গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে হলে ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে: চসিক মেয়র

সুপ্রভাত ডেস্ক »

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, আমরা ৯০ সালে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে রাজপথে ছিলাম, ৭১ সালে আমাদের পূর্বসুরিরা মুক্তিযুদ্ধে লড়েছে, ২০২৪ সালে আমাদের সন্তানরা শহীদ হয়েছে। বারবার কেন আমাদের গণতন্ত্রের জন্য আন্দোলন করতে হবে? আমরা চাই, অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে একটি সুষম, সাম্যের জাতি গড়তে, যেখানে সামাজিক ন্যায়বিচার, মানবিক মর্যাদা ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে।

তিনি বলেন, গণতন্ত্র ধ্বংস করে কেউ টিকতে পারে না। তাই আমাদের গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে হলে ভোটের মাধ্যমে জনগণের মালিকানা ফিরিয়ে আনতেই হবে। আমার অধিকার আমার ভোট। ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে হবে। আমি যেন কেন্দ্রে গিয়ে আমার ভোট দিতে পারি—এই অধিকার রক্ষা করতেই আমাদের লড়াই। ঐক্যের ভিত্তিতেই শহিদদের স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ে তুলবো।

মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) নগরের দামপাড়া গরীবুল্লাহ শাহ মাজারে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ মোহাম্মদ আলমের কবর জিয়ারত শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।

চসিক মেয়র বলেন, আজকের দিন আমাদের মনে করিয়ে দেয়, গণতন্ত্রের জন্য জীবন দেওয়া শহীদদের ঋণ শোধে আমরা কতটা ব্যর্থ। সেই ব্যর্থতা কাটাতে হলে বিভাজন ভুলে জাতীয় ঐক্যের পতাকাতলে সবাইকে সমবেত হতে হবে। ৫ আগস্ট আমাদের জন্য আনন্দেরও, বেদনারও। আনন্দ এ জন্য যে, আজকের প্রজন্মও শহীদদের রক্তের ঋণ মনে রেখেছে। কিন্তু বেদনার এই যে, শহীদদের পরিবার আজও কান্নায় ভাসে। তাদের সন্তান, ভাই, আত্মীয় হারানোর শোক আজও মুছে যায়নি। এই শোক আমাদের আনন্দকে ম্লান করে দেয়।

তিনি বলেন, আমরা শহীদদের স্মৃতি বুকে ধারণ করে বলতে চাই—বাংলাদেশকে দুর্নীতিমুক্ত, মৌলিক অধিকারসমৃদ্ধ, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠার জন্য ঐক্যই আমাদের একমাত্র শক্তি। বিভাজন আর অনৈক্যের রাজনীতি দিয়ে শহীদদের আত্মত্যাগের মর্যাদা রাখা যাবে না। গত ১৬ বছর ধরে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলসহ গণতান্ত্রিক শক্তিগুলো নির্যাতনের শিকার হয়েছে, আন্দোলনে প্রাণ দিয়েছে। আজকের দিনে আমরা যদি তাদের আত্মত্যাগের মূল্য দিতে চাই, তাহলে দল-মত নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যের পথে আসতে হবে। কারণ, ঐক্য ছাড়া আমরা যে বাংলাদেশ বিনির্মাণের স্বপ্ন দেখছি, শহীদরা যে বাংলাদেশ চেয়েছিল, তা সম্ভব নয়।

শহীদ মোহাম্মদ আলমের কবর জিয়ারত শেষে তার পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন মেয়র। এসময় তিনি শহীদদের পরিবারকে সব ধরনের সহায়তা করবেন বলে আশ্বাস দেন। আন্দোলনে নিহতদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে মোনাজাত পরিচালনা করেন মেয়র। এরপর টাইগারপাস চসিক কার্যালয়ে নিহতদের আত্মার মাগফেরাত ও আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করে আয়োজিত মিলাদ, দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভায় অংশ নেন মেয়র।

এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলামসহ বিভাগ, সচিব মো. আশরাফুল আমিন, প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা কমান্ডার ইখতিয়ার উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা সরোয়ার কামাল, প্রধান প্রকৌশলী আনিসুর রহমান, প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা ড. কিসিঞ্জার চাকমা, প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির চৌধুরী, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. ইমাম হোসেন রানা ও আইন কর্মকর্তা মহিউদ্দিন মুরাদ।