নিজস্ব প্রতিনিধি, মাটিরাঙা »
খাগড়াছড়ি জেলার মাটিরাঙা উপজেলায় দুর্গম পাহাড়ি জনপদে মাটি খুঁড়ে কালো কয়লার সন্ধান পেয়েছে বলে দাবি করছেন স্থানীয়রা। উপজেলা শহর থেকে ২২ কিলোমিটার দূরে আমতলী ইউনিয়ন সদর। সেখান থেকে আরো ৬ কিলোমিটার দূরে আমতলী ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের দুর্গম উত্তর রাজাপাড়ায় পাহাড়ের মাটি খুঁড়েই মিলেছে এ কয়লা খনির সন্ধান।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, স্থানীয় লোকজন কোদাল-দা, দিয়ে পাহাড়ের মাটি খুঁড়ে কয়লা বের করে নিয়ে আসছে। এই কয়লা এনে তারা শুকিয়ে বাসা বাড়িতে রান্নার কাজে ব্যবহার করছেন। স্থানীয়রা বলছেন আমতলী ইউনিয়নের দুর্গম উত্তর রাজাপাড়ায় কয়লার খনি আবিষ্কৃত হলে তাদের ভাগ্য বদলে যাবে।
জানা গেছে, দুই তিন বছর আগে দুর্গম পাহাড়ে কৃষি কাজের উদ্দেশ্যে পাহাড়ের মাটি খনন করতে গিয়ে এ কয়লার সন্ধান পান তারা। বিষয়টি এতদিন গোপন থাকলেও সম্প্রতি তা জানাজানি হয়। এরইমধ্যে এসব কয়লা সংগ্রহ করে তারা রান্নার কাজে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহারও করছেন। কয়লার সম্ভাব্য খনি দেখতে প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ সেখানে ভিড় করছেন।
বাংলাদেশ ভূ-তাত্বিক জরিপ অধিদপ্তরের (জিএসবি) একটি অনুসন্ধানী টিম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে নমুনা সংগ্রহ করে ওই স্থান থেকে কয়লার নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। এদিকে এ কয়লার খনি থেকে প্রাপ্ত কয়লা দিয়ে জ্বালানি চাহিদা ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হতে পারে বলে আশা স্থানীয়দের।
স্থানীয় কৃষক মো. হানিফ বলেন, প্রায় দুই তিন বছর আগে আদা-হলুদ রোপণের জন্য মাটি খনন করতে গিয়ে কয়লা দেখতে পাই। পরে কৌতূহলী হয়ে এসব কয়লা সংগ্রহ করে আগুনে পুড়িয়ে বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছি। বিষয়টি জানানোর পর অনেকেই আগ্রহী হয়ে সেসব কয়লা সংগ্রহ করে রান্নার কাজে ও দোকানে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করছে।
উত্তররাজা পাড়ায় একাধিক স্থানে মাটির নিচে কয়লা থাকার কথা জানিয়ে ৯ নম্বর ওয়ার্ডের স্থানীয় ইউপি সদস্য রজ্ঞন বিকাশ ত্রিপুরা বলেন, কয়লাগুলো জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। আমাদের অনেকেই রান্নার কাজেও তা ব্যবহার করছে। কিন্তু কয়লা উত্তোলনের জন্য সরকারিভাবে উদ্যোগ নেয়া দরকার। সেখানে বেশ কয়েকটি জায়গায় এমন কয়লা আছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
পাহাড়ের মাটি খুঁড়ে কয়লা পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে আমতলী ইউপি চেয়ারম্যান মো. আব্দুল গণি বলেন, বিষয়টি যাচাই বাছাই করে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়া হলে দেশে কয়লা ঘাটতি পূরণ হবে। বিদ্যুতের যে জ্বালানি সঙ্কট রয়েছে তাও দূর হবে।
খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সহিদুজ্জামান বলেন, বিষয়টি শুনেছি। মাটিরাঙা উপজেলার আমতলী ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর রাজাপাড়া এলাকায় কয়লা পাওয়া যাচ্ছে। স্থানীয়রা জ্বালানি হিসেবে কয়লাগুলো ব্যবহার করছে। মাটিরাঙা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিষয়টি তদন্ত করে রিপোর্ট পাঠানোর জন্য বলা হবে। রিপোর্ট পরবর্তী আমরা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বিষয়টি সম্পর্কে নিশ্চিত হবো।