবে বেড়েছে। গ্রীষ্মকালীন অতিরিক্ত উষ্ণতা আমাদের জন্য একটি দীর্ঘমেয়াদি দুর্যোগে পরিণত হতে যাচ্ছে।
আরও অন্তত দুই দিন এমন গরম চলতে থাকবে। আর তাপপ্রবাহের পরিধি বিস্তৃত হতে পারে। এমন গরমের মধ্যেই আবার বঙ্গোপসাগরে দেখা দিয়েছে লঘুচাপ। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া লঘুচাপ আজকের মধ্যে নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। দুএক দিনের মধ্যে তা ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। এর মধ্যে দেশের আকাশের মেঘ সব সাগরে চলে গেছে। বাতাসের গতিও গেছে কমে। ফলে রাজধানীসহ দেশের বেশির ভাগ এলাকার মানুষ জীবন অতিষ্ঠ করা গরমে কষ্ট পাচ্ছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর মতে, বঙ্গোপসাগরে কোনো লঘুচাপ তৈরি হলে সাধারণত সেখানে স্থলভাগ থেকে বেশির ভাগ মেঘ চলে যায়। ফলে আকাশ পরিষ্কার থাকায় সূর্যকিরণ বেড়ে রোদের দাপট বাড়ে। আগামী কয়েক দিন এ দাবদাহ অব্যাহত থাকতে পারে।
বিশ্বের অনেক দেশে এ ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য পরামর্শ ও পূর্বাভাসের পাশাপাশি অবকাঠামোগত সুবিধা বাড়ানো হচ্ছে। যেমন রাস্তার পাশে প্রচুর গাছ লাগানো, পানির কল রাখা, জলাধার সংরক্ষণ ও প্রতিটি এলাকায় একটি করে বৃক্ষ আচ্ছাদিত পার্ক তৈরি করা। আমাদেরকেও এই কাজগুলো করতে হবে।
বড় শহর বাসযোগ্য করতে হলে দীর্ঘমেয়াদি পরিবেশবান্ধব পরিকল্পনা নিয়ে এগোতে হবে। নদ-নদী, খাল-বিল, বনভূমি, পার্ক-উদ্যানসহ পরিবেশের সব উপাদান সংরক্ষণ করতে হবে। পরিবেশের সব উপাদান সংরক্ষণ হলে তাপমাত্রা সহনীয় থাকবে। দৃঢ় রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকলে টেকসই, বাসযোগ্য ও সবুজ প্রকৃতি ঘেরা পরিবেশবান্ধব নগর গড়া অসম্ভব নয়।
এ মুহূর্তের সংবাদ