করোনা বিস্তার রোধে ১৩ দফা নির্দেশনা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। ১৪ এপ্রিল ভোর ৬টা থেকে ২১ এপ্রিল মধ্যরাত পর্যন্ত এই নির্দেশনা তথা লকডাউন বলবৎ থাকবে। নির্দেশনা অনুসারে সকল সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি অফিসসমূহ এবং সব ধরণের গণপরিবহন (বাস, ট্রেন, নৌযান) বন্ধ থাকবে তবে জরুরি সেবা, পণ্য ও উৎপাদন ব্যবস্থায় জড়িত পরিবহন নির্দেশনার বাইরে থাকবে। অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বন্ধ থাকবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিল্প-কলকারখানা চালু থাকবে বলা হয়েছে। সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত কাঁচাবাজার খোলা থাকবে। শপিংমল, বিপণিবিতান এবং সব ধরণের দোকানপাট বন্ধ থাকবে। দুপুর ১২টা থেকে ৭টা এবং রাত ১২টা থেকে ৬টা পর্যন্ত হোটেল রেস্তোরাঁয় পার্সেলে খাবার সরবরাহ করা যাবে। টিকার কার্ড দেখিয়ে টিকা নিতে যাওয়া যাবে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া লোকজনকে ঘরের বাইরে যেতে নিষেধ করা হয়েছে নির্দেশনায়। জরুরি পরিষেবা, বন্দর কার্যক্রম ও গণমাধ্যম নিষেধাজ্ঞার বাইরে থাকবে। জুমা ও তারাবি’র নামাযের ব্যাপারে ধর্ম মন্ত্রণালয় নির্দেশনা জারি করবে। চলমান লকডাউন ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত বলবৎ থাকবে মর্মে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। কলকারখানা, আমদানি রপ্তানি কার্যক্রম চলবে বলা হয়েছে কিন্তু ব্যাংক খোলা থাকবে কিনা নির্দেশনায় বলা হয়নি, এ ব্যাপারে নির্দেশনা প্রয়োজন।
দেশব্যাপী করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যু বাড়তে থাকায় সরকারের এসব নির্দেশনা ও নিষেধাজ্ঞা জীবন বাঁচাতে এবং একই সাথে অর্থনীতি সচল রাখতে জারি করা হয়েছে। জনসাধারণের স্বাস্থ্যবিধি মানতে অনীহা ও অসচেতনতায় করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওযার মতো পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় কোভিড-১৯ জাতীয় পরামর্শক কমিটি ২(দুই) সপ্তাহের লকডাউন বা নিষেধাজ্ঞা জারির সুপারিশ করেছে।
লকডাউনের সময় জনগণকে জরুরি সেবা, চিকিৎসা সেবা ও প্রয়োজনে সাহায্য সহযোগিতা করতে ওয়ার্ড কাউন্সিলরের নেতৃত্বে স্বেচ্ছাসেবী ব্রিগেড গঠন করা জরুরি। অসুখে মানুষ স্বাস্থ্য বাতায়ন ও টেলি মেডিসিন সুবিধা নিতে পারবেন। বিগত লকডাউনের সময় আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যরা জনগণের সাহায্যে এগিয়ে এসেছিলেন, এবারও সেভাবে তারা দায়িত্ব পলন করবেন বলে জনগণ আশা করে। কোনভাবেই ঢিলেঢালা ভাব যাতে পরিস্থিতিকে আরো জটিল করতে না পারে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী এবং জনগণকে তা নিশ্চিত করতে হবে। এবারের করোনার ধরণ আরও প্রাণঘাতি, এটি আমাদের সকলকে মনে রাখতে হবে।
লকডাউনের সময় গরিব ও নি¤œবিত্তরা যাতে অসহায় হয়ে না পড়েন তা প্রশাসনকে দেখতে হবে। তাদের ত্রাণ ও সাহায্য দিতে ওয়ার্ডভিত্তিক টিম গঠন করা প্রয়োজন। মাস্ক পরিধান, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, কাশি শিষ্টাচার পালন, টিকা গ্রহণ-এসব স্বাস্থ্যবিধি পালন অত্যাবশ্যক। এ ব্যাপারে কোনোরূপ শৈথিল্য কাম্য নয়।
মতামত সম্পাদকীয়