কবিতা

হেমন্তের শিশির হয়ে

নাহিদ সরদার

ওইটুকু কেবল-যেটুকু ওড়াও একা
অথবা খুব করে ভেঙে গেলে
যেমন করে আগুনে লাগাও ঠোঁট।
আমিও তেমন করে
অন্ধগলির নির্বাক নির্জনতার মাঝে
গানে পালক লাগাই।
সেই গান হেমন্তের শিশির হয়ে
তোমার আঙিনায় ঝরে পড়ে।

তুমি চোখ দিয়ে শিশির দেখো, শোনো না।

 

 

জীবনচক্র

বশির আহমেদ

পড়ন্ত সময়ে সবচেয়ে বেশি আপন হয়ে ওঠে মুর্দাফরাস,
মায়ের পর তার হাতেই পাওয়া যায় পরম যত্ন।
মরার কোনো নির্ধারিত সময় নেই,
চিরদিন কে কাকে বেঁধে রাখে বাহুডোরে?
শতাব্দীর ধুম্রজালে বারবার ভাঙে-গড়ে অসংখ্য নিয়ম।
মুর্দাফরাসও একদিন মরে যাবে,
শতাব্দীর নিয়ম মেনে ফের কেউ না কেউ হবেই নতুন মুর্দাফরাস!

 

তৃষ্ণা

আহাম্মদ উল্লাহ

গচ্ছিত এ দেহ, আমার নয়।
বয়ে চলছি নিরন্তর। নবান্ন থেকে নবান্নে।
প্রেম, অপুষ্ট শস্যর মাঠ। সুঘ্রাণ খোয়াব নেই তাতে।
দিনরাত কর্ষণ, জৈবসারে অবিরাম দলাদলি ফুলে-ফসলে।

কত আর পারি? ঘুম নষ্ট শস্যর নষ্ট বীজের মতোন।
অন্ধকারে শরীর গলে গেলে তৃষ্ণা জানে, অতীত নিংড়াই।
আমি ত জানি, আমার চক্র। আমার কথা।
জানি আমার তৃষ্ণা।
‘সহজ করে নেওয়া, সহজ নয়
মানিয়ে নিতে গেলে সব সয় হয়তো-বা একদিন।
তারপর ঘুম হয় গভীর, মৃত্যুর আক্ষেপ নিয়ে।’

 

 

এ কোন মুখ

মিনহাজ উদ্দিন শপথ

ছায়ার ভিতর থেকে উঁকি দেয় এ কোন মুখ
নীরবতার সুর তোলে
পুরোনো গান ভাসে শীতল
কেঁপে ওঠে বুকের অর্গল
চোখ থেকে ঝরে পড়ে স্বপ্নফুল
পেচিয়ে ধরে নিঃসঙ্গতার নীলসুতো
অসময় বৃষ্টি আচানক পাল্টে দেয়
উঠানের ভূমিকা
বুড়ো বৃক্ষটা নুয়ে পড়ে সমুখে
বিশ্বস্ত বাতাস ছিঁড়ে ফেলে লাবণ্যের পর্দা
এ কোন মুখ!
যে গেছে গতকাল, সে নাকি?
লুট হয়ে গেছে সমস্ত আলোরসম্ভার
সন্ধ্যার বারান্দায় দাঁড়িয়ে দেখি
আকাশে এক আশ্চর্য নক্ষত্র