কোহলি’র কৃতিত্বে ফাইনালে ভারত

৯৮ বলে ৮৪ রান করেন কোহলি

এ জেড এম হায়দার »

ভারতকে আটকাতে পারলো না অস্ট্রেলিয়া। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি’র প্রথম সেমিফাইনালে ভারতের কাছে ৪ উইকেটে পরাস্ত হয়ে বিদায় নিতে হয়েছে এ আসরে সবচেয়ে বেশি ইনজুরি কবলিত দল অজিদের। ৪৯.৩ ওভারে ২৬৪ রান করে অস্ট্রেলিয়া সবাই আউট হলে ভারত ১১ বল ও ৪ উইকেট হাতে রেখে ফাইনালের টিকেট নিশ্চিত করে। ফাইনালে তাদের প্রতিপক্ষ হবে নিউজিল্যান্ড বা দক্ষিণ আফ্রিকা।
জয়ের জন্য ২৬৫ রানের পিছনে তাড়া করতে গিয়ে দলীয় ৩০ রানে গিল (৮) ও ৪৩ রানে অধিনায়ক রোহিত শর্মার (২৮) উইকেট হারায় ভারত। সতর্কতার সাথে কোহলি শ্রেয়াসকে নিয়ে রানের চাকা সচল রাখেন। দলীয় ১৩৪ রানে শ্রেয়াস (৪৫) বিদায় নিলে কোহলি অক্ষর প্যাটেলকে নিয়ে লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যান। ১৭৮ রানের সময় ২৭ রান করা অক্ষর আউট হন। এরপর জয়ের কাছাকাছি গিয়ে পৌঁছালে কোহলিকে থামান জাম্পা। স্কোর বোর্ডে ২২৫ রান উঠার সময় ৯৮ বলে ৮৪ রান করে ফিরে যান কোহলি। রাহুল ও হার্ডিক পান্ডিয়া ঝড়ো গতিতে ব্যাট চালিয়ে বাকি কাজটা সম্পন্ন করেন। ২৪ বলে ৩ ছক্কা ও ১ বাউন্ডারিতে ২৮ রান করে পান্ডিয়া আউট হলেও রাহুল ২ ছক্কা ও ২ বাউন্ডারিতে ৩৪ বলে ৪২ রানে অপরাজিত ছিলেন। অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে জাম্পা ৬০ ও ন্যাথান এলিস ৪৯ রানে ২টি করে এবং কুপার কনলো ও দারশুইস ১টি করে উইকেট নেন। এর আগে প্রথমে ব্যাট করতে নামা অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে ফিফটি হাঁকিয়েছেন স্টিভেন স্মিথ এবং অ্যালেক্স ক্যারি। ভারতের আতংক হিসেবে পরিচিতি ব্যাটার ট্রাভিস হেড খেলেছেন ৩৩ বলে ৩৯ রানের ইনিংস। দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নামে অস্ট্রেলিয়া। অজিদের হয়ে এদিন ইনিংসের সূচনা করেন ট্রাভিস হেড এবং কুপার কনলো। ম্যাথু শর্টের বদলি হিসেবে মাত্রই সুযোগ পাওয়া কনোলি সুবিধা করতে পারেননি। ৯ বল খেলে রানের খাতা খোলার আগেই বিদায় নেন তিনি। দলের ৪ রানের মাথাতে ভাঙে উদ্বোধনী জুটি। এরপর জুটি বাঁধেন ট্রাভিস হেড এবং অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথ। ভারতের বিরুদ্ধে আরও একবার জ্বলে উঠার আভাস দিচ্ছিলেন হেড। উইকেটের চারপাশে দারুণ সব শটে রান তুলতে থাকেন অজি ওপেনার। আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে ছুটছিলেন ফিফটির দিকে। ফিফটির কাছাকাছি চলে গিয়েছিলেন হেড। দলের রানও বাড়িয়ে নিয়েছিলেন অনেকখানি। তবে ফিফটির আগেই থামতে হয়েছে তাকে দলের ৫৪ রানের মাথায় থেমেছেন ৩৩ বলে ৩৯ রান করা ট্রাভিস হেড। ভারতের জন্য মহাগুরুত্বপূর্ণ উইকেটটি তুলেছেন বরুণ চক্রবর্তী। শুরুতে চাপে ছিলেন ভারতের বোলাররা। হেডের বিদায়ের পর স্টিভেন স্মিথের সাথে যোগ দেন মারনাস লাবুশেন। স্মিথ-লাবুশেনও ব্যাট হাতে ছিলেন দারুণ সাবলীল। দুজনের কার্যকরী ব্যাটিংয়ের সুবাদে এগোতে থাকে অজিদের ইনিংস। এক প্রান্ত আগলে রেখে খেলে যাচ্ছিলেন স্মিথ। ভারতের বোলারদের তেমন কোনো সুযোগ দিচ্ছিলেন না তিনি। ভালো খেলতে থাকা লাবুশেন ইনিংস লম্বা করতে পারেননি। দলের ১১০ রানের মাথায় ৩৬ বলে ২৯ রান করে বিদায় নেন লাবুশেন। এরপর পাঁচে নামা জশ ইংলিশ খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি। ১২ বলে ১১ রান করে দলের ১৪৪ রানের মাথাতে আউট হন তিনি। এক প্রান্ত ধরে খেলতে থাকা স্মিথ ছুঁয়ে ফেলেন ফিফটি। ইংলিশের বিদায়ের পর অ্যালেক্স ক্যারির সাথে ভালো একটি জুটি হয় স্মিথের। সাবলীল ব্যাটিংয়ে এগিয়েছেন ক্যারি। স্মিথও পরিস্থিতির দাবি মিটিয়ে তুলেছেন রান। দলের ইনিংসও ভালোই গতি পায়। বড় হতে থাকে স্মিথ-ক্যারির জুটি। তবে তখনই আঘাত হানেন মোহাম্মদ শামি। ৯৬ বলে ৭৩ রান করা স্মিথকে বোল্ড করে জুটি ভাঙেন শামি। দলের রান তখন ১৯৮। এরপর গ্লেন ম্যাক্সওয়েল থেমেছেন এক ছক্কা হাঁকিয়ে। ৫ বলে ৭ রান করা ম্যাক্সওয়েলকে ফেরান অক্ষর প্যাটেল। দলের রান তখন ২০৫। এরপর কিছুক্ষণ লড়াই চালিয়ে গেছেন ক্যারি। ছুঁয়েছেন ফিফটি। দলের ২৪৯ রানের মাথাতে আউট হওয়ার আগে ক্যারি খেলেছেন ৫৭ বলে ৬১ রানের ঝলমলে ইনিংস। এর আগে বেন দারশুইস আউট হন ২৯ বলে ১৯ রান করে। শেষ দিকে কিছুটা কমে আসে অস্ট্রেলিয়ার রানের গতি। ক্যারির বিদায়ের পর ব্যাট চালিয়েছেন টেইলএন্ডাররা। নাথান এলিস ৭ বলে ১০ রান করেন। শেষ ব্যাটার হিসেবে দলের ২৬৩ রানের মাথাতে আউট হয়েছেন অ্যাডাম জাম্পা। ১২ বলে ৭ রান করেছেন জাম্পা। ভারতের হয়ে ৩ উইকেট নিয়েছেন মোহাম্মদ শামি। ২টি করে উইকেট শিকার করেন বরুণ চক্রবর্তী এবং রবীন্দ্র জাদেজা। ১টি করে উইকেট তোলেন অক্ষর প্যাটেল এবং হার্দিক পান্ডিয়া।