দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ
নিজস্ব প্রতিবেদক
চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের কমিটিতে বর্তমান সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমদ ও সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান পুনরায় দায়িত্ব পেতে পারেন- এ গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। শীর্ষ এ দুই পদ ছাড়া বাকি সব পদে পরিবর্তনের কথা ভাবছেন দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। তবে সবার ভাবনা এমন নয়। অনেকে চান ত্যাগী কর্মীদের মূল্যায়ন হোক, নতুন মুখ ওঠে আসুক নতুন কমিটিতে। কিন্তু তাড়াহুড়া করে সম্মেলন করার কারণে কমিটি পরিবর্তন না হওয়ার সম্ভাবনা ব্যক্ত করেছেন নেতারা।
চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের নেতাদের ঘরোয়া আলোচনায় জানা গেছে, সভাপতি পদে আলোচনায় আছেন, বর্তমান সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমদ, ভূমিমন্ত্রী ও সাংসদ সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, মুক্তিযোদ্ধা ও সাংসদ নজরুল ইসলাম চৌধুরী, রূপালী ব্যাংকের সাবেক পরিচালক আবু সুফিয়ান, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আবুল কালাম চৌধুরী এবং এস এম আবুল কালাম। এছাড়া সাধারণ সম্পাদক পদে মফিজুর রহমানের পাশাপাশি পদপ্রত্যাশী আছেন- দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহজাদা মহিউদ্দিন, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. আ ম ম মিনহাজুর রহমান, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রদীপ দাশ ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল কাদের সুজন।
এরমধ্যে সভাপতি পদে গুঞ্জন রয়েছে বর্তমান সভাপতি সাংসদ মোছলেম উদ্দিন আহমদ ও সাইফুজ্জামান চৌধুরীর নাম। একইভাবে সাধারণ সম্পাদক পদে রয়েছে মফিজুর রহমান ও শাহজাদা মহিউদ্দিনের নাম। কিন্তু এ নিয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একজন নেতা বলেন, ‘এ কমিটি সফল হোক বা না হোক, যদি কেন্দ্র থেকে পুনরায় তাদের দায়িত্ব দেয় তাহলে আমরা মেনে নেবো। তবে এভাবে কমিটি করলে আমাদের সাংগঠনিক গতিশীলতা দিন দিন আরও কমতে থাকবে। আমরা দেখছি, যে জায়গায় যাকে দরকার, সেই জায়গায় সে ব্যক্তি নাই। যোগ্য নেতৃত্বের অভাবে আমাদের নেতারা সব জায়গায় একই রকম বক্তব্য দিচ্ছে। দক্ষিণে সাইফুজ্জামান জাবেদ সাহেব সভাপতি হতে পারেন। কেননা উনার বাবার ও উনার নিজের একটা শক্ত অবস্থান আছে। তবে এতো তাড়াহুড়া করে সম্মেলন দেওয়ায় হিসেব করাটা কঠিন হয়ে গেছে। এছাড়া তাড়াহুড়ার কারণে সম্মেলনের অনেকগুলো প্রক্রিয়াগত কাজ থাকে যা নেতাকর্মীদের পক্ষে করা সম্ভব হচ্ছে না।’
এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রদীপ দাশ বলেন, ‘অন্যসব জায়গার কমিটি দেওয়ার হিসেব পর্যালোচনা করে দেখে মনে হচ্ছে আগের কমিটি বহাল থাকবে। সম্মেলন হলো কর্মীদের জন্য একটি সাংগঠনিক মেলা। এখানে ত্যাগীদের মূল্যায়ন করাটা জরুরি। কিন্তু এমন কিছু হবে বলে মনে হচ্ছে না। কমিটি মনমতো হবে এমন কোনো কথা নেই। তবে অনুগত থেকেই সংগঠনের ভেতরে সংগ্রাম করার একটা সুযোগ আছে। তাই সেটি হতেও পারে। এরপরও আমি মনে করি, আওয়ামী লীগের মতো একটি রাজনৈতিক দলের ছোট পদে থাকাটাও ভাগ্যের বিষয়।’
নতুন মুখ ও ত্যাগীদের সুযোগ দেওয়ার কথা উল্লেখ করে চট্টগ্রাম ১২ আসনের সাংসদ, হুইপ সামশুল হক চৌধুরী বলেন, কেন্দ্র থেকে যে সিদ্ধান্ত আসবে সবাইকে সেটা মেনে নিতে হবে। এটা নিয়ে দ্বিধা রাখারও কোনো সুযোগ নাই। এরপরও আমি ব্যক্তিগতভাবে চাই, যারা ছাত্রলীগ ও যুবলীগ করে সংগঠনের নিয়মনীতি জেনে সাংগঠনিক কাজ করছে, তাদের সুযোগ দেওয়া দরকার। আমি চাই, কমিটিতে নতুন মুখ আসুক। নতুন মুখ আসলে সংগঠন আরও সৃজনশীল কাজ করার সুযোগ পাবে।
জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল স্বপন বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ আওয়ামী লীগ অপরাজেয়, অপ্রতিরোধ্য। দক্ষিণের সম্মেলনে তৃণমূল নেতাকর্মীদের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটবে- এই সত্য আবারও প্রমাণিত হবে বলে আমি আশা করছি। এছাড়া নেতৃত্বে কারা আসছেন বা দায়িত্ব কে পাচ্ছেন, সেটি একমাত্র নেত্রীর ওপর নির্ভর করছে। আমি এ ব্যাপারে অবগত নই।