নিজস্ব প্রতিবেদক :
‘ক্রসফায়ারে’ হত্যাচেষ্টার অভিযোগে ৮ পুলিশ সদস্যসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন সমর কৃষ্ণ চৌধুরী (৬৫) নামে শিক্ষানবিশ এক আইনজীবী। গতকাল চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম আবু সালেম মো. নোমানের আদালতে এ মামলা হয়। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
বাদির আইনজীবী জুয়েল দাশ জানান, সমর কৃষ্ণ চৌধুরী বোয়ালখালী উপজেলার দক্ষিণ সারোয়াতলী গ্রামের মৃত মনোরঞ্জন কৃষ্ণ চৌধুরীর ছেলে। ২০১৮ সালের ২৭ মে সন্ধ্যায় আদালত ভবন থেকে নামার পথে লালদিঘীর পাড় এলাকায় সাদা পোশাকে একদল পুলিশ সমর কৃষ্ণ চৌধুরীকে মাইক্রোবাসে তুলে নেয়। পরে তাকে ইয়াবা ও অস্ত্রসহ গ্রেফতারের কথা জানিয়ে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠায় বোয়ালখালী থানা পুলিশ। বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমে একের পর এক সংবাদ প্রকাশিত হয়।
মামলায় অভিযুক্তরা হলেন বোয়ালখালী থানার সাবেক ওসি হিমাংশু কুমার দাশ, পরিদর্শক (তদন্ত) মাহবুব আলম আখন্দ, এসআই মো. আতিক উল্লাহ, আরিফুর রহমান, আবুবক্কর সিদ্দিকী, রিপন চাকমা ও দেলোয়ার হোসেন, এএসআই আলাউদ্দিন, লন্ডনপ্রবাসী সঞ্জয় দাশ, দক্ষিণ সারোয়াতলী গ্রামের সজল দাশগুপ্ত এবং সারোয়াতলী ইউনিয়ন পরিষদের গ্রামপুলিশ হিসেবে পরিচিত দিদারুল আলম। অভিযুক্ত আট পুলিশের সকলে ঘটনার সময় বোয়ালখালী থানায় কর্মরত ছিলেন। অভিযুক্ত সঞ্জয় দাশ দক্ষিণ সারোয়াতলী গ্রামের অসিত দাশের ছেলে। সজল দাশগুপ্ত একই গ্রামের সমর দাশগুপ্তের ছেলে।
মামলার আরজিতে বলা হয়, লন্ডনপ্রবাসী সঞ্জয় দাশের সঙ্গে একই গ্রামের মৃত চিত্তরঞ্জন দাশের ছেলে স্বপন দাশের পরিবারের সঙ্গে জমিজমা নিয়ে বিরোধ ছিল। সমর কৃষ্ণ শিক্ষানবিশ আইনজীবী হিসেবে তাদের আইনি সহায়তা দিচ্ছিলেন। এতে সঞ্জয় ও সজল বাদি সমরের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হন। বিত্তশালী সঞ্জয়ের সঙ্গে তৎকালীন ডিআইজি এসএম মনিরুজ্জামানের সখ্য থাকায় তার মাধ্যমে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যরা বাদি সমরের ক্ষতি করেন এবং তাকে ‘ক্রসফায়ারে’ হত্যাচেষ্টা চালান।
এর আগে সাজানো মামলায় প্রায় দেড়মাস কারাভোগ করেন সমর কৃষ্ণ। এ ঘটনায় চট্টগ্রাম রেঞ্জের তৎকালীন ডিআইজি এসএম মনিরুজ্জামানের সাথে লন্ডনপ্রবাসী সঞ্জয়ের ঘনিষ্ঠতার বিভিন্ন তথ্য গণমাধ্যমে আসে। পরে ডিআইজি মনিরুজ্জামানকে বদলি করা হয়। সমরকে ইয়াবা ও অস্ত্র দিয়ে ফাঁসানোর ঘটনা তদন্তে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় বোয়ালখালী থানার সাবেক ওসি হিমাংশু দাশসহ অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের সাময়িক বরখাস্ত ও বদলি করে কর্তৃপক্ষ।