নিজস্ব প্রতিবেদক, কক্সবাজার :
টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ ২৯ জনের বিরুদ্ধে মহেশখালীতে ‘ক্রসফায়ার’ এ নিহত আবদুস সাত্তার হত্যা মামলাটি বিচারের জন্য গ্রহণ করতে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে একটি রিভিশন মামলা দায়ের করা হয়েছে।
নিহত আবদুস সাত্তারের স্ত্রী হামিদা আক্তার বাদি হয়ে ১৪ ডিসেম্বর (সোমবার) রিভিশন মামলাটি দায়ের করেন। রিভিশন মামলার প্রধান আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোশাররফ হোসাইন শিমুল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
রিভিশন আবেদনের সংক্ষিপ্ত বিবরণ হলো- মেজর (অব.) সিনহা হত্যাকাÐের মূল আসামি হিসাবে কারাগারে থাকা প্রদীপ কুমার দাশ মহেশখালী থানার ওসি থাকা অবস্থায় তার নেতৃত্বে ২০১৭ সালের ১৪ ফেব্রæয়ারি সকালে মহেশখালী উপজেলার হোয়ানক ইউনিয়নের পূর্ব মাঝেরপাড়ার আবদুস সাত্তারকে তথাকথিত ‘ক্রসফায়ার’ এ হত্যা করা হয়।
এ ঘটনায় নিহত আবদুস সাত্তারের স্ত্রী হামিদা আক্তার বাদি হয়ে মহেশখালী থানায় একটি হত্যা মামলার এজাহার দায়ের করতে গেলে ওসি প্রদীপ কুমার দাশ সে এজাহার নেননি। পরে ওসি প্রদীপ কুমার দাশ অজ্ঞাতনামা আসামি দেখিয়ে নিজের থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মহেশখালী থানা কর্তৃপক্ষ হামিদা আক্তারের এজাহার না নেওয়ায় এ নিয়ে তিনি হাইকোর্টের শরণাপন্ন হন। পরে হাইকোর্ট হামিদা আক্তারের এজাহার মামলা হিসাবে নেওয়ার জন্য মহেশখালী থানা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেয়। কিন্তু রাষ্ট্রপক্ষ ‘অতি উৎসাহী’ হয়ে হাইকোর্টের উক্ত আদেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে লিভ টু আপিল পিটিশন দায়ের করেন বলে রিভিশন মামলায় উল্লেখ করা হয়। পরে আপিল বিভাগ হাইকোর্টের আদেশটি স্থগিত করে লিভ টু আপিল পিটিশনটিসহ আবারো শুনানি করার জন্য হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চে নথি পাঠিয়ে দেয়।
এ অবস্থায় গত ৩১ আগস্ট চাঞ্চল্যকর মেজর (অব.) সিনহা হত্যাকাÐের পর পট পরিবর্তন হলে ‘ক্রসফায়ার’ এ নিহত আবদুস সাত্তারের স্ত্রী হামিদা আক্তার (৪০) বাদি হয়ে মহেশখালী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একই হত্যাকাÐ নিয়ে ২০২০ সালের ১২ আগস্ট একটি ফৌজদারি দরখাস্ত দায়ের করেন। এটি পর পর ২ দিন শুনানি শেষে গত ১৩ আগস্ট মহেশখালী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মুহাম্মদ আব্বাস উদ্দিন ফৌজদারি দরখাস্তটি খারিজ করে দেন।
অ্যাডভোকেট মোশাররফ হোসাইন শিমুল বলেন, মহেশখালী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের খারিজ আদেশের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ হয়ে ফৌজদারি দরখাস্তের বাদিনী হামিদা আক্তার ফৌজদারি দরখাস্তটি মামলা আকারে নিয়ে তদন্ত করার অনুরোধ জানান এবং কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল এর আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ৪৩৫/৪৩৯-ক ধারা মতে ফৌজদারি রিভিশন আবেদন দায়ের করেন। কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ ফৌজদারি রিভিশন আবেদনটি গ্রহণযোগ্যতা শুনানি করে রিভিশন আবেদনটি গ্রহণ করেন এবং চূড়ান্ত শুনানির জন্য মহেশখালী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের মামলার মূল নথি তলব, রাষ্ট্র ও প্রতিপক্ষকে অবহিত করার আদেশ দেন। রিভিশন আবেদনটি জেলা ও দায়রা জজ আদালতে গ্রহণযোগ্যতা শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোশাররফ হোসাইন শিমুল।