সুপ্রভাত ক্রীড়া ডেস্ক :
তার মনে হয় ক্রিকেট খেলাটা খুবই কঠিন। তিনি ভারতে এসে ক্রিকেটের নিয়ম জানতে চান। তার সাফল্যের মন্ত্র হল, জিততে গেলে চাপ সামলাতে জানতে হয়। তিনি, পেপ গার্দিওলা। ফুটবলবিশ্বের অন্যতম মহাতারকা কোচ গার্দিওলার এমনই অজানা দিকটা বেরিয়ে এলো। আর গার্দিওলার ইন্টারভিউ নেওয়ার দায়িত্ব পড়েছিল যার উপর তিনি পরিচিত ক্রিকেটের সেরা ব্যাটসম্যান হিসাবে। তিনি-বিরাট কোহলি।
এ দিন এক অনলাইন কনফারেন্সে একই মোহনায় মিশল ক্রিকেট ও ফুটবল। ঠিক কোনও পেশাদার সাংবাদিকের মতোই বিরাট তার অন্যতম পছন্দের কোচকে একের পর এক প্রশ্ন করে গেলেন। করোনা আবহে গোটা বিশ্বের প্রতিটা ক্রীড়া ইভেন্টই খেলা হচ্ছে দর্শকশূন্য স্টেডিয়ামে। দর্শক ছাড়া খেলার অভিজ্ঞতা কী রকম? বিরাটের এমন প্রশ্নে গার্দিওলা জানালেন দর্শক না থাকলে যেন মনে হয় তার দল ফ্রেন্ডলি খেলছে। গার্দিওলা বললেন, ‘দর্শক ছাড়া অভিজ্ঞতা একদমই আলাদা। মানলাম যা পরিস্থিতি তাতে কিছু করার নেই। কিন্তু খুব দ্রুত দর্শকদের আবার মাঠে ফেরাতে হবে। কারণ দর্শক ছাড়া প্রতিটা ম্যাচই মনে হয় যেন ফ্রেন্ডলি।’
গার্দিওলার মতো সফল কোচের মাইন্ডসেট কী জানতে চাইলেন কোহলি। জবাবে গার্দিওলা বললেন চাপ সামলাতে পারাটাই কোনও সাধারণ দলকে অসাধারণ করে তোলে। গার্দিওলা বললেন, ‘আমরা শুধু ফুটবলারদের স্কিল দেখি। কিন্তু আসল হল ফুটবলাররা চাপে কী ভাবে রিঅ্যাক্ট করছে। কারণ চাপ সামলাতে পারাটাই একটা দলের আসল গুণ। বড় প্রতিযোগিতা জিততে শুধু স্কিল থাকাই যথেষ্ট নয়। সঙ্গে লড়াকু মানসিকতাও থাকতে হয়।’ কোহলির উদাহরণ দিয়ে দু’বারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগজয়ী কোচ আবার যোগ করেন, ‘বিরাট তুমি তো এই মুহূর্তে বিশ্বের সেরা ব্যাটসম্যান। বড় মঞ্চে তুমি বরাবর পারফর্ম করো। কোয়ার্টার ফাইনাল হোক কী সেমিফাইনাল তুমি জানো কী ভাবে চাপ সামলাতে হয়। আর এমন সব মুহূর্তই একটা সেরা প্লেয়ার তৈরি করতে সাহায্য করে।’ গার্দিওলার সঙ্গে একমত বিরাটেরও দাবি স্কিল থাকাই যথেষ্ট নয়। ভারত অধিনায়ক বললেন, ‘স্কিল ছাড়াও চাপ সামলাতে হয়। জরুরি হল কে কতটা চাপ নিতে পারে বা খাটতে পারে। এমন সমস্ত ক্রিকেটারদের দলে রাখার চেষ্টা করতে হয় যাদের মধ্যে সুপারস্টার হওয়ার জেদটা আছে।’
গার্দিওলা-বিরাটের আড্ডায় মজার কিছু মুহূর্তও তৈরি হল। বিরাট জিজ্ঞেস করে বসলেন ক্রিকেট নিয়ে কতটা আগ্রহী গার্দিওলা? প্রশ্ন শুনে গার্দিওলার মুখে হাসি। যিনি বললেন ইংল্যান্ডে গত কয়েক বছরে কোচিং করাচ্ছেন বলে ক্রিকেটের নিয়মগুলো জানার চেষ্টা করছেন। তবে কাতালুনিয়ায় তিনি বড় হয়েছেন। যে শহরের ধর্ম একটাই, ফুটবল। গার্দিওলা বললেন, ‘আমি কাতালুনিয়ায় বড় হয়েছি। সেখানে ফুটবলই সব। তাই ক্রিকেট সম্বন্ধে কিছুই জানি না। তবে ইংল্যান্ডে এখন থাকছি বলে ক্রিকেট সম্বন্ধে একটু আন্দাজ হচ্ছে। জানি খেলাটা কতটা কঠিন। অনেক কম দিনের মধ্যে তোমাদের অনেক ম্যাচ খেলতে হয়।’ আড্ডা শেষে আবার গার্দিওলা কথা দিয়ে বসলেন কোহলিকে যে খুব শীঘ্রই তিনি ভারতে আসবেন। গার্দিওলা বললেন, ‘আমার ভারতে আসার ইচ্ছা আছে। এই মহামারীর পরিস্থিতি শেষ হলেই ভারতে যাব।’ তবে একটা শর্তেই গার্দিওলা ভারতে আসবেন? শর্তটা কী? গার্দিওলা বললেন, ‘কোহলি ভারতে আসলে তোমায় আমাকে ক্রিকেটের নিয়মগুলো শেখাতে হবে।’ খবর : সংবাদপ্রতিদিন’র।
খেলা