করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট, দরকার সচেতনতার

এক মাস আগে অর্থাৎ গত বছরের ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে বিশ্বের কয়েকটি দেশে করোনাভাইরাসের ওমিক্রন ধরনের নতুন উপধরন জেএন.১-এর সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে। ভারত, চীন এবং যুক্তরাষ্ট্রসহ বহু দেশেই জেএন.১ এর প্রকোপ দেখা যায়। খুব দ্রুতই ছড়িয়ে পড়তে থাকায় এই উপধরনকে আলাদাভাবে ‘ভ্যারিয়্যান্ট অফ ইন্টারেস্ট’ (ভিওআই) শ্রেণিভুক্ত করে ডব্লিউএইচও। সংস্থাটি বলেছে, এই উপধরনটি জনস্বাস্থ্যের জন্য কম ঝুঁকিপূর্ণ । আগের উপধরনের চেয়ে এটি বেশি ক্ষতিকরও নয়।
কয়েকদিন ধরে কোভিড আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা কিছুটা বাড়ছিল বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। বিশ্বজুড়ে এই ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ বাড়তে থাকার মধ্যে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে ৩৬৬টি নমুনা পরীক্ষা করে আরও ১৮ জন নতুন রোগী পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন তাঁরা। শনাক্তের হার ৪ দশমিক ৯২ শতাংশ। এ সংস্থার পরিচালক অধ্যাপক তাহমিনা শিরীন বৃহস্পতিবার সংবাদমাধ্যমে বলেন, গত বছরের ডিসেম্বর এবং চলতি জানুয়ারি মাসে কোভিড আক্রান্ত কয়েকজন রোগীর নমুনা পরীক্ষা করে পাঁচজনের শরীরে জেএন.১ উপধরনটির সংক্রমণ মেলে। তিনি বলেন, তাদের কেউ বিদেশ থেকে আসেননি, দেশের মধ্যেই আক্রান্ত হয়েছেন। ঢাকায় এবং ঢাকার বাইরের রোগীও আছেন।
তবে অধ্যাপক তাহমিনা শিরীন অভয় দিয়ে বলেন, নতুন এই ধরন নিয়ে শঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এটার উপসর্গ সাধারণ সর্দিকাশি, জ্বরের মত। তবে বয়স্ক এবং যাদের কোমর্বিডিটি (নিয়াময় অযোগ্য বা দীর্ঘমেয়াদী জটিল রোগ) আছে তাদের একটু সতর্ক থাকতে হবে। ধরনটি দ্রুত ছড়ালেও আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণাপ্রতিষ্ঠান- আইইডিসিআর। হাসপাতাল, চিকিৎসাকেন্দ্রের মত জায়গা এবং এই রোগের উচ্চ ঝুঁকিতে আছেন এমন ব্যক্তিদের মাস্ক ব্যবহার ও কোডিভের টিকার চতুর্থ ডোজ নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। বাংলাদেশে ২০২০ সালের ৮ মার্চ প্রথম কোভিড আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সারাদেশে ২০ লাখ ৪৬ হাজার ৬৮৯ জন কোভিড রোগী শনাক্ত হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে ২৯ হাজার ৪৭৯ জনের।
এখন শীতের প্রকোপ বাড়ায় অনেকে শীতকালীন অসুখ যেমন, সর্দি-কাশি, গলাব্যথা, শ্বাসকষ্ট নিয়ে চিকিৎসকের কাছে যাচ্ছেন। তবে এদের মধ্যে শিশু, বয়স্ক ও জটিল রোগে আক্রান্তদের প্রতি বাড়তি নজর রাখতে হবে। সে সঙ্গে ঘরের বাইরে গেলে মাস্ক পরার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। মোটকথা মানুষ সচেতন থাকলে রোগবালাই বেশি ক্ষতির কারণ হয়ে উঠতে পারে না।