শ্যামল রুদ্র, রামগড় »
ফটিকছড়ি উপজেলার উত্তর সীমান্তের একদম শেষ প্রান্তে রামগড় উপজেলা সদরের উপকণ্ঠে অবস্থিত রামগড় চা বাগানে প্রচ- খরা ও পোকার আক্রমণে বাগানের উৎপাদন কমে গেছে। এ অবস্থায় প্রচ- দাবদাহে গুণগতমান বজায় রেখে চা উৎপাদন অনেকটাই দুরূহ হয়ে পড়বে।
অন্যদিকে অতিগরমে চা শ্রমিকরা অসুস্থ হয়ে পড়ছেন বলে জানা গেছে। কৃত্রিমভাবে পানি ছিটিয়ে গাছ বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা হলেও প্রয়োজনের তুলনায় পানি খুবই অপ্রতুল; আবার খরচও বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রাকৃতিকভাবে বৃষ্টির যে উপকার কৃত্রিম ব্যবস্থায় তা পূরণ হওয়ার নয়।
সরেজমিন, বাগানের বিভিন্ন সেকশনে দেখা গেছে কচি পাতা শুকিয়ে লাল হয়ে গেছে। পাতায় পোকার আক্রমনও দেখা গেছে। পানির অভাবে নতুন পাতা গজাতে বিলম্বিত হচ্ছে। কোন কোন জায়গায় পাতা শুকিয়ে একেবারে জ্বলে গেছে।
চা শ্রমিক নেতা মদন রাজগর বলেন, দীর্ঘদিন বৃষ্টি না হওয়ায় বাগানের বড় ধরনের ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। চা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছানো কঠিন হবে। এ সময়টায় চা গাছের জন্য প্রচুর বৃষ্টিপাত প্রয়োজন হলেও বৃষ্টির দেখা নেই। কৃত্রিম উপায়ে পানির চাহিদা মেটানো সম্ভব নয়।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য সুমন মেম্বার বলেন, রোদের তাপে চা গাছ ঝলসে লাল হয়ে মরে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। শ্রমিকরা গরমজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। বাগানের বিভিন্ন সেকশনে পাতা শুকিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি পোকার আক্রমণ হওয়ায় চা উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাগানের এক স্টাফ জানান, অতি খরার কারণে এবার সাড়ে আট লাখ কেজি চা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছানো সম্ভব হবেনা।
জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (রামগড় চা বাগানের সাবেক ব্যবস্থাপক) বলেন, খরার কারণে উৎপাদন কমবে, গুণগত মান ঠিক থাকবে না। পোকার আক্রমণ বাড়বে। রেড স্পাইডার (মাকড়সা) সহ নানা কীটপতঙ্গের উপদ্রবে বাগান ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। শ্রমিকরা পেটের পীড়া, ডায়েরিয়া, মাথাঘুরাসহ বমির উপসর্গে ভুগছেন। কৃত্রিমভাবে পানি দিয়ে প্রাকৃতিক পানির চাহিদা মেটানো কোনভাবেই সম্ভব নয়।