চট্টগ্রাম সিটি করপোরশনের প্রশাসক আলহাজ মোহাম্মদ খোরশেদ আলম সুজন বলেন, ধারাবাহিকভাবে ক্যারাভান কর্মসূচির ফলে জনগণ ফুটপাতে হাঁটার অধিকার ফিরে পেয়েছে। জন ও যানচলাচলের প্রতিবন্ধকতা প্রতিহত করাই নগরবাসীর প্রতি আমার দায়বদ্ধতা। প্রথমত আমার অনুরোধ, তারপরে নির্দেশ, তা যদি কেউ অমান্য করে বা নিজের বাহুবল প্রকাশ করতে চায়, তাকে আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি দেয়া হবে।
তিনি গতকাল দুপুরে আন্দরকিল্লা, সিরাজদ্দৌলা রোড, চকবাজার, জামালখান ও চেরাগি পাহাড় হয়ে পুনরায় আন্দরকিল্লা পর্যন্ত ‘নগরসেবায় ক্যারাভান’ কার্যক্রম পরিচালনার সময় এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার মাধ্যমে এবং প্রশাসনের সহযোগিতায় উচ্ছেদ অভিযান অব্যাহত থাকবে। আমি চাই, বাসযোগ্য চট্টগ্রাম নগরী গড়ে উঠুক। আমি যা শুরু করেছি বা করছি তা আগামীতে এই দায়িত্বে যারা আসবেন তাদের পথ অনেকখানি সুগম করে দেবে। আমি লক্ষ্য করেছি, নির্দেশনা দেয়ার পর তাৎক্ষণিকভাবে কাজ করা হলেও চোখের আড়াল হওয়ার পরপরই তা আবার আগের অবস্থায় ফিরে আসে। এ শুধু দুঃখজনক নয়, এটি আমাকে ক্ষুব্ধ করেছে। আমি স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, সহ্যের সীমা অতিক্রম করলে কাউকেই ক্ষমা করা হবে না। তিনি বলেন, চকবাজার এলাকায় জলাবদ্ধতা একটি স্থায়ী সমস্যায় রূপ নিয়েছে। এ জলাবদ্ধতা নিরসনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যে মেগা প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছেন তা বাস্তবায়নে বিভিন্ন সেবা সংস্থা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। তবে কতিপয় স্বার্থান্বেষীমহলের দীর্ঘদিনের অনিয়মকে নিয়মে পরিণত করতে এবং বৈরী আবহাওয়ার কারণে কোথাও কোথাও কাজে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে। তবে প্রকল্পের কাজ পুরোপুরি শেষ হলে আগামীতে এর সুফল আপনারাই ভোগ করবেন। আমি একজন মাঠের রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে চকবাজার এলাকায় সামান্য বৃষ্টতে যে জনদুর্ভোগের সৃষ্টি হয় তার যন্ত্রণা হৃদয় দিয়ে সব সময়ই উপলব্ধি করি। তবে চসিকের পাশাপাশি এলাকাবাসীরও কিছু দায়-দায়িত্ব রয়েছে। সেবা সংস্থার কাজগুলো যথাযথভাবে হচ্ছে কিনা সে সম্পর্কে তথ্য-উপাত্ত আমাকে জানালে আমি তা অবশ্যই আমলে আনব। জনদুর্ভোগ লাঘবে জনতার ঐক্য গড়ে তোলাই আমার কর্মসূচির মূল উদ্দেশ্য।
তিনি চকবাজার মোড় এলাকায় অলস গাড়ি পার্কিং না করা ও যত্রতত্র ইটবালির ব্যবসা না করার জন্য স্পষ্ট নির্দেশনা দিয়ে বলেন, প্রয়োজনে বিকল্প ব্যবস্থায় ব্যবসা করার জন্য আমরা আপনাদের সহযোগিতা দেব। তবে জনগণের অধিকারহরণ করে ফুটপাত দখল নয়। প্রশাসক বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে প্রশাসক মনোনীত করেছেন, আমি চট্টগ্রামের ৬০ লক্ষ জনগণকে প্রশাসক বানালাম। আপনারা আমার ভূমিকায় নিজ নিজ নাগরিক দায়িত্ব পালন করবেন। আপনার অধিকার আপনি আদায় করে নেবেন। তিনি চট্টগ্রাম কলেজ, জামালখান মোড় ও চেরাগি পাহাড় এলাকায় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পরিবেশ দেখে সন্তোষ প্রকাশ করে এলাকাবাসীকে ধন্যবাদ জানান। প্রশাসক চলতি পথে সিরাজদ্দৌলা রোডের অবৈধ কাঁচাবাজার দেখে তাৎক্ষণিক সংশ্লিষ্ট সকলের সাথে কথা বলে এই অবৈধ বাজার না বসানোর অঙ্গীকার করান। এছাড়া একই সড়কে জয়নব কলোনির সামনে ফুটপাত দখল করে বসা দুটি অবৈধ দোকানদারকে আগামী ১ সপ্তাহের মধ্যে তাদের অবকাঠামো নিজ উদ্যোগে সরিয়ে নেয়ার নির্দেশ দেন। যাত্রাপথে উৎসুক নগরবাসী চসিক প্রশাসকের জনহিতকর কর্মকা-ের ভূয়সী প্রশংসা করেন। এলাকাবাসী প্রশাসকের যেকোনো কর্মকা-ে পাশে থাকার আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এ সময় প্রশাসকের একান্ত সচিব মোহাম্মদ আবুল হাশেম, নির্বাহী প্রকৌশলী ফরহাদুল আলম, ফারজানা মুক্তাসহ চসিকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারী ও প্রত্যেক এলাকার স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিগণ উপস্থিত ছিলেন।
টপ নিউজ