সুপ্রভাত বিনোদন ডেস্ক »
মিডিয়ায় রটনা আছে, শাকিব খান এড়িয়ে চলেন আরিফিন শুভকে। বিষয়টি স্পষ্টতই সামনে আসে এই দুই তারকার ভক্তকূলের ‘দা-কুমড়ো’ সম্পর্কে। একপক্ষ আরেকপক্ষকে নাজেহাল করতে বেশ পারঙ্গম অন্তর্জালে। অনেক সময় ‘অ্যান্টি শাকিব’ ভক্তকূলও জুটে আরিফিন শুভর সমর্থকের দলে।
তাই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাদের রয়েছে বিস্তর দৌরাত্ম্য।
এবার ফেরা যাক নায়কদ্বয়ের কর্মকাণ্ডে।
২০১৯ সালে একটি অনুষ্ঠানে শাকিব খান বলেন, ‘‘আমি শাকিব খান, বাংলাদেশ কেন, আমাকে যদি সুন্দরবনেও ছেড়ে দেওয়া হয় সিনেমার পোকা যেহেতু আছে, আমি যেহেতু এ বিষয়ে ডক্টরেট করা- সুন্দরবনে বসেও আমি ‘আন্তর্জাতিক’ সিনেমা বানাতে পারি।’’
এরপর ‘পাসওয়ার্ড’সহ বহু সিনেমার আগে নিজেকে ‘আন্তর্জাতিক মান’ ও ‘সুপারস্টার’ বলে ঘোষণা দিয়েছেন শাকিব। বারবারই আমজনতার মুখে মুখে ফিরেছে সেই কথাটি।
গত ২ ডিসেম্বর এটিই যেন একটু অন্যভাবে শোনা গেলো আরিফিন শুভর মুখে। ‘মিশন এক্সট্রিম’ ছবির প্রিমিয়ার শোতে এসে এই তারকা বলেন, ‘‘মুখে বড় বড় কথা বলার থেকে, ‘আন্তর্জাতিক আন্তর্জাতিক’ মানের বুলি না আওড়িয়ে একবারে করে দেখালাম আন্তর্জাতিকের মানেটা আসলে কী! সেটা সংজ্ঞাসহ, উদাহরণসহ। আমাদের দর্শক দেখুক, আমাদের পরিসরে আমরা কতটা করতে পেরেছি, আমাদের কী আছে ,আর কী নেই।’’
এখানেই ‘দাড়ি’ টানেননি এই শিল্পী। তিনি মনে করেন, মিথ্যা কথা আর ফাঁকা আওয়াজ দিয়ে দর্শকদের হলে আনার দিন শেষ। এখন যা করার করে দেখিয়েই দর্শকদের হলে টানতে হবে।
স্বাভাবিকভাবেই সোশ্যাল হ্যান্ডেলে শুভর এ বক্তব্য নিয়ে চলছে কাটাছেঁড়া। সোশ্যাল মিডিয়ায় বিষয়টিকে মোটেও সহজভাবে নেয়নি শাকিবিয়ানরা।
ঠিক তার দুদিন বাদেই মাইক্রোফোনটি গেল শাকিব খানের হাতে। ৪ ডিসেম্বর আমেরিকার ঢালিউড অ্যাওয়ার্ডসে শাকিব বললেন প্রায় স্বভাববিরুদ্ধ কিছু কথা। করলেন ‘মিশন এক্সট্রিম’ ছবির প্রচারণা। যা নির্মাণে আছে কপ ক্রিয়েশন, অভিনয়ে আরিফিন শুভ।
শাকিব বলেন, ‘এখানে (যুক্তরাষ্ট্রে) একটা ছবি রিলিজ হয়েছে কিন্তু। মিশন এক্সট্রিম। সবাইকে এ ছবি দেখার আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। আমি সবসময়ই চাই, শুধু আমি কেন, যারাই চেষ্টা করেছেন বাংলাদেশের সিনেমা, বাংলাদেশকে কাজের মাধ্যমে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরতে; আমরা সবসময় সবাইকে সাপোর্ট করি।’
এদিকে, বেশ কিছুদিন ধরেই গুঞ্জন রয়েছে কপ ক্রিয়েশনের অন্যতম উদ্যোক্তা ও মিশন এক্সট্রিম ছবির নির্মাতা সানী সানোয়ারের পরবর্তী ছবিতে দেখা যাবে শাকিব খানকে। বিষয়টি নিয়ে ফেসবুক গ্রুপেও রয়েছে আলোচনা।
এ প্রসঙ্গে কথা হয় সানী সানোয়ারের সঙ্গে। জানতে চাওয়া হয় শাকিব খান কি ক্রপ ক্রিয়েশনের ব্যানারে আসছেন? তা না হলে ‘মিশন এক্সট্রিম’ নিয়ে দূর নিউইয়র্কের মঞ্চে উঠেও প্রচারণা চালাবেন কেন! এমন নজির তো ঢালিউড-খানের পুরো ক্যারিয়ারে নেই!
প্রত্যুত্তরে সানী বলেন, ‘আমি শাকিব খানের বিষয়ে পজিটিভ। আমি তাকে পজিটিভভাবেই ভাবি। আমাদের পরিকল্পনায় আরও তিনটি ছবি রয়েছে। করোনার কারণে সেগুলো নিয়ে এগুনো হয়নি। তবে বিষয়টি নিয়ে শাকিবের সঙ্গে ডিরেক্টলি কথা হয়নি। এমনিতে তার সঙ্গে প্রায়ই কথা হয়।’
ফেসবুকে দেখা যায়, শাকিবকে সানী সানোয়ার ছবিতে পাওয়া যাবে কিনা- ভক্তদের এমন প্রশ্নও করতে। সেখানেও সানী সানোয়ার বারবারই জানিয়েছেন, আশা করছেন, সামনে শাকিবকে তার প্রজেক্টে দেখা যাবে।
আর সম্প্রতি ‘মিশন এক্সট্রিম’র প্রচারণায় শাকিবকে সরাসরি পাওয়ায় সেই আলোচনায় লাগলো নতুন হাওয়া। অন্তর্জালে ছড়ালো রহস্যের জাল। নেটিজেনদের বেশিরভাগই বলছেন, এই সময়ের সবচেয়ে আলোচিত ব্যানার কপ ক্রিয়েশনের পর্দা-শেয়ার করতেই শাকিব খানের এই ‘এক্সট্রিম’ প্রচারণা কৌশল!
অন্যদিকে, প্রেক্ষাগৃহগুলো বেশ সমারোহেই চলছে ‘মিশন এক্সট্রিম’।
বিষয়টি নিয়ে সানী সানোয়ার বলেন, ‘বেশ ভালো সাড়া পাচ্ছি। করোনার সময় না হলে আরও ভালো সাড়া পেতাম। তবে হল মালিকরা বেশ খুশি। অনেকদিন পর তারা প্রচুর দর্শকের দেখা পাচ্ছেন।’
সানী সানোয়ার ও ফয়সাল আহমেদের যৌথ নির্মাণে ‘মিশন এক্সট্রিম’-এ আরিফিন শুভর সঙ্গে অভিষেক ঘটলো মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ জান্নাতুল ফেরদৌস ঐশীর।