কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে তীব্র হচ্ছে ভাঙন

দ্রুত টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবি

দীপন বিশ্বাস, কক্সবাজার »

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে দিন দিন ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করছে। বৈরী আবহাওয়ার কারণে সাগর উত্তাল হওয়ায় সাগরের পানির ঢেউ আছড়ে পড়ছে উপকূলে। আর এতে তীব্র ভাঙনে বিলীন হয়ে যাচ্ছে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের বেশকিছু এলাকা। গেল কয়েকদিনের টানা বৃষ্টি, লঘুচাপ ও ভরা পূর্ণিমার জোয়ার অব্যাহত থাকায় বেড়েই চলেছে ভাঙনের তীব্রতা। এভাবে ভাঙতে থাকলে হুমকির মুখে পড়বে শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম ও সৈকত লাগোয়া ছোট-বড় অনেক স্থাপনা। আর তাই দ্রুত সময়ে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ করার দাবি স্থানীয় সচেতন মহলের।

সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা গেছে, সৈকতের ডায়াবেটিক পয়েন্ট, কবিতা চত্বর, শৈবাল পয়েন্ট, লাবণী পয়েন্টসহ কয়েক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। এ সময় শতাধিক ঝাউগাছ ও জিও ব্যাগগুলো থেকে বালি সরে যেতে দেখা যায়।

স্থানীয়রা জানান, টানা বৃষ্টিপাত, পূর্ণিমার জোয়ার ও লঘুচাপের কারণে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের ঢেউয়ের তীব্রতা বেড়েছে। কূলে আঁচড়ে পড়া ঢেউ সজোরে আঘাত করছে জিও ব্যাগে। এসব জিও ব্যাগ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে সমুদ্রের পানি ঝাউ বাগানে গিয়ে পড়ছে। ফলে মাটি নরম হয়ে একে একে নুইয়ে পড়ে ভেঙে যাচ্ছে ঝাউগাছগুলো। যার কারণে এখন হুমকির মুখে পড়েছে শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম ও বালিয়াড়িতে লাগোয়া ছোট-বড় স্থাপনা। দ্রুত সময়ের মধ্যে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা না গেলে ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

কক্সবাজার দুর্নীতি দমন কমিশন এর পিপি অ্যাডভোকেট মো. আবদুর রহিম বলেন, ‘ছোটবেলা থেকে সাগরপাড়ের ভাঙন দেখে আসছি। বর্ষাকাল এলে প্রতিবছরই ছোট-বড় ভাঙন দেখা দেয়। এবারের ভাঙন কিন্তু অন্যরকম। ঢেউয়ের ধাক্কায় শত শত ঝাউ গাছ ভেঙে যাচ্ছে।’

কবিতা চত্বর এলাকায় সাগরপাড়ের বাসিন্দা মনোয়ারা বেগম বলেন, ‘থাকার মতো জায়গা জমি নেই বলে সাগরপাড়ে ঝাউ বাগানে ঝুপড়ি ঘরে থাকি। সাগরের ভাঙন দেখে ভয় হচ্ছে কখন না জানি আমার ঝুপড়িটাও জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যায়।’

কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোহাম্মদ সরওয়ার আলম জানান, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সাগর উত্তাল রয়েছে। যার কারণে জোয়ারের পানির ধাক্কায় কক্সবাজারের নাজিরারটেক, ডায়াবেটিক পয়েন্ট, কবিতা চত্বর, শৈবাল পয়েন্ট, লাবণী পয়েন্টসহ বেশ কয়েক জায়গায় ভাঙন দেখা দিয়েছে।

তিনি আরও জানান, সম্প্রতি সময়ে প্রায় ২শ বড় এবং ১৪শ ছোট ঝাউ চারা উপড়ে গেছে। ভাঙন রোধে গাইড ওয়াল ও টেকসই বনায়ন করলে ভাঙন রোধ হতে পারে।

কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মিথুন ওয়াদ্দাদার জানান, তীর ভাঙন প্রতিরোধে ৬ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে শিগগিরই অত্যাধুনিক ফ্লাড ওয়াল ও ব্লক নির্মাণ করা হবে। এ কাজ সম্পন্ন হলে রক্ষা পাবে ঝাউ বাগান। আর এতে বাঁচবে পর্যটন শিল্প।