সুপ্রভাত ডেস্ক :
দেশের শীর্ষ সংগীত তারকা কুমার বিশ্বজিতের একটি টয়োটা স্টারলেট গাড়ি ছিলো। ঘটনাক্রমে সেই গাড়িটি কেনেন চিত্রনায়িকা পূর্ণিমা। কেনার পেছনে রয়েছে এই নায়িকার দীর্ঘ বক্তব্য।
আর এসব অজানা কথা নিয়েই আসছে ঈদে টিভি পর্দায় হাজির হচ্ছেন পূর্ণিমা। সম্প্রতি মাছরাঙা টেলিভিশনে ঈদের বিশেষ ‘রাঙা সকাল’-এ প্রথম জীবনের সংগ্রামের নানা গল্প শেয়ার করেছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত এই অভিনেত্রী।
জানান তার অভিনয়ে অভিষেক হয়েছিল শিশুশিল্পী হিসেবে ‘শত্রু ঘায়েল’ ছবিতে। সে ছবিতে অভিনয়ের জন্য অ্যালিফেন্ট রোডের বাসা থেকে বিএফডিসি আসতেন রিকশায় চেপে। বড় হয়ে যখন ‘এ জীবন তোমার আমার’ ছবিতে নায়িকা হলেন, তখন এসেছিলেন বেবি ট্যাক্সিতে। কিছুদিন পর হলুদ রঙের ট্যাক্সি ক্যাবে করে শুটিং স্পটে যেতেন। কিন্তু ট্যাক্সি ক্যাবের ভাড়া বেশি গুণতে হতো বলে ৪/৫টি ছবিতে অভিনয়ের পর মায়ের শখ হয়েছিল মেয়েকে একটি গাড়ি কিনে দেওয়ার। নতুন গাড়ি কেনার সামর্থ্য ছিল না। দীর্ঘ অনুসন্ধানের পর আড়াই লাখ টাকা দিয়ে জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী কুমার বিশ্বজিতের টয়োটা স্টারলেট গাড়িটি কিনেছিলেন পূর্ণিমা ও তার পরিবার। সেটিই তাদের প্রথম গাড়ি। পূর্ণিমা বলেন, ‘গাড়ি কিনেছি বটে কিন্তু তেল কেনার টাকা থাকতো না প্রায়ই। একের পর এক ছবি ফ্লপ হচ্ছিলো। এখনকার মতো সাইবার বুলিং হতো না। তবে তখন সরাসরি মুখের ওপর এসে অনেকে বলতেন, ‘তুমি তো কুফা নায়িকা। তোমার অভিনয় কিছুই হয় না’। দাঁতে দাঁত চেপে সবার কথা মুখবুজে শুনতাম আর আশুলিয়ায় গিয়ে হতাশ হয়ে এক প্লেট ফুচকা নিয়ে বসে থাকতাম। একেকটা ফুচকা মুখে নিতাম, আর ভাবতাম- ‘আমার কী হবে? কবে আমাকে লোকে পছন্দ করবে?’ পূর্ণিমা জানান, প্রথম চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য তিনি মোট ১ লাখ টাকা পারিশ্রমিক পেলেও সাইনিং মানি ছিল ১৫ হাজার টাকা। তবে প্রথম চলচ্চিত্রে অভিনয়ের সুখকর অভিজ্ঞতা তিনি কখনও ভুলতে পারবেন না। জাকির হোসেন রাজু পরিচালিত মতিউর রহমান পানু প্রযোজিত ছবিতে নায়ক ছিলেন রিয়াজ, আশীর্বাদ হিসেবে পেয়েছিলেন ফারুক-ববিতা জুটিকে। শুটিং শুরু হবার তিন দিন আগে সহশিল্পীদের সাথে সাবলীল অভিনয়ের জন্য পূর্ণিমাকে পরিচালক রাজু নিয়ে গিয়েছিলেন ফারুক-ববিতার বাসায়। পূর্ণিমা বলেন, ‘মিয়াভাইয়ের (নায়ক ফারুক) বাসায় সারাদিন ছিলাম। একসাথে খাওয়া-দাওয়া করলাম। তিনি মাথায় হাত বুলিয়ে আশীর্বাদ করে দিলেন। গুলশানে ববিতা আপার বাসায় গিয়ে অনেক বেশি চমকে গিয়েছিলাম। তিনি আমার গুরু রাজু ভাইকে বলেছিলেন, শুটিংয়ের প্রথম দিন ওকে আমার কাছে পাঠিয়ে দিও। আমি নিজের হাতে ওকে তৈরি করে দেবো। আমার সৌভাগ্য, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন অভিনেত্রী ববিতা আপা আমাকে নিজ হাতে সাজিয়ে শাড়ি পরিয়ে দিলেন। আমাকে স্বাভাবিক করার জন্য নিজের গাড়িতে পাশে বসিয়ে শুটিং স্পটে নিয়ে গেলেন। খবর বাংলাট্রিবিউন’র
সবার সহযোগিতা পেয়েছিলাম বলেই হয়তো আমার অভিনয় জীবনের প্রথম শট এক টেকেই ‘ওকে’ হয়েছিল।’
‘রাঙা সকাল’-এর বিশেষ এই পর্বটি সঞ্চালনা করেছেন রুম্মান রশীদ খান ও লাবন্য। জোবায়ের ইকবাল-এর প্রযোজনায় এটি প্রচার হবে ঈদের ২য় দিন (২২ জুলাই), সকাল ৭টা থেকে ৯টা, মাছরাঙা টেলিভিশনে।