রুমন ভট্টাচার্য :
করোনা ভাইরাসে থমকে গেছে প্রায় সবকিছু। ৩০ মে পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা কর হয়েছে। দীর্ঘ এই ছুটিতে ঘরবন্দি হওয়া মানুষ পরিবারের সঙ্গে থাকলেও অনেকেই একরকম বিরক্ত হয়ে উঠেছে। সঙ্কটময় এই অবস্থায় বেড়েছে বিভিন্নরকম ঘরোয়া খেলা। ছোট-বড় সকলে কেউ ঘরে লুডু, কেউ ক্যারম, কেউ দাবা খেলে পার করছে অবসর সময়।
পাঁচলাইশ এলাকা বাসিন্দা বেসরকারি চাকরিজীবি শান্তনু চৌধুরী বলেন, ‘খেলা যে শুধু মাঠেই খেলতে হবে, এমন কোনো কথা নেই। ঘরোয়া খেলার জন্য বাইরে যেতে হয় না। ফলে ঝুঁকিও নেই। এই বন্ধে বাসায় ক্যারম খেলে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে থাকতে পারছি, একই সঙ্গে তাদের সঙ্গে নিয়েই অবসর সময়টা কাটিয়ে দিতে পারছি বেশ মজা করেই।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নগরীর খেলাধুলার সরঞ্জাম বিক্রির দোকানগুলোতে বিক্রি বেড়েছে ঘরোয়া খেলার উপকরণ-যেমন ক্যারম, লুডু, দাবা, বাগাডুলি ইত্যাদির। করোনা ভাইরাসে সাধারণ ছুটি ঘোষণার পর থেকে এসব ঘরোয়া খেলার উপকরণের চাহিদা ও দাম দুটোই বেড়েছে।
নগরীর কাজির দেউড়ি মার্কেটের বেশকয়েকটি স্পোর্টসের দোকান ঘুরে দেখা যায়, বড়-ছোট-মাঝারি বিভিন্ন সাইজের ক্যারম সাজিয়ে রাখা হয়েছে। এর মধ্যে ৪৫ সাইজের ক্যারমের দাম চাওয়া হচ্ছে ৬ হাজার টাকা। ৫০ সাইজের ৮ হাজার ও ৫৫ সাইজের ১০ হাজার টাকা। এছাড়া ছোটদের ক্যারম ১৫০০-২০০০ হাজার টাকা।
এ সময় ক্যারম কিনতে আসা ডিসি রোডের বাসিন্দা যীশু দাশ বলেন, ‘আগের চেয়ে ক্যারমের দাম অনেক বেড়েছে। ৩ হাজার টাকার ক্যারম এখন ৬ হাজার টাকা। অনেক দোকান ঘুরে ও দর কষাকষি করে শেষপর্যন্ত সাড়ে ৪ হাজার টাকায় ৪৫ সাইজের একটি ক্যারম কিনলাম। কি করব উপায় নেই, লম্বা বন্ধে বাসায় বসে থেকে সময় আর কাটছে না।’
খুচরা লুডু বিক্রেতা সুমন দাশ দাম বাড়ার কথা স্বীকার করে বলেন, ‘চাহিদা বাড়ায় লুডুর দাম আগের চেয়ে বেড়েছে। এছাড়া মার্কেটে সংকট আছে । ছোট-মাঝারি-বড় বিভিন্ন সাইজের লুডু রয়েছে। এখন সর্বনি¤œ ৩০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৮০ টাকায় লুডু বিক্রয় হচ্ছে। আগে বড়গুলো বিক্রি করতাম ৫০ টাকায় আর এখন দাম বাড়ায় ৮০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে।’
নগরীর বেটারি গলির বাসিন্দা গৃহিনী সুচিত্রা চক্রবর্তী বলেন, ‘করোনা ভাইরাসের বন্ধ শুরুর পর থেকে বাসায় একদম সময় কাটছিল না। পাশের দোকান থেকে বড় সাইজের একটি লুডু কিনেছি ৮০ টাকায়, দাম চাওয়া হয়েছিল ১০০ টাকা। স্বামী ও সন্তাদের নিয়ে প্রতিদিন লুডু খেলে অবসর সময় ভালোই পার করছি। ঘরোয়া খেলার সুবিধার হলো বাইরে যেতে হচ্ছে না। সে কারণে একটু নিশ্চিন্ত। এছাড়া পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে অবসর সময়টা বেশ মজা করে কাটানো যাচ্ছে। খেলায় মেতে উঠলে সময়টা যেমন আনন্দে কাটছে, তেমনি পরিবারের সবার সঙ্গে থাকার পাশাপাশি ছোটরাও বড়দের খুব সান্নিধ্যে থাকতে পারছে।’
Uncategorized