নিজস্ব প্রতিবেদক »
কোরবানের ঈদের আগে সরবরাহ কিছুটা ঘাটতির কারণে সবজি বাজার বেশ চড়া ছিল। কিন্তু সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে সবজির সরবরাহ স্বাভাবিক রয়েছে। যার ফলে এ সপ্তাহে সবজির দামে কিছুটা স্বস্তি মিলছে। এছাড়া ব্রয়লার মুরগি, ডিমের দাম কিছুটা কমলেও মাছ, চাল, ডাল ও ভোজ্যতেলসহ অনান্য নিত্যপণ্যের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার (৬ জুলাই) সকালে নগরীর পাইকারি বাজার রেয়াজউদ্দিন ও খুচরা বাজার ঘুরে দেখা যায় এসব চিত্র।
সবজির বাজার ঘুরে দেখা যায়, গ্রীষ্মকালীন সবজির মধ্যে বরবটি, পটল, কাকরোল, ঝিঙঙ্গা বিক্রি হয়েছে ৩৫ টাকা থেকে ৫০ টাকার মধ্যে। বেগুন ও শিম বিক্রি হয়েছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়। এছাড়া একটু বাড়তির দিকে আলু। প্রতিকেজি আলু বিক্রি হযেছে ৩৫ টাকা থেকে ৪০ টাকায়। অন্যদিকে কোরবানের ঈদে বেড়ে যাওয়া সালাদের সবজি শশা, গাজর, টমেটোর দামও কমতির দিকে। বাজারে গাজর ৮০ থেকে ১০০ টাকা, টমেটো ৭০ থেকে ৮০ টাকা আর শশা ৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে।
এদিকে সপ্তাহের ব্যবধানে আমদানি স্বাভাবিক হওয়ার কথা শোনার পর রোববার দেশীয় চাষের কাঁচা মরিচের দাম কমে যায়। কিন্তু গত দুইদিন ধরে আবারো বাড়তির দিকে আমদানিসহ দেশীয় কাঁচামরিচের বাজার। গতকাল খুচরা বাজারে কাঁচা মরিচ বিক্রি হয়েছে ৪৮০ টাকা থেকে ৫২০ টাকায়।
ব্যবসায়ীরা জানান, আমদানি খরচ বাড়তির কারণে কাঁচামরিচের দাম বাড়ছে। দেশীয় ফলন বের না হওয়া পর্যন্ত কাঁচা মরিচের দাম কিছুটা বাড়তির দিকে থাকতে পারে।
রেয়াজউদ্দিন বাজারের সবজি বিক্রেতা মো. আবুল কালাম বলেন, ঈদের আগে সবজির দাম বাড়তির দিকে ছিল। কিন্তু বাজারে পর্যাপ্ত সবজির সরবরাহ রয়েছে। যার ফলে দাম আবারো কমতির দিকে। তবে ক্রেতারা কাঁচামরিচের দামে অসন্তাষ।
অন্যদিকে সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির দাম কমেছে কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা। বাজারে ব্রয়লার মুরগির বিক্রি হয়েছে ১৬০ থেকে ১৬৫ টাকা, সোনালি ২৬০ থেকে ২৭০ টাকা ও দেশী মুরগি বিক্রি হয়েছে ৫৫০ থেকে ৫৭০ টাকায়। তাছাড়া ডিমের দামও কমতির দিকে। বাজারে লেয়ার (লাল) ডিম বিক্রি হয়েছে ডজনে ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকায়।
এদিকে সবজি, মুরগি ও ডিমের বাজারে কিছুটা স্বস্তির খবর থাকলেও কোনো সুখবর নেই নিত্যপণ্যের দামে। দীর্ঘদিন ধরে স্থিতিতে রয়েছে সকল ধরনের চালের দাম। খুচরা বাজারে নাজির-মিনিকেট মানের সরু চাল বিক্রি হয়েছে ৫৫ থেকে ৭০ টাকা, পাইজাম ও লতা মানের মাঝারি চাল ৫০ থেকে ৫৫ টাকা আর স¦র্ণা ও ইরি মানের মোটা চাল বিক্রি হয়েছে কেজিতে ৪৮ থেকে ৫০ টাকায়।
তাছাড়া খুচরা বাজারে ভোজ্যতেল খোলা সয়াবিন বিক্রি হয়েছে ১৯০ থেকে ২০০ টাকায়। চিনির দামও বাড়তির দিকে। বাজারে চিনি বিক্রি হয়েছে কেজিতে ১৩৩ থেকে ১৩৫ টাকায়।
এছাড়া সপ্তাহের ব্যবধানে মাছের দামও বেশ চড়া। ব্যবসায়ীরা বলেছে, সমুদ্রে মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা শেষ না হওয়া পর্যন্ত দাম কমার সম্ভাবনা নেই।
রেয়াজউদ্দিন বাজারের মাছ বিক্রেতা ভানু জলদাস বলেন, সমুদ্রে মাছ ধরা নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। জেলেরা মাছ ধরতে যেতে পারছে না। বাজারে যেসব মাছ বেচাকেনা হচ্ছে প্রায় কাপ্তাই লেক ও চাষের মাছ। নির্দেশনা শেষ না হওয়া পর্যন্ত মাচের দাম বাড়তির দিকে থাকবে।
বাজারে লেকের রুই ও কাতলা মাছ বিক্রি হয়েছে ৩২০ টাকা থেকে ৩৮০ টাকা। সরপুটি ও টেঙরা বিক্রি হয়েছে ৩৬০ থেকে ৩৮০ টাকা। চাষের পাবদা, কই ও শিং মাছ বিক্রি হয়েছে ৩৮০ থেকে ৪৫০ টাকায়। তাছাড়া চিংড়ি বিক্রি হয়েছে ৬৮০ থেকে ৯০০ টাকায়। সমুদ্রের রুপচান্দা ৪৫০ থেকে ৭০০ টাকা, পোয়া ২৮০ থেকে ৩৫০ টাকা, লইট্যা ১৮০ থেকে ২০০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।